পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার এক বক্তব্যের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে তা প্রত্যাহারের দাবিতে গতকাল সভা করেছে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি। এ সভায় একমত হয়ে সরকার ও বিরোধী উভয় দলের সমর্থক আইনজীবীরাই অংশ নিয়েছেন। আগামী রোববার পর্যন্ত সমিতির সভা মুলতবি করে এই সময়ের মধ্যে প্রধান বিচারপতিকে বক্তব্য প্রত্যাহার করতে আহ্বান জানানো হয়।
সভায় অংশ নেয়া আইনজীবী সমিতির নেতারা অভিযোগ করেছেন, সম্প্রতি একটি মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল বাসেত মজুমদারকে নিয়ে ‘অশোভন’ কথা বলেছেন। তবে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলছেন, গত ১৮ আগস্ট প্রধান বিচারপতির ওই বক্তব্য ছিল লক্ষ্মীপুরের আইনজীবীদের একাংশকে নিয়ে।
গতকাল সোমবার সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির দক্ষিণ হলে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ‘গত ১৮ আগস্ট আপিল বিভাগে আবদুল বাসেত মজুমদার কর্তৃক একটি মামলার শুনানিকালে প্রধান বিচারপতির আইনজীবীদের সম্পর্কে মন্তব্য প্রসঙ্গে’ আলোচ্য বিষয় ছিল।
সভায় সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ইফসুফ হোসেন হুমায়ুন বলেন, আমি বক্তব্য শুনছি, একটা প্রস্তাব এসেছে, যেটা পরিষ্কার হয়েছে, আবদুল বাসেত মজুমদার বলেছেন, তাকে উদ্দেশ্য করে কথাবার্তা বলা হয়েছে। “প্রধান বিচারপতি আইনজীবীদের উদ্দেশে যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটা অশোভন বলে আমি বিশ্বাস করি। এটা শোভা পায় না। আমাদের মর্যাদা আছে। আপনাদের মনে আছে, রেফারেন্স মিটিংয়ে আইনজীবীদের মর্যাদা ও সম্মান রক্ষার প্রত্যয় ব্যক্ত করছি।”
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইফসুফ হোসেন হুমায়ুনের কণ্ঠের সুর ছিল সমিতির সম্পাদক ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব এ এম মাহবুবউদ্দিন খোকনের কণ্ঠেও। তিনি বলেন, “আমাদের সমস্যা, ভালো-খারাপ, সব দেখার দায়িত্ব আপনার (প্রধান বিচারপতি)। এখন আপনি আমাদেরকে ভুলে যদি কর্মচারীদের দেখেন, সেটা আমরা মানব না,” বলেন ব্যারিস্টার খোকন।
সভার এক পর্যায়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমও উপস্থিত হন। তিনি বলেন, “প্রধান বিচারপতির বক্তব্য ছিল লক্ষ্মীপুরের বারের কিছু সদস্য সম্পর্কে। সেখানকারও সবাই না, যারা আদালতের জায়গায় ভবন করছে। আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, সব আইনজীবীদের উপর এটা আপনারা নেবেন না।”
সর্বোচ্চ আদালতে সামনের দিনগুলোতে মীর কাসেম আলীর আপিল শুনানিসহ গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি হওয়ার কথা জানিয়ে এই সময়ে আইনজীবীদের কোনো পদক্ষেপ নেয়ার আগে এসব বিবেচনার আহ্বান জানান। এ সময় আইনজীবীদের মধ্য থেকে এক দল হৈচৈ করে উঠলে সভা এক সপ্তাহ মুলতবি করার সুপারিশ জানিয়ে বক্তব্য শেষ করেন মাহবুবে আলম।
আইনজীবী সমিতির সম্পাদক খোকন বলেন, “যুদ্ধাপরাধী যারা আছে, তাদের বিচার করেন, ফাঁসি দেন, আমাদের আপত্তি নাই.... যারা জ্বালাও-পোড়াও করেছে, তাদের বিচার করেন, আমাদের কোনো আপত্তি নাই। ঠিক আছে, আমাদের আজকের মিটিংয়ের সাথে এটার সম্পর্ক কী, স্পিকার (সভাপতি)। আমরা চাই, অ্যাটর্নি জেনারেল সাহেব, উনি বারের সম্পাদক ছিলেন, সভাপতি ছিলেন, বার কাউন্সিলেরও চেয়ারম্যান, উনি আইনজীবীদের পক্ষে থাকবেন বলে আমরা আশা করি।”
আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীদের অন্যতম নেতা বাসেত মজুমদার এরপর বলেন, “আমি অত্যন্ত আনন্দিত, অ্যাটর্নি জেনারেল সাহেব ছিলেন, যে কমেন্ট নিয়ে কথা, সেটা তিনি স্বীকার করেছেন। ডিফারেন্স হলো, উনি বলতেছেনÑ ‘গুটিকতককে বলেছেন, সবাইকে বলেন নাই’। “যে টার্মগুলো (প্রধান বিচারপতি) বলেছেন, প্রত্যেকটা আপত্তিজনক।”
বিএনপি সমর্থক আইনজীবী তৈমূর বলেন, “ধাইনজীবী নেতৃবৃন্দ যারা আছেন, তারা যদি মনে করেন, জলে বাস করে কুমিরের সাথে লড়বেন না, সেটা ভুল হবে, অন্যায় হবে। সংবিধানকে রক্ষা করার জন্য, আইনজীবীদের রক্ষা করার জন্য, আইন পেশাকে রক্ষার জন্য এটাকে সহজভাবে ছেড়ে দেয়া যাবে না।”
সভায় আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবী মো. মমতাজ উদ্দিন আহমদ মেহেদি, মামুন মাহবুবও বক্তব্য দেন। সবশেষে আগামী রোববার পর্যন্ত সমিতির সভা মুলতবি করে এই সময়ের মধ্যে প্রধান বিচারপতিকে বক্তব্য প্রত্যাহার করতে আহ্বান জানানো হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।