পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : সরকারি আদেশ না মানার অভিযোগ উঠেছে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে অভিযুক্ত ঢাকা সিভিল সার্জন অফিসের স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নাছির উদ্দিনের বিরুদ্ধে। বিভাগীয় শাস্তিপ্রাপ্ত হয়েও দীর্ঘদিন থেকে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে পূর্বের পদের বেতনাদিসহ সকল সুবিধা ভোগ করছেন। সূত্রে মতে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আওতাধীন স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর প্রাক্তন সহকারী প্রধান মো. নাছির উদ্দিনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অসদাচরণের ব্যাপক অভিযোগ উত্থাপিত হলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। অভিযুক্ত হওয়ায় কমিটি মো. নাছির উদ্দিনকে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তার ওই সময়ের বেতন স্কেল থেকে দুই ধাপ অবনমনের শাস্তি দেয়। একই সঙ্গে স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরো থেকে তাকে ঢাকা সিভিল সার্জন অফিসে বদলি করা হয়। কিন্তু শাস্তিমূলক এ আদেশ অমান্য করে তিনি পূর্বের বেতন স্কেলে বেতন উত্তোলন করতে থাকেন। বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের নজরে এলে কেন তার বেতন অবনমিত করা হয়নি এবং কেন তাকে পূর্বের স্কেলে বেতন দেয়া হচ্ছে জানতে চেয়ে ঢাকা সিভিল সার্জন এবং প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তাকে মন্ত্রণালয় থেকে পত্র দেয়া হলে তারা বিষয়টি অবহিত নন বলে জানান। জানা যায়, সু-কৌশলে মো. নাছির উদ্দিন সরকারি আদেশ লুকিয়ে এবং গোপনে অনিয়মের মাধ্যমে দীর্ঘদিন পূর্বের স্কেলে বেতন উত্তোলন করে আসছেন। যদিও বর্তমানে মন্ত্রণালয়ের পত্রের প্রেক্ষিতে প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা নাসির উদ্দিনের বেতন বন্ধ রেখেছেন।
স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরো সূত্রে জানা যায়, মো. নাছির স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর অর্গানোগ্রামভুক্ত কোনো কর্মকর্তা নন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এডিবি সাহায্যপুষ্ট ২য় স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা সেবা প্রকল্পের প্রধান কার্যালয়ে ঢাকা অফিসে একজন অফিস সহকারী হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। পরবর্তীতে তদ্বির করে ফেনী সদর হাসপাতালের প্রকল্পে সৃষ্ট পদে স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে পুনঃনিয়োগ পেয়ে যোগদান করেন। প্রকল্প শেষ হলে বেশকিছু কর্মচারীকে রাজস্ব খাতে সম্পৃক্তকরণের উদ্যোগ নেয়া হয়। সে সময়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর অর্গানোগ্রামে ৮টি শূন্য পদ বিলুপ্তি করে কয়েকটি হাসপাতালে ৮টি স্বাস্থ্য শিক্ষা পদ সৃষ্টি করে প্রকল্পের ৮ জনকে পদায়ন করা হয়। এদের মধ্যে মো. নাছিরকে ফেনী সদর হাসপাতালে স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে পদায়ন করা হয়। অর্থাৎ হাসপাতালের অর্গানোগ্রামেই তার পদ সৃষ্টি হয়। এ পদ থেকে বদলী হতে হলে যে সকল হাসপাতালে এ পদ রয়েছে সে সকল হাসপাতালেই তার পদায়ন হবে অন্য কোথাও নয়। পরবর্তীতে বিধি-বহির্ভূতভাবে নানা কৌশলে তদবির করে অবৈধভাবে স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর গবেষণা কর্মকর্তার শূন্য পদে নিজ বেতনে বদলী হয়ে আসেন যা সম্পূর্ণ অবৈধ এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর নিয়োগ বিধিমালা পরিপন্থী। ওই সময়ে অবৈধ কাগজপত্র এবং মিথ্যা তথ্য দিয়ে তিনি গবেষণা কর্মকর্তা পদে মন্ত্রণালয় থেকে স্থায়ীকরণের আদেশ করান। উল্লেখ্য, স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর নিয়োগ বিধিতে এ পদে সরাসরি নিয়োগের বিধান থাকা সত্ত্বেও বিধি-বহির্ভূতভাবে গবেষণা কর্মকর্তা পদে আসেন।
নাছিরের অনিয়মের এখানেই শেষ নয়; স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর নিয়োগ বিধিতে গবেষণা কর্মকর্তা পদটি একটি ব্লক পোস্ট, যা পিএসসির মাধ্যমে সরাসরি পূরণযোগ্য। নিয়োগ বিধি অনুযায়ী এ পদে কোনো পদোন্নতি নেই। কিন্তু মো. নাছির উদ্দিন সরকারি বিধিবিধান না মেনে অর্থ এবং তদবিরের মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য দিয়ে গ্রেডেশন তালিকায় তার নিজ পদ গবেষণা কর্মকর্তার পরিবর্তে জুনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা দেখিয়ে গ্রেডেশন তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে পুনরায় সহকারী প্রধান হিসেবে অবৈধভাবে পদোন্নতি পান। এদিকে এক সময়ে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত হিসেবে ক্ষমতার অপব্যবহার করলেও সরকার পরিবর্তন হবার পরপরই তিনি খোলস পাল্টিয়ে আবার আওয়ামী বনে যান।
এ বিষয়ে মো. নাছির উদ্দিন আগের পদের বেতন নেয়ার বিষয়ে ইনকিলাবকে বলেন, সচিবের অনুমতিতে আগের পদের বেতন নিয়েছি। পরে যখন এ বিষয়ে চিঠি আসে তারপর থেকে বেতন উত্তোলন বন্ধ রেখেছি। নাসির বলেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাকে শাস্তি দেয়া হয়েছে। আমি কোর্টে মামলা করেছি। কিন্তু সরকার কোনো রিপ্লাই দিচ্ছে না।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বাসুদেব গাঙ্গুলী ইনকিলাবকে বলেন, শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য শাস্তি হিসেবে যে পদে পদায়ন করা হয়েছে সে পদেই বেতনসহ অন্যান্য সুবিধাদি ভোগ করতে হবে। আগের পদের বেতন নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। নিলেও তা সরকারি কোষাগারে ফেরত দিতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।