পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোানই বলেছেন, ইসলাম চরিত্রগত ভাবেই শান্তিবাদী একটি ধর্ম। পবিত্র কুরআনে পরিষ্কার ভাবেই জোর করে কারো ওপরে ধর্ম চাপাতে নিষেধ করা হয়েছে। ফলে ইসলাম তার সাড়ে চৌদ্দশত বছরের ইতিহাসে কখনোই কোন জনপদে শক্তি প্রয়োগ করে ইসলামের কোন বিধান চাপিয়ে দেয়নি। অনুরূপভাবে বাংলাদেশের সমাজকে অপরাধমুক্ত রাখতে, কর্মমুখি করতে, সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা করতে, সমাজের মানুষের মাঝে সম্প্রীতি, সহমর্মিতা ও সৌজন্যবোধ চর্চায় উলামায়ে কেরাম শান্তিপূর্ণভাবে যুগ-যুগ ধরে নিরলস চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
পীর সাহেব বলেন, স্বপ্নের পদ্মা সেতু প্রকল্পের ঢাকা কেন্দ্রের প্রবেশ দ্বারে বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করে স্থাপিত হতে যাওয়া ভাস্কর্য নিয়ে একটি বিতর্ক তৈরী হয়েছে। ৫/৭টি মসজিদ মাদরাসার মিলন মোহনায়, দু’টি মসজিদের অবকাঠামো ভেঙ্গে এই পয়েন্টে ভাষ্কর্য স্থাপনের ফলে স্থানীয় ইমাম মুসল্লি ও তৌহিদী জনতা সেখানে ভাস্কর্যের বদলে বিকল্প কোন উত্তম পন্থায় বঙ্গবন্ধুকে স্মরণীয় করে রাখার দাবী জানিয়ে ছিলো। কিন্ত মূর্তি বা ভাস্কর্য নিয়ে বিরাজমান পরিস্থিতিকে আমরা দেশ বিরোধী অপশক্তির চক্রান্ত আকারে দেখছি। আমরা মনে করছি, ওরা বাংলাদেশের মানুষের ঐক্য বিনষ্ট করে ভিনদেশি এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চায়। সামাজিক ও ধর্মীয় অস্থিতিশীলতা তৈরী করতে চায়। এ বিষয়টিতে সরকারের অবস্থান নিয়েও আমরা হতাশ। সাধারণ মানুষের
নিয়মতান্ত্রিক একটি দাবিকে কেন্দ্র করে যখন কুচক্রিমহল দেশে উলামাদের বিরুদ্ধে উগ্রতা ছড়াচ্ছে, তখন তারা তা দমন না করে আরো উৎসাহ দিচ্ছে। ষড়যন্ত্রকারীদের নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হলে জনগণকে নিয়ে বৃহত্তর কর্মসূচি দেয়া হবে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে পুরানা পল্টনস্থ দলীয় কার্যালয়ে দেশে চলমান অস্থিরতা ও উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পীর সাহেব চরমোনাই এসব কথা বলেন।
পীর সাহেব বলেন, আমরা মনে করি, তাদের এই ভূমিকা বরং বঙ্গবন্ধুকে ছোট করছে। তাঁর সম্মানকে মানুষের চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক অবস্থানে ঠেলে দিয়েছে। তিনি বলেন, ভাস্কর্য ও মূর্তি ইস্যুতে চরম উস্কানির মুখেও দেশের শান্তি ও স্থিতিশিলতা বজায় রাখার স্বার্থে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সীমাহীন ধৈর্য্যরে পরিচয় দিয়ে এসেছে। কিন্তু এরই মাঝে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামের একটি ভূঁইফোড় সংগঠন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীমের নামে একটি জঘন্য মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। সঙ্গে আরো দুইজন বিশিষ্ট আলেম আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী ও মাওলানা মামুনুল হকের নামেও মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি। পীর সাহেব বলেন, সরকার যদি তাদের সুবিধাভোগী উগ্র সমর্থক এবং দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী শক্তিগুলোর বাড়াবাড়ি ও উস্কানিমূলক কর্মকান্ড বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সাধারণ দেশপ্রেমিক জনতা ও ধর্মপ্রাণ মানুষ তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বাধ্য হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, দলের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই, প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, আলহাজ খন্দকার গোলাম মাওলা, পীর সাহেবের রাজনৈতিক উপদেষ্টা অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, আলহাজ আমিনুল ইসলাম, মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, কেএম আতিকুর রহমান, আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাকী, মাওলানা নেছার উদ্দিন, বরকত উল্লাহ লতিফ, মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, জিএম রুহুল আমীন, মাওলানা খলিলুর রহমান, অ্যাডভোকেট একেএম এরফানুল হক চৌধুরী, ছাত্রনেতা এম হাছিবুল ইসলাম, নুরুল করীম আকরাম ও অ্যাডভোকেট আবদুল বাসেত।
সংবাদ সম্মেলনে পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, একটি সুবিধাভোগী মহল সাধারণ মুসলিম জনতার উত্থাপিত মতামতকে কেন্দ্র করে দেশে লম্ফ-ঝম্ফ, হুমকি-ধমকি দিয়ে বিশৃঙ্খলা তৈরীর অপচেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, উলামায়ে কেরামের দাবীর মধ্যে স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধুর প্রতি কোন বিদ্বেষ ছিলো না, অসম্মানও ছিলো না। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, ভাস্কর্য সর্ম্পকে ইসলাম কী বলছে তা’ উলামায়ে কেরাম সুস্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন। এটা সংবিধান বিরোধী কোনো কাজ নয়। কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙ্গার বিষয়টি উদ্দেশ্যে প্রণোদিত এবং প্রশ্নবিদ্ধ বলেও সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়। বিএনপি জামাতের ইন্ধনে ভাস্কর্য বিরোধী আন্দোলন করছেন কী না এমন প্রশ্নের জবাবে মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেন, ভাস্কর্য নিয়ে শরীয়তের হুকুম কী তা’ আলেম ওলামারা তুলে ধরেছেন। এর সাথে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের কোনো প্রশ্নই আসে না। তিনি বলেন, হাইকোর্টের সামনে ভাস্কর্য নির্মাণের বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন করেছি। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর কবরে অশান্তি হোক এটা আমরা চাইবো না। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ইন্তেকালের পর তাকে স্মরণ করার জন্য তার ভাস্কর্য নির্মাণের উদ্যোগ নিলেও তা’সমুচিন হবে না। আলেমদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে জুলুম করা হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।