পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জবি সংবাদদাতা : কেন্দ্রীয় কারাগারের জমিতে নতুন হল নির্মাণ ও দখলকৃত হল উদ্ধারের দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সাধারণ শিক্ষার্থীদের ডাকা ধর্মঘটে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। অনুষ্ঠিত হয়নি কোনো ধরনের ক্লাস ও পরীক্ষা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আন্দোলনের ২২তম দিনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সকাল ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনসহ সবগুলো ভবনে তালা ঝুঁলিয়ে ধর্মঘট পালন শুরু করে। এরপর সকাল সাড়ে ৮টার দিকে শিক্ষার্থীরা প্রধান ফটকের সামনে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করে। সকাল ৯টার দিকে শিক্ষার্থীরা রায়সাহেব বাজার মোড় অবরোধ করে ১.০০টা পর্যন্ত অবস্থান করেন। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, আজ হলের দাবিতে আমাদের আন্দোলনের ২২তম দিন চলছে। দুঃখের বিষয় এই যে, আমাদের এই যৌক্তিক দাবির প্রতি এখন পর্যন্ত সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কাছ থেকে কোনো সুস্পষ্ট বক্তব্য শোনা যায়নি। আমরা বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের উপর কোনো প্রকার আস্থা রাখতে পারি না। কারণ, বিগত ১১ বছর ধরে শিক্ষার্থীদের হল নির্মাণের আন্দোলন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আশ্বাসের চোরাবালিতে হারিয়ে গেছে। এমতাবস্থায়, প্রধানমন্ত্রী বা সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কাছ থেকে সুস্পষ্ট ঘোষণা ব্যতীত তারা আন্দোলন থেকে পিছপা হবেন না বলে জানিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, সকাল ১১টার দিকে আন্দোলনকারীদের আন্দোলন থামানোর জন্য চাপ সৃষ্টি করে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা। কিন্তু সাধারণ ছাত্রদের তোপের মুখে তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। কিন্তু ছাত্রলীগের বাধা প্রদানের বিষয়টি অস্বীকার করে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ছাত্রলীগ আন্দোলনকারীদের সাথে আছে এবং থাকবে। ছাত্রলীগের নাম দিয়ে কেউ যদি আন্দোলনে বাধা দেয়, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে, দুপুর ১টার দিকে আন্দোলনকারীরা সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারীদের পক্ষে শিক্ষার্থী রিয়াদ বলেন, বুধবারও ধর্মঘট পালন করা হবে। আর যতদিন আমরা কারাগারের জমি বরাদ্দ না পাবো ততদিন আন্দোলন চালিয়ে যাবো। প্রশাসন এবং অন্য একটি শক্তি আমাদের সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে বানচাল করার চেষ্টা করছে। আমরা তীব্র নিন্দা জানিয়ে ঐসব অপশক্তিদের বলতে চাই, আপনারা কখনো আমাদের সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলনকে থামাতে পারবেন না। মাননীয় ভিসিকে আহ্বান জানাচ্ছি, আপনি শিক্ষার্থীদের দাবির সাথে এক হয়ে সংহতি প্রকাশ করুন। শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনে সমর্থন জানিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল। জবি ছাত্রদলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফিক ও সাধারণ সম্পাদক আসিফুর রহমান বিপ্লব স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তারা এ সমর্থনের কথা ব্যক্ত করেন। শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশি হামলার নিন্দা জানিয়েছেন তারা। এদিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলনে স্থবির হয়ে পড়েছে পুরান ঢাকার ব্যবসায়িক ও যোগাযোগ পরিস্থিতি। গত ২৩ দিন ধরে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সদরঘাট-গুলিস্তান সড়কটি বন্ধ ছিল। যেকোনো পরিস্থিতি এড়াতে ক্যাম্পাসের আশেপাশের দোকান বা মার্কেটসমূহ বন্ধ রাখা হয়েছে। যার ফলে পুরান ঢাকা কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। এছাড়াও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও পুরান ঢাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। কোতয়ালী থানার ওসি আবুল হাসান বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতেই অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয় এমন আন্দোলন থেকে বিরত থাকতে শিক্ষার্থীদের অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। জবি প্রক্টর ড. নূর মোহাম্মদ বলেন, শিক্ষার্থীরা তাদের হল আন্দোলনের দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে রাস্তা অবরোধ করছে। এ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একটা সমাধানের চেষ্টা করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। উল্লেখ্য, নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের জায়গা বিশ্ববিদ্যালয়কে বরাদ্দ দেয়ার দাবিতে গত ১ আগস্ট থেকে আন্দোলন করছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।