পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যংকের (রাকাব) ২০১১ সালের মার্চে প্রকাশিত সিনিয়রিটি তালিকায় ২০১০ সালের ব্যাংকার্স রিক্রুটমেন্ট কমিটির (বিআরসি) মাধ্যমে নিয়োগকৃত সিনিয়র অফিসাররা অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। ২০১১ সালের আগস্ট মাসে ১৯৯৮ সালের কর্মকর্তা থেকে উর্ধতন কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি দেয়া হয়। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত সিনিয়রিটি তালিকায় ২০১০ সালের সিনিয়র অফিসারদের (বিআরসি) অবস্থান ছিল শুরুর দিকে।
২০১৪ সালের পর দীর্ঘ ছয় বছর সিনিয়রিটি তালিকা প্রকাশ না করে দুটি পদোন্নতি দেয়া হয় ১৯৯৮ সালের কর্মকর্তাদের। যারা সিনিয়রিটি তালিকার পেছনে থেকেও পদোন্নতি পান। কারণ ১৯৯৮ সালের কর্মকর্তা ব্যাচের নেতৃত্বে আছেন নানা কারণে ব্যাংকে আলোচিত নাম মুকুল বর্ধন (এসপিও), রেজা তফিকুল আলম, সাদিকুল ইসলাম ডব্লিউ এবং পেয়ারুল ইসলাম। সর্বশেষ গত ২৪ অক্টোবর সিনিয়রিটি তালিকা প্রকাশের পর আপত্তি জানানোর ৩০ দিন সময় ইতোমধ্যে অতিবাহিত হলেও কর্তৃপক্ষ কর্মী ব্যবস্থাপনা বিভাগের ডিজিএম রনজিৎ কুমার সেনের সঙ্গে গোপন আতাত করে সিনিয়রিটি তালিকা সংশোধনের কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না। বাংলাদেশ ব্যাংক, রাজশাহী অফিস, উইও-৩, ইতোমধ্যে সিনিয়রিটি নিয়ে নীরিক্ষা সম্পন্ন করে অনিয়মের সত্যতা পেয়েছে। এসব অনিয়ম ও অনভিপ্রেত বিষয়ে পেছন থেকে গোপনে মদদ দিচ্ছেন কর্মী ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক রনজিৎ কুমার সেন, যিনি ১৯৮৪ সালে নিম্নমান সহকারী হিসেবে যোগ দান করে বর্তমানে এজিএম পদে কাজ করছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র মতে, রাকাবের পদোন্নতি প্রক্রিয়া অত্যন্ত অদ্ভুত ও রহস্যজনক। এখানে সকলের জন্য নিয়ম সমান নয়। কারণ কিছু কর্মকর্তা পদোন্নতি শর্ত পূরন না করেই ইতোমধ্যে একাধিক পদোন্নতি পেয়েছেন। এদের মধ্যে শওকত শহিদুল (এজিএম), শামিমা ফেরদৌস শিমুল (এজিএম), মজনুর রহমান (এজিএম), নাহিদ আফসান (এজিএম), মাহমুদ হোসাইন (এসপিও), ফারজানা জামান (এসপিও), শফিকুল ইসলাম (পিও), আবুল কালাম (ডিজিএম) এবং আব্দুল মালেক (এসপিও) অন্যতম।
রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যংকের পদোন্নতি নীতিমালা অর্থমন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে ২০১৬ সালে অনুমোদিত হয়। এর ২.৭(ক) ধারার শর্তপূরণ না করেই এসব কর্মকর্তারা পদোন্নতি পান। সামনে এমন আরও কিছু কর্মকর্তাকে পদোন্নতির জন্য বিবেচনায় রাখা হয়েছে বলে রাকাব’র কর্মী ব্যবস্থাপনা বিভাগের একটি সূত্র জানিয়েছে।
রাকাবের পদোন্নতি বাণিজ্যের মুখোরোচক গল্প এখন প্রধান কার্যালয়ের সকলের মুখে মুখে। এ সকল অনিয়মের নেতৃত্বে আছেন সওকত শহিদুল (এজিএম) ও রনজিৎ কুমার সেন (ডিজিএম) নামক চক্র। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের এফআইসিএসডি থেকে ব্যাংকটির কাছে পদোন্নতি বাণিজ্যের বিষয়ে ই-মেইলে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।
সূত্র মতে, রাকাবের বদলি সংক্রান্ত নীতিমালা ২০১৭ সালে সার্কুলার আকারে জারি করা হয়। নীতিমালার ৪ ধারায় বলা আছে- একই কর্মস্থলে কেউ তিন বছরের বেশি সময় কর্মরত থাকতে পারবে না। অথচ রাকাবের প্রধান কার্যালয়ের অধীন শাখা/বিভাগে অন্তত অর্ধশতাধিক কর্মকর্তা আছেন যারা তাদের কর্মজীবনে কখনও নির্দিষ্ট জোন/বিভাগের বাইরে বদলি হননি। প্রধান কার্যালয়, জেলা শহর, বিভাগীয় শহর রাজশাহীর বাইরে কাজ করেননি এমন কর্মকর্তা আছেন অন্তত শতাধিক। অফিসার্স এসোসিয়েশনের নেতা পরিচয়ে শওকত শহিদুল তার আঞ্চলিক প্রভাব খাটিয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জিম্মি করে একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করছেন ব্যাংকের সব বদলি। কেন্দ্র হিসাব বিভাগ-১ এর শামীমা সুমি, সিএডি-২ এর ইভা আহম্মেদ, গবেষনা বিভাগের রুনা আক্তার, মনিটরিং বিভাগের এজিএম শামিমা ফেরদৌস শিমুল, এসপিও মাহমুদ হোসাইন আইন বিভাগে কর্মজীবনের অধিকাংশ সময় অতিবাহিত করলেও রাকাব প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করে আসছে। মূলতঃ রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ঢাকার বাইরে হওয়ায় এবং আঞ্চলিকতার প্রভাবে ব্যাংকটিতে নিয়ম-নীতি পরিপালন সঠিক ভাবে করা হচ্ছে না। আর অর্থমন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নজর এড়িয়ে দুর্নীতির মহিরুহ হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে ব্যাংটি।
এদিকে রাকাব’র আভ্যন্তরীণ অডিট বিভাগ বিভিন্ন যোন হতে প্রাপ্ত আপত্তি যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে কমপ্লায়েন্স বিভাগের উদ্যোগে নিস্পত্তি করার কথা। কিন্তু রাকাব’র অভ্যন্তরীণ অডিটের নিস্পত্তি করা হয় গোপনে। আইটি বিভাগের ঢাকা শাখার মাহমুদ হোসাইন ও ফারজানা জামানের নামে উত্থাপিত আপত্তি কমপ্লায়েন্স বিভাগ গোপন লেনদেনের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করেছে এ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম। এছাড়া আইটি বিভাগের কেনাকাটায় সঠিক ভাবে মনিটরিং হচ্ছেনা বলে জানা যায়। মাত্র ১০ বছর চাকরি করেই আবুল কালাম এ বিভাগে বর্তমানে উপ-মহাব্যবস্থাপক হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন।
মূলতঃ রাকাব’র প্রধান কার্যালয়ের সিন্ডিকেটের অংশ হিসেবে আবুল কালাম (ডিজিএম), শওকত শহিদুল (এজিএম), মুকুল কুমার বর্ধন (এসপিও), রেজা তফিকুল আলম (এসপিও), মোস্তাক হাসান (এসপিও), পেয়ারুল ইসলাম (এসপিও), আতাউর রহমান (এসপিও), নাহিদ আফসান (এজিএম), শামিমা ফেরদৌস শিমুল (এজিএম), মজনুর রহমান (এজিএম), মাহামুদ হোসাইন (এসপিও), ফারজানা জামান (এসপিও), শফিকুল ইসলাম (পিও) এবং আব্দুল মালেক (এসপিও) পদোন্নতি, বদলি ও সকল ধরণের কর্মী ঋণ প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করছে।
রাকাব’র পরিচালন মহাবিভাগের মহাব্যবস্থাপক জি এম রুহুল আমিন ইনকিলাবকে বলেন, সিনিয়রিটির একটি তালিকা দেয়া হয়েছে। আপত্তি জানানোর জন্য ৩০ দিন সময় দেয়া হয়েছিল। এই সময়ের মধ্যে ২৭২ জন লিখিত আপত্তি জানিয়েছেন। বিধিমালার আলোকে আজ রোববার থেকে আবেদন বিচার-বিশ্লেষণ করে শুনানি করা হবে। শুনানির পর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে। জি এম রুহুল আমিন বলেন, সিনিয়রিটি নীতিমালার বাইরে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) এ বি এম রুহুল আজাদ ইনকিলাবকে বলেন, সিনিয়রিটি লঙ্ঘনের সুযোগ নেই। তারপরও তালিকা হওয়ার পর আপত্তি জানানোর জন্য ৩০ দিন সময় দেয়া হয়। আপত্তি জানালে পরে নিষ্পত্তি করেই তালিকা দেয়া হয়। নিষ্পত্তি না করে তালিকা প্রকাশের সুযোগ নেই। একই সঙ্গে যদিও কেউ উদ্দেশ্যপূর্ণভাবে সিনিয়রিটি লঙ্ঘন করে থাকে তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে সঠিক সময়ে কর্মকর্তাদের প্রমোশন না হলে তালিকায় অনেক সময় পেছনে পড়ে যেতে হয়। অনেকে না বুঝেই এর বিরোধীতা করে থাকে বলে উল্লেখ করেন এ বি এম রুহুল আজাদ।###
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।