পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পে অতিরিক্ত ১১৫৪ কোটি টাকা ব্যয় অনুমোদন করেছে সরকার। এতে প্রকল্প ব্যয় বেড়ে দাঁড়াচ্ছে প্রায় ৪০ হাজার ৪০১ কোটি টাকা। মূল সেতুর মিলে পদ্মা সেতুতে মোট ব্যয় দাঁড়াচ্ছে প্রায় ৭২ হাজার কোটি টাকা। সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মূল সেতু এবং রেল সংযোগ প্রকল্পের ব্যয় আরও বাড়তে পারে।
পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্প গ্রহণ করা হয় ২০১৬ সালের মে মাসে। সে সময় ঢাকা থেকে মাওয়া-ভাঙ্গা হয়ে যশোর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রায় ৩৪ হাজার ৯৮৯ কোটি টাকা। ২০১৮ সালে তা বাড়ানো হয়। তাতে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৩৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা। তবে প্রথম দুই দফা জমি অধিগ্রহণের পরিমাণ সঠিকভাবে প্রাক্কলন করা হয়নি। এতে আবারও বাড়ছে প্রকল্পটির জমি অধিগ্রহণ ব্যয়। পাশাপাশি আরও কিছু খাতে ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে ১ হাজার ১৫৪ কোটি টাকা। এতে প্রকল্পের মোট ব্যয় দাঁড়াচ্ছে প্রায় ৪০ হাজার ৪০১ কোটি টাকা। প্রকল্পটির উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) সংশোধন না করেই বাড়তি এক হাজার ১৫৪ কোটি টাকা ব্যয়ে করতে পারবে রেলওয়ে। স¤প্রতি এ-সংক্রান্ত অনুমতি দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগ।
অন্যদিকে, পদ্মা সেতু প্রকল্পের মূল অবকাঠামো নির্মাণের চুক্তি মূল্য ছিল ১২ হাজার ১৩৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। আর নদী শাসনের চুক্তি মূল্য ৮ হাজার ৭০৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে প্রকল্প ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। সংশ্লিষ্টরা জানান, নকশা পরিবর্তন এবং বাস্তবায়ন বিলম্বের কারণে মূল সেতু ও নদী শাসন এবং মোট প্রকল্প ব্যয় সবই বেড়ে যাবে। এর বাইরে গত আগস্টে পরামর্শক নিয়োগ ব্যয় ৩৪৮ কোটি এক লাখ ৩২ হাজার টাকা বাড়ানো হয়েছে। এতে পরামর্শক বাবদ ব্যয় দাঁড়িয়েছে প্রায় ৯৫৭ কোটি ১৫ লাখ টাকা।
জানা গেছে, পদ্মা সেতু প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণ বৃদ্ধির প্রস্তাবে ২০১৭ সালে আপত্তি তুলেছিল পরিকল্পনা কমিশন। সরকারি খাতের উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন, প্রক্রিয়াকরণ, অনুমোদন ও সংশোধন পদ্ধতি সংক্রান্ত পরিপত্রের অনুচ্ছেদ ১৬ (১৪)-এর আলোকে পরে এ বিষয়ে একনেকের অনুমোদন নিতে হয়। যদিও পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি একনেক ছাড়াই অনুমোদন দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। রেলপথ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এ-সংক্রান্ত চিঠিতে বলা হয়েছে, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্পের অনুমোদিত আরডিপিপির সংস্থানকৃত এক হাজার ৭৮৬ একর জমির অতিরিক্ত ৬৪০ একর ভূমি অধিগ্রহণ ও এজন্য ডিপিপির সংস্থানকৃত ছয় হাজার ২২৪ কোটি ৯২ লাখ টাকার অতিরিক্ত ৯৪০ কোটি টাকা, ইউটিলিটি শিফটিংয়ের জন্য ডিপিপির সংস্থানকৃত ১৫০ কোটি টাকার অতিরিক্ত ১৫৭ কোটি টাকা ও মিউনিসিপ্যালিটির বর্জ্য অপসারণের জন্য ৫৫ কোটি টাকা এবং রিসেটেলমেন্ট পরিকল্পনা মূল্যায়ন-সংক্রান্ত পরামর্শক নিয়োগের জন্য দুই কোটি টাকা ব্যয়ের প্রাক্কলন/প্রস্তাব সরকারি খাতের উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন, প্রক্রিয়াকরণ, অনুমোদন ও সংশোধন পদ্ধতির সংক্রান্ত পরিপত্রের অনুচ্ছেদ: ১৬ (১৯)-এর আলোকে অনুমোদনের অনুরোধ করেছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রকল্পটির অনুমোদিত আরডিপিপির মোট ব্যয় ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এই ব্যয়ের ৫ শতাংশের পরিমাণ দাঁড়ায় এক হাজার ৯৬২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত অনুমোদিত অঙ্গের পরিমাণ ও ব্যয় বৃদ্ধির ফলে এবং দুটি নতুন অঙ্গ অন্তর্ভুক্তির ফলে ব্যয় বৃদ্ধির পরিমাণ এক হাজার ১৫৪ কোটি টাকা, যা পাঁচ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ আছে। এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সম্মতি জ্ঞাপন করা হলো। তবে বাড়তি অর্থ অন্য কোনো খাতে ব্যয় না করা এবং প্রকল্পটি পরবর্তী সময়ে সংশোধনকালে তার প্রতিফলনের শর্ত দেয়া হয়েছে।
এর আগে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো জমি অধিগ্রহণ বৃদ্ধির কারণও তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে অন্যতম কারণ হলো বিআইডবিøউটিএ নির্ধারিত স্ট্যান্ডার্ডের কারণে বিভিন্ন রেল সেতুর উচ্চতা বৃদ্ধি করতে হয়েছে। এতে সেতুর উড়াল অংশের (ভায়াডাক্ট) দৈর্ঘ্য বেড়ে গেছে। ফলে জমি বেশি লাগবে। একইভাবে এলজিইডির বিভিন্ন রোডের আন্ডারপাসের উচ্চতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এতেও আন্ডারপাসের দৈর্ঘ্য বেড়ে যাওয়ায় জমি বেশি দরকার হবে।
এর বাইরে আরএস মৌজা ম্যাপ থেকে বিএস মৌজা ম্যাপে নদী সিকস্তি জমির ধরন পরিবর্তন হয়েছে। এতে ক্ষতিপূরণ বেশি প্রদান করতে হচ্ছে। আর কেরানীগঞ্জ স্টেশন ভায়াডাক্টের নিচের পরিবর্তে পাশে নির্মাণ করতে হচ্ছে বিধায় জমি বেশি লাগবে। এছাড়া শিবচর স্টেশনের অ্যাপ্রোচ সড়কের জন্য জমি অধিগ্রহণ, ভাঙ্গা জংশন স্টেশনে খাল ডাইভারসন বাবদ জমি অধিগ্রহণ ও মৌজা ম্যাপ ডিজিটালাইজেশন না হওয়ায় অতিরিক্ত জমি অধিগ্রহণ করতে হচ্ছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, সময়মতো খালি জমি বুঝিয়ে দিতে বিলম্ব হওয়ায় এরই মধ্যে ৪০১ কোটি তিন লাখ টাকা দন্ডসুদ ও ৪৭৪ দিন অতিরিক্ত দাবি করেছে ঠিকাদার। জমি অধিগ্রহণ আরও বিলম্বিত হলে দন্ডসুদ ও মেয়াদ আরও বৃদ্ধি পাবে। তাই দ্রুত জমি অধিগ্রহণ শেষে ঠিকাদারকে বুঝিয়ে দিতে হবে। এ অবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে বাড়তি অর্থ ব্যয়ের প্রস্তাব অনুমোদনে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রস্তাবটি অনুমোদন করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।