পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা, যশোর : যশোরে পুলিশ সুপারের কাছে আরও এক জঙ্গি আত্মসমর্পণ করেছে। এ নিয়ে আত্মসমর্পণকারী জঙ্গির সংখ্যা দাঁড়ালো চার। গতকাল আত্মসমর্পণকারী জঙ্গি নেতা ফখরুল আলম তুষার (২২) জানান, ‘২০১৩ সালে তার আপন মামাতো ভাই রায়হান আহমদের মাধ্যমে ভুল পথে যাত্রা শুরু করে। সজল ও মহিউদ্দীনের বাড়িতে রায়হান, তানজিব, মেহেদী হাসান পাশা, শাওন ও রাশেদসহ নিয়মিত প্রশিক্ষণ নিত। ঢাকা থেকে সাফিন, মোসাফিরসহ লোক এসে চায়ের দোকানে আড্ডার মাঝেই ক্লাস নিত।
জঙ্গি সংগঠন হিজবুত তাহরীরের সাথে জড়িয়ে পড়ে ভুল বুঝে তিনি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার জন্য পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন।’ যশোর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি মনির-উজ-জামানের উপস্থিতিতে জঙ্গি ফখরুল ইসলাম তুষার বেপথু হওয়ার কাহিনী বিষদ বর্ণনা করেন। তুষার যশোর শহরের আরবপুর এলাকার আবদুর রাজ্জাকের পুত্র ও যশোর পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের ছাত্র। এ প্রসঙ্গে যশোর পুলিশ সুপার মোঃ আনিসুর রহমান দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, যশোরের মাটিতে কোনো জঙ্গি সন্ত্রাসীর ঠাঁই হবে না। মাদকের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করে তাদের মুলোৎপাটন করা হচ্ছে। জঙ্গি ও সন্ত্রাসীর ক্ষেত্রেও তাই হবে। তবে সময় থাকতে যেসব জঙ্গি সন্ত্রাসী নিজ উপলব্ধিতে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে চায়, পুলিশ তাদের আইনী সহায়তা দেবে। পুলিশ সুপার সাম্প্রতিকালের জঙ্গিবিরোধী সভায় হুশিয়ারী উচ্চারণের কথা উল্লেখ করে বলেন, সময় পেরিয়ে গেলে ভুল বুঝতে পারলেও কোনোরূপ ক্ষমা পাবে না তারা। তিনি বলেন, খুলনা রেঞ্জের ডিআইজিসহ আমরা পুলিশ অফিসাররা সবাই সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষের সহযোগিতা নিয়ে সর্বতোভাবে চেষ্টা করছি গোটা অঞ্চল থেকে জঙ্গি নির্মূলে।
এসপির প্রেসব্রিফিংয়ের সময় সাংবাদিকদের কাছে আত্মসমর্পণকারী ফখরুল ইসলাম তুষার বলেন, শহরের ধর্মতলা এলাকার চায়ের দোকানে হিযবুত তাহরীরের সদস্যদের সঙ্গে আড্ডা দিতো ও ক্লাস নিত। তারা বলত ইসলামিক দৃষ্টিতে দেশ পরিচালিত হচ্ছে না। তারা ইসলামিক আইন রাষ্ট্র পরিচালনার কথা বলত। অথচ তারা যেসব কথা ইসলামের নামে বলত ইসলামের সাথে তার কোনো মিল পেতাম না। তুষার আরও বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছেন যারা ভুল পথে গেছে তারা ফিরে আসলে আইনি সহায়তা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়ার সুযোগ প্রদান করা হবে। এরপর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি আত্মসমর্পণ করবো। এরপর আত্মসমর্পণ করেছি। তিনি বলেন, তার মত যারা ভুল পথে আছেন তাদেরকেও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার জন্য আহ্বান জানান।
জঙ্গি আত্মসমর্পণ উপলক্ষে পুলিশ সুপার আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশের খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি মনির-উজ-জামান বলেন, ভুল বুঝতে পেরে তুষার স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চায়। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী যারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চায় আমরা তাদের অপরাধের ধরণ বিশ্লেষণ করে আইনি সহায়তা প্রদান করবো। সংবাদ সম্মেলনে যশোরের পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান ছাড়াও নড়াইলের পুলিশ সুপার সরদার রকিবুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ১১ আগস্ট যশোর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ডিআইজি মনির-উজ-জামানের উপস্থিতিতে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাহরীরের তিন সদস্য পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল। সংগঠনটির মোশরেফ ও সাবাব পদবীর তিনজন ভুল বুঝতে পেরে অনুতপ্ত। তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার জন্য আত্মসমর্পণ করে। এরা হলো যশোর শহরতলীর খোলাডাঙ্গা কদমতলা এলাকার মৃত শফিয়ার রহমানের ছেলে সাদ্দাম ইয়াসির সজল (৩২)। তিনি হিযবুত তাহরীরের মোশরেফ সদস্য। অপর দুইজন সংগঠনের সাবাব সদস্য। তারা হলেনÑযশোর শহরতলীর ধর্মতলা মোড় এলাকার আবদুস সালামের ছেলে রায়হান আহমেদ (২০) ও যশোর শহরতলীর কদমতলা এলাকার একেএম শারাফত মিয়ার ছেলে মেহেদী হাসান পলাশ (২০)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।