পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শফিউল আলম ও রফিকুল ইসলাম সেলিম : চট্টগ্রামের ডাই অ্যামোনিয়া ফসফেট (ড্যাপ-১) সার কারখানায় অ্যামোনিয়া প্লান্টের ট্যাঙ্কে বিস্ফোরণের পুরো বিষয়টি নিছক মামুলি দুর্ঘটনা নয়। এ কারখানা স্থাপনের সময় গোড়াতেই ছিল অ্যামোনিয়া ট্যাঙ্কের কাঠামোতে গুরুতর ত্রুটি-বিচ্যুতি। ত্রুটিপূর্ণ ও নাজুক হওয়া সত্ত্বেও এই ট্যাঙ্কে অ্যামোনিয়া ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত অর্থাৎ ওভারলোড করা হয়েছিল। গত দু-তিন দিনের মধ্যে ড্যাপ কারখানার পার্শ্ববর্তী চিটাগাং ইউরিয়া সার কারখানা (সিইউএফএল) থেকে আরও অ্যামোনিয়া ড্যাপ কারখানার ট্যাঙ্কে বোঝাই করা হয়েছিল। তাছাড়া ড্যাপ কারখানা কর্তৃপক্ষ ও সার্বিকভাবে রসায়ন শিল্প সংস্থার (বিসিআইসি) দীর্ঘদিনের চরম অবহেলা ও গাছাড়া ভাবের কারণেই সোমবার রাত সোয়া ১০টায় বিস্ফোরণটি ঘটে। কারখানার বিষাক্ত অ্যামোনিয়া গ্যাস ট্যাঙ্ক বিস্ফোরণের ঘটনা দেশে এবারই প্রথম ঘটল। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে গতকাল (মঙ্গলবার) উপরোক্ত তথ্য বেরিয়ে এসেছে। বিস্ফোরণের পর থেকেই ড্যাপের উভয় ইউনিটের (১ ও ২) সার উৎপাদন কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে। এতে করে দৈনিক কোটি টাকা লোকসান দিতে হবে এ কারখানাকে।
এদিকে বিস্ফোরণ ও অ্যামোনিয়া গ্যাস নিঃসরণ ঘটে গতকাল সকাল পর্যন্ত দীর্ঘ সময়ব্যাপী। ট্যাঙ্কের পুরো অ্যামোনিয়া গ্যাস ধোঁয়ার কু-লীর মতো বেরিয়ে এসে বাতাসের সাথে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে এবং নিঃশেষ হওয়া পর্যন্ত গ্যাস নিঃসরণ ঘটে। কর্ণফুলীর দক্ষিণ পাড়ে ড্যাপ-১ ও ২, সিইউএফএল ও কাফকোÑএ তিনটি সার কারখানা ও আশপাশ এলাকায় একইসাথে কর্ণফুলীর উত্তর পাড়ে চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্দর, হালিশহর, পতেঙ্গাসহ নগরীর এক-তৃতীয়াংশ এলাকাব্যাপী বিষাক্ত অ্যামোনিয়া গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে। এতে শত শত মানুষ অসুস্থ এবং ৫ শিশুসহ ৭০ জন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ও চিকিৎসা গ্রহণ করে। গ্যাসে অসুস্থ শতাধিক ব্যক্তি এখনও শ্বাসকষ্টে ভুগছে। বিষাক্ত গ্যাসের প্রকোপ এতটা ব্যাপক ছিল যে, উপরোক্ত বিস্তীর্ণ এলাকায় গাছপালা ঝলসে গেছে। মারা গেছে পুকুর-জলাশয়ের অজ¯্র মাছ ও গাছের পাখিও। এতে করে পরিবেশ-প্রতিবেশে ক্ষয়ক্ষতি ব্যাপক এবং অবর্ণনীয়। বিস্ফোরণটি এত শক্তিশালী ছিল যে, ট্যাঙ্কে মজুদ অ্যামোনিয়া বাতাসের সংস্পর্শ পাওয়ার সাথে সাথেই ট্যাঙ্কটি বিস্ফোরিত হয়ে ৫০ গজ দূরে প্রসেস প্লান্টের ইউনিটে গিয়ে পড়ে। সৌভাগ্যক্রমে এ সময় প্রাণহানি থেকে বেঁচে যান অর্ধশতাধিক কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারী-কর্মকর্তা।
কারখানা কর্তৃপক্ষ ও বিসিআইসির সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী-কর্মকর্তাদের চরম গাফিলতির কারণে ড্যাপ সার কারখানার অ্যামোনিয়া প্লান্টের ত্রুটিযুক্ত ট্যাঙ্ক গছিয়ে দিয়েছে চায়না অখ্যাত কোম্পানি। ট্যাঙ্কের পুরুত্ব ছিল অনেক কম। ড্যাপ কারখানার ট্যাঙ্কের ডিজাইন ও কাঠামোতে গুরুতর ত্রুটির কথা জানিয়েছেন কারখানা বিশেষজ্ঞরা। বিস্ফোরিত সেই ট্যাঙ্কটির সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতা ৫শ’ মেট্রিক টন ধরা হলেও পুরুত্ব ও ডবল আস্তর না থাকার কারণে বাস্তবে ধারণক্ষমতা অনেক কম। অথচ সেই ট্যাঙ্ক ওভারলোড করেই রাখা হচ্ছিল সব সময়। কিন্তু ওভারলোডের কারণে বিস্ফোরণ কিংবা অন্য কোনো গুরুতর দুর্ঘটনা ঘটতে পারে কিনা এ বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ ছিল উদাসীন। তাছাড়া এ ধরনের পরিস্থিতিতে কর্তৃপক্ষের কোনো আগাম সতর্কতা বা প্রস্তুতি ছিল না। ২০০১ সালে ড্যাপ-১ ও ২ কারখানা স্থাপিত হয়। আর ২০০৬ সালে উৎপাদনে যায়। ডাই অ্যামোনিয়া সার কারখানার ট্যাঙ্কটির স্বাভাবিক মেয়াদকাল বা লাইফটাইম ২৫ বছর ধরা হয়। অথচ মাত্র ১০ বছরের মাথায় এটি বিস্ফোরিত হলো। এর পেছনে অ্যামোনিয়া প্লান্টের গ্যাস ট্যাঙ্কের কারিগরি ত্রুটি-বিচ্যুতি, অবহেলা ও অসতর্কতা দায়ী বলে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়।
অসুস্থ শত শত মানুষ
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদী তীরবর্তী আনোয়ারা উপজেলার সিইউএফএল-সংলগ্ন ডাই অ্যামোনিয়া ফসফেট (ড্যাপ) সার কারখানায় অ্যামোনিয়া ট্যাংকে বিস্ফোরণে ছড়িয়ে পড়া গ্যাস গতকাল সকাল থেকে নিয়ন্ত্রণে থাকলেও জনমনে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা আর আতঙ্ক কাটেনি। রাতভর বিষাক্ত গ্যাস নিঃসরণে কারাখানা-সংলগ্ন আনোয়ারা এলাকাসহ বন্দরনগরীর বিশাল এলাকায় শত শত মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে। এদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধদের অবস্থা বেশি কাহিল হয়ে পড়ে। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৭০ জনের মতো অসুস্থকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অনেকে প্রাইভেট ক্লিনিক, ডাক্তারের চেম্বার, ডিসপেনসারি এমনকি বাসাবাড়িতে চিকিৎসা নেন। এক দুঃসহ-দুর্বিষহ যন্ত্রণার রাত পার করেছে এই এলাকার লাখ লাখ বাসিন্দা। সোমবার রাত ১০টায় সিইইউএফএল ও কাফকো-সংলগ্ন ড্যাপ কারখানার অ্যামোনিয়া ট্যাংকে বিস্ফোরণে একাংশ ফেটে গিয়ে প্রবল বেগে গ্যাস নির্গত হওয়া শুরু করে। আকাশে ঘন কুয়াশার আকার ধারণ করে সে গ্যাস বাতাসের তোড়ে ছড়িয়ে পড়ে কারখানার আশপাশ থেকে শুরু করে বন্দরনগরীর ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা পতেঙ্গা, হালিশহর, বন্দর, আগ্রাবাদ, সদরঘাট, মাঝিরঘাট, চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ, কাট্টলী, সিটি গেট পর্যন্ত। তীব্র ঝাঁঝালো আর উৎকট দুর্গন্ধযুক্ত গ্যাসে আক্রান্ত হয়ে লোকজন প্রচ- শ্বাসকষ্টে ভুগতে থাকে। অনেকে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। ঘরে ঘরে শুরু হয়ে কান্নার রোল। বাতাসে গ্যাস ছড়িয়ে পড়ায় শ্বাসকষ্টে অসুস্থ হয়ে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয় অনেকে। বিমানবন্দরে যাত্রী থেকে শুরু করে চট্টগ্রাম বন্দরে থাকা দেশি-বিদেশি জাহাজের নাবিকরাও আক্রান্ত হয় গ্যাসে। অনেকে গ্যাসের তীব্রতা থেকে নিজেকে রক্ষায় নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ওইসব এলাকার বাসিন্দারা জানায়, রাত ১০টার পর সাদা ঘন কুয়াশার মতো গ্যাসের আস্তরণে পুরো এলাকা ছেয়ে যায়। বাসাবাড়িতে গ্যাস ঢুকে পড়ে। দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়, বন্ধ হয়ে যায় রাস্তায় যানবাহন চলাচল। গ্যাসে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ লোকজনদের হাসপাতালে নিতে রাস্তায় কোনো যানবাহন মিলছিল না। ওষুধের দোকান বন্ধ করে নিরাপদে সরে যায় লোকজন। এতে করে সংকটে পড়ে অসুস্থতরা। গ্যাসে অসুস্থ লোকজন বাসাবাড়িতেই নানারকম চিকিৎসা নেয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিএএফ শাহীন কলেজসহ পতেঙ্গা এলাকার স্কুল-কলেজ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গতকাল ছুটি ঘোষণা করা হয়।
অসহায় উদ্ধারকর্মীরা
অ্যামোনিয়া ট্যাঙ্কারে বিস্ফোরণের পর গ্যাস নিঃসরণ বন্ধ করতে রীতিমতো হিমশিম খায় দমকল বাহিনী ও উদ্ধারকর্মীরা। বিস্ফোরণের সাথে সাথে ড্যাপ, সিইউএফএল ও কাফকোর উদ্ধারকর্মীরা সেখানে ছুটে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু গ্যাসের তীব্রতায় তারা ট্যাঙ্কারের কাছেও ঘেঁষতে পারেনি। ততক্ষণে মহানগর ও জেলার বিভিন্ন ইউনিট থেকে ছুটে আসে দমকল বাহিনীর বেশ কয়েকটি ইউনিট। তারা প্রচ- গ্যাসের বিষক্রিয়া থেকে নিজেদের রক্ষায় পানি ঢালতে ঢালতে ট্যাঙ্কারের দিকে এগিয়ে যায়। এতকিছুর পরও গ্যাস নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণ করতে রাত পার হয়ে যায়। সকালেও ফেটে যাওয়া ট্যাঙ্কার দিয়ে গ্যাস নিঃসরণ হচ্ছিল। দুর্ঘটনার পর থেকে প্রায় ১২ ঘণ্টা একটানা গ্যাস নিঃসরণের ফলে ব্যাপক এলাকায় গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে। জানা যায়, ওই ট্যাঙ্কারে গ্যাস নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার পর গ্যাস নির্গত হওয়া কমে আসে। আর যাতে নতুন করে কোনো বিস্ফোরণ বা লিকেজ না হয় সেজন্য সর্তকতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট টানা কয়েক ঘণ্টা পানি ঢেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। পানির সাথে নালা-নর্দমা খাল হয়ে অ্যামোনিয়া গ্যাস আশপাশের লোকালয়, ধানি জমি ও পুকুর-ডোবাতে গিয়ে পড়ে। এতে মাছসহ জলজ প্রাণী মরে ভেসে ওঠে। ব্যাপক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
দুর্ঘটনাস্থলে তদন্ত টিম
এদিকে সকাল সাড়ে ১০টায় ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন। বিসিআইসি চেয়ারম্যান ও ডিএপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন তিনি। রাতেই এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করেছে জেলা প্রশাসন। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে কমিটির প্রধান করা হয়েছে। কমিটি গ্যাস লিকেজের কারণ অনুসন্ধানের পাশাপাশি ডিএপি প্লান্টের কর্মকর্তাদের গাফিলতি আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখবে। অন্যদিকে বিসিআইসির পরিচালককে (কারিগরি এবং প্রকৌশল) প্রধান করে ১০ সদস্যের আরও একটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করেছে বিসিআইসি। কমিটিকে ছয়টি বিষয়ে তদন্ত ও অনুসন্ধান করতে বলা হয়েছে। গতকাল বিসিআইসির চেয়ারম্যান মো. ইকবাল সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, বিসিআইসির পরিচালককে প্রধান করে প্রকৃত কারিগরি ত্রুটি নির্ণয়ের লক্ষ্যে এ কমিটি করা হয়েছে। বুয়েটের বিশেষজ্ঞ, বিসিআইসির সাবেক প্রকৌশলীদের কমিটিতে রাখা হয়েছে। তিন দিনের মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন রিপোর্ট দেয়ার জন্য কমিটিকে বলা হয়েছে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রাথমিকভাবে অনুমান করতে পারব কী ঘটেছে। তিনি জানান, যে কোম্পানি ট্যাংক ও ডিএপি-১ প্লান্ট তৈরি করেছে তাদের সঙ্গে যোগাযাগ করেছি। এ ধরনের দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সেজন্য সব ধরনের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেব। যদি কর্মকর্তাদের কারও দায়িত্বে অবহেলা বা গাফিলতি থাকে, তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অ্যামোনিয়া ট্যাংক লিকেজকে ‘নিছক একটি দুর্ঘটনা’ উল্লেখ করে বিসিআইসি চেয়ারম্যান বলেন, এ কারখানায় সর্বাধুনিক ডিসিএস সিস্টেমে ডাটা নেয়া হয়। ঝুঁকি আছে কিনা, জনস্বাস্থ্যের জন্যে হুমকি আছে কিনা তা আমরা প্রতিনিয়ত মনিটরিং করি। দুর্ঘটনার পর পৃথিবীতে যে প্রসেস ফলো করা হয়, এখানেও তাই করা হয়েছে। কৃত্রিম বৃষ্টির মাধ্যমে অ্যামোনিয়া বাতাসে ছড়ানোর পথ রুদ্ধ করা হয়েছে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সার কারখানা হচ্ছে অনেক প্রসেসের সমাহার। ইউটিলিটি সার্ভিস আছে, প্রসেস আছে। সার উৎপাদন অনেক জটিল ব্যবস্থা। পরিদর্শনকালে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক বিগ্রেডিয়ার আলী আহমদ খান তার সাথে ছিলেন। তিনি বলেন, বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে। ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট কাজ করছে। বায়ুদূষণ সহনীয় পর্যায়ে চলে এসেছে।
পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি
ড্যাপ কারখানায় ট্যাংকার বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টার মাথায় কারখানাটির আশপাশের পুকুর-ডোবা ও খামারে ব্যাপক হারে মাছ মরতে শুরু করে। মাছের সাথে মরে ভেসে ওঠে হরেক রকম জলজ প্রাণী। দুর্ঘটনাকবলিত এলাকার আশপাশে গাছপালাও মরে যাচ্ছে। মাছ মরে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে স্থানীয় খামারিরা। সকাল থেকেই মাছ মরে ভেসে উঠতে থাকে। স্থানীয় খামারিরা জানান, তাদের সব মাছ মরে গেছে। বেলা সাড়ে এগারোটায় আবু সৈয়দ নামের একজন খামারি তার খামারের মরে ভেসে ওঠা বিভিন্ন প্রজাতির মাছ সংগ্রহ করে ট্রাকে করে ডিএপি কারখানার প্রধান ফটকের সামনে এনে রাখেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের মরা মাছ দেখিয়ে বলেন, গ্যাস ছড়িয়ে পড়ায় খামারের মাছগুলোর অধিকাংশই মরে গেছে, এখন এসব মাছ তুলে ফেলে দিতে হচ্ছে। তিনি জানান, তার খামারের আশপাশের সব খামারের মাছ মরে গেছে, খামারের পাড়ে থাকা গাছগুলোর পাতা জ্বলে গেছে, এসব গাছও মরে যাবে। ডিএপি কারখানার আশপাশের বেশ কয়েকটি খামারে পানি ফেলে দিয়ে মাছ ধরতে দেখা গেছে। এ সময় খামারের তীরে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষদেরকে নাক চেপে অ্যামোনিয়ার ঝাঁঝালো গন্ধ থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা করতে দেখা গেছে। এদিকে পরিবেশ অধিদফতরের বিশেষজ্ঞরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মাছ ও অনান্য প্রাণী এবং উদ্ভিদ মারা যাওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। তারা বলছেন, অ্যামোনিয়া প্রকৃতির জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদফতরের সিনিয়র রসায়নবিদ মোহাম্মদ কামরুল হাসান জানিয়েছেন, অ্যামেনিয়ার কারণে পানির মধ্যে ক্ষারের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে দ্রবীভূত অক্সিজেন ডিও কমে যাবে, এ কারণে মাছ ও অনান্য প্রাণী মরে যেতে পারে, মাছ মরে যাওয়া খামারের পানির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, পরীক্ষার পর বলা যাবে কেন মাছ মরে গেল। খামারিদের মাছ মারা যাওযার প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন জানিয়েছেন, তদন্ত কমিটি ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের পর ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নেয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।