পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলা একাডেমীর অমর একুশে গ্রন্থমেলা স্থগিত করে ভার্চুয়াল মেলার প্রস্তাবে লেখক ও প্রকাশকরা চরম ক্ষুব্ধ। তারা বলেন, করোনামহামারির মধ্যে সারাদেশে শপিংমল, সিনেমা হল, বিনোদন কেন্দ্র সব খোলা। চলছে সভা সমাবেশ। শুধু বন্ধ আছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এ অবস্থায় জাতীয় চেতনার ধারক অমর একুশে গ্রন্থমেলা স্থাগিত করে ভার্চুয়াল মেলার প্রস্তাব গভীর ষড়যন্ত্র বলেও মনে করছেন অনেকে।
প্রকাশকরা বলছেন, আমর একুশে গ্রন্থমেলা কেবল বই কেনা-বেচার জায়গা নয়। ভার্চুয়ালি বই বিক্রির অনেক প্ল্যাটফর্ম আছে। বাংলা একাডেমীর বই মেলা আমাদের মনন বিকাশের প্রাণ কেন্দ্র, আমাদের চেতনার ধারক। বলা হচ্ছে সবকিছু স্বাভাবিকভাবে সাবধানতার সঙ্গে চলবে। সেটি যদি হয় তাহলে বাঙালির এই প্রাণের মেলা কেন বন্ধ করতে হয়। পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটলে বরং কিছুদিন পিছিয়ে দেওয়া যেতে পারে।
বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি এবং বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি এ বিষয়ে আজ বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করবে। এই দুই প্রকাশক সমিতির এক সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে। তারা মনে করে অমর একুশে গ্রন্থমেলার আয়োজন মূলক পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতারা। বাংলা একাডেমী এর সহযোগিতা করে মাত্র। তাই জাতীর চেতনার প্রতীক অমর একুশে গ্রন্থ মেলা বাংলা একাডেমি একক সিদ্ধান্তে বাতিল করতে পারে না। আমরা এ সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। মেলা পরিচালনা কমিটি আছে তার আলোচনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
এদিকে করোনাভাইরাস মহামারির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে অমর একুশে গ্রন্থমেলার আয়োজন ‘আপাতত স্থাগিত রাখার’ আবেদন করবে বাংলা একাডেমি বলে জানান একাডেমির মহাপরিচালক হাবিবুল্লাহ সিরাজী। আজ (রবিবার) সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে করতে যাওয়া আবেদনে অনলাইনে বইমেলা আয়োজন করা যায় কিনা, সেটাও বিবেচনায় রাখতে অনুরোধ করা হবে বলে জানান তিনি।
তবে এ বিষয়ে জনপ্রিয় তরুণ লেখক ও প্রকাশক মঈন মোরসালিন ইনকিলাবকে বলেন, অমর একুশে গ্রন্থমেলা একদিকে যেমন আমাদের জাতীয় চেতনার প্রতীক অন্য দিকে এর বাইরেও এর বিশাল ব্যাপ্তি রয়েছে। বইমেলার দৃশ্যমান যে উৎসব মুখর অবয়ব বা উদযাপন, তার বাইরেও এর বিশাল একটা কর্মতৎপরতা রয়েছে। সেই সক্রিয়তা মূলত এর সঙ্গে যুক্ত অসংখ্য মানুষের জীবিকা ও অস্তিত্বের সঙ্গে যুক্ত। এর সঙ্গে যুক্ত আছে লেখক প্রকাশক থেকে শুরু করে ছাপাখানার কর্মী, মালিক, বাঁধাইখানার শ্রমিক থেকে শুরু করে অসংখ্য মানুষের জীবন ও জীবিকার সঙ্গেও এর সরাসরি সম্পৃক্ততা রয়েছে। সারা বছর কী পরিমাণ বই বিক্রি হয়, তা আমরা জানি। আমরা এও জানি, এই সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকটি মানুষ মূলত অপেক্ষায় থাকেন এই এক মাসের বইমেলার জন্যই। এর ওপরই মূলত এই শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে যুক্ত অসংখ্য মানুষের টিকে থাকা নির্ভর করে। ফলে, বইমেলা না হলে এদের পরিস্থিাতিটা কী হবে, সেটি ভেবে দেখাটা জরুরি। যেখানে এই করোনাকালে শপিং মল থেকে শুরু করে সব ধরনের জন-জমায়েতই আমরা দেখছি। সেখানে করোনার দোহাই দিয়ে কেন কেবল বইমেলাই স্থাগিতের প্রস্তাব উঠছে, বিষয়টি পরিষ্কার নয়।
তরুণ ছড়াকার রেদুয়ানুল হক বলেন, ভার্চুয়ালি আবার বইমেলা হয় কী করে? এটা তো হাস্যকর কথা। মহান একুশে গ্রন্থমেলা কি শুধুই বই কেনা বেচার জন্য? এই বইমেলা লেখক পাঠক প্রকাশক সবার মিলন মেলা। এ মেলা ভাষা আন্দোলনের স্মৃতির স্মারক আমাদের আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের অনুপ্রেরণা উৎস।
তিনি বলেন, করোনামহামারির কারণে শপিং সেন্টারতো বন্ধ নেই। শপিং সেন্টারগুলোতে ভিড়। বন্ধু-বান্ধবদের ফেইসবুক ওয়ালে ভর্তি বিভিন্ন অবকাশ কেন্দ্র আর রিসোর্টে বেড়ানোর ছবি। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে গিজগিজ করছে মানুষ। কই এসব ক্ষেত্রে তো কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই। তাহলে গ্রন্থ মেলা নিয়ে এমন সিদ্ধান্ত কেন। স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা ও দূরত্ব বজায় রেখে গ্রন্থ মেলার আয়োজন সম্ভব। জাতির চেতনার প্রতীক অমর একুশে গ্রন্থমেলা যথাসময়ে আয়োজন করা হবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।