পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের লড়াকু সৈনিক, টংক আন্দোলনের মহানায়ক, মুক্তিযুদ্ধকালীন অস্থায়ী সরকারের অন্যতম উপদেষ্টা বিপ্লবী কমরেড মণি সিংহের ৩০তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৯০ সালের এই দিনে বিপ্লবী মণি সিংহ মারা যান।
কমরেড মণি সিংহের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিযেছেন। একই সঙ্গে তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন তারা।
কমরেড মণি সিংহ ১৯০১ সালের ২৮ জুলাই কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা কালী কুমার সিংহের মৃত্যু হলে মা সরলা দেবী ৭ বছরের মণিকে নিয়ে বর্তমানে নেত্রকোনার সুসং দুর্গাপুরে চলে আসেন। এখানে সরলা দেবী তার ভাইদের জমিদারির অংশীদার হয়ে বসবাস শুরু করেন।
স্কুল জীবনেই মণি সিংহ ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত হন। কমরেড মণি সিংহ ১৯২৮ সাল থেকে কমিউনিস্ট পার্টির একজন সার্বক্ষণিক কর্মী হিসেবে নিজেকে যুক্ত করেন। ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রাম করতে গিয়ে মণি সিংহকে অসংখ্যবার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জেল-জুলুম-নির্যাতন ভোগ করতে হয়েছে।
পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর পূর্ণ গণতন্ত্র ও শোষণমুক্ত সমাজের আদর্শকে যারা সামনে নিয়ে এসেছেন মণি সিংহ তাদের মধ্যে অন্যতম একজন।
প্রায় ২০ বছর তিনি আত্মগোপনে থাকতে হয় তাকে। এমনকি আইয়ুব সরকার তাকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য ১০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিল।
১৯৫১ সালে কমিউনিস্ট পার্টির দ্বিতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সম্মেলনে তিনি আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় পূর্ব পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৬৯ সালের ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের সময় অন্যান্য রাজবন্দির সঙ্গে জেল থেকে বেরিয়ে আসেন। এ বছর ২৫ মার্চ পুনরায় সামরিক আইন জারি হলে তিনি জুলাই মাসে ফের গ্রেপ্তার হন। পরবর্তীকালে অসহযোগ আন্দোলনের সময় অনেক নেতাকে মুক্তি দিলেও, ইয়াহিয়া সরকার কমরেড মণি সিংহকে মুক্তি দেয়নি। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে বন্দিরা রাজশাহীর জেল ভেঙে তাকে মুক্ত করে আনেন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সমাজতান্ত্রিক শিবিরের রাজনৈতিক ও ক‚টনৈতিক সমর্থন-সাহায্য-সহযোগিতা আদায়ে কমরেড মণি সিংহের অবদান ছিল অবিসংবাদিত। তিনি ন্যাপ, কমিউনিস্ট পার্টি, ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ গেরিলা বাহিনী গড়ে তুলে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেন। যুদ্ধকালীন মুজিবনগর সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে তাকে নির্বাচিত করা হয়।
১৯৭৩ সালে সিপিবির দ্বিতীয় কংগ্রেস এবং ১৯৮০ সালে তৃতীয় কংগ্রেসের মণি সিংহ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর কমিউনিস্ট পার্টি আবারও বেআইনি ঘোষিত হয়। কিংবদন্তী এই বিপ্লবী ৮৪ বছর বয়স পর্যন্ত সক্রিয়ভাবে পার্টির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪ সালে ২৩ ফেব্রুয়ারি গুরুতর অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন। এ অবস্থায় ১৯৯০ সালের ৩১ ডিসেম্বর তার দীর্ঘ বিপ্লবী জীবনের অবসান ঘটে। জাতীয় জীবনে অসাধারণ অবদান ও অনন্য কীর্তির জন্য মণি সিংহ ‘স্বাধীনতা পুরস্কারে’ ভূষিত হন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।