পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) নির্মাণাধীন মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরে একটি ডেডিকেটেড এলপিজি টার্মিনাল স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। এ জন্য তারা দুটি জাপানী কোম্পানির কাছ থেকে প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। তবে এই প্রস্তাবগুলো মূল্যায়নের জন্য নির্ধারিত কোন মাপকাঠি বা ক্রাইটেরিয়া না থাকায় এ সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না বিপিসি কিংবা জ্বালানি বিভাগ। এছাড়া প্রস্তাবিত এলপিজি টার্মিনালের জন্য কোন সম্ভাব্যতা সমীক্ষাও পরিচালনা করেনি বিপিসি কিংবা জ্বালানি বিভাগ।
জ্বালানি খাতের বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, প্রয়োজনীয় যোগ্যতার মানদন্ড নির্ধারণ এবং কোন সম্ভাব্যতা পরীক্ষা করা ছাড়া এ ধরনের প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন ভবিষ্যতে নানা জটিলতা ও ঝুঁকির সৃষ্টি করতে পারে।
বিপিসি সূত্র জানিয়েছে, দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর মাতারবাড়ীর বহুমুখী ব্যবহারের সম্পূর্ণ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে এখানে গড়ে তোলা হবে তিনটি পৃথক টার্মিনাল। এগুলো হচ্ছে কয়লা আমদানির জন্য কয়লা টার্মিনাল, এলএনজি আমদানির জন্য এলএনজি টার্মিনাল এবং এলপিজি আমদানির জন্য এলপিজি টার্মিনাল।
সূত্র মতে, জাপানী উন্নয়ন সংস্থা জাইকার অর্থায়নে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর এবং এর টার্মিনালগুলো নির্মিত হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছর জাপান সফরে গেলে জাপান সরকার এসব প্রকল্পে অতিরিক্ত ৩ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি দেয়। পাশাপাশি এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে একটি প্রতিশ্রুতি আদায় করে যে এই টার্মিনাল প্রকল্পগুলো জাপানি কোম্পানির বিনিয়োগের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে। বাংলাদেশ সরকার পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) ভিত্তিতেএই প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেয় জ্বালানি বিভাগের অধীন রাষ্ট্রীয় তেল আমদানিকারক সংস্থা বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনকে। এরই প্রেক্ষিতে স¤প্রতি জাপানী কোম্পানি মিতসুই এর নেতৃত্বে একটি কনসোর্টিয়াম বাংলাদেশ সরকারের কাছে একটি বিনিয়োগ প্রস্তাব পেশ করে।
মিতসুই এ্যান্ড কোং লিমিটেডের নেতৃত্বাধীন কনসোর্টিয়াম বিল্ড-ওউন-অপারেট (বিওইউ) ভিত্তিতে এই এলপিজি টার্মিনাল গড়ে তুলবে বলে প্রস্তাবে উল্লেখ করে। এই কনসোর্টিয়ামে যুক্ত করা হয় এস কে গ্যাস নামে একটি কোরিয়ান কোম্পানিকে, যারা অনেক বড় গ্যাস ক্যারিয়ারের মালিক (ভিএলজিসি)। একই সঙ্গে স্থানীয় পার্টনার হিসাবে যুক্ত হয় এই অঞ্চলের বৃহত্তম এলপিজি অপারেটর ইস্ট কোস্ট গ্রুপকে, যাদের বাংলাদেশে এলপিজিসহ ডাউন স্ট্রিম পেট্রোলিয়াম খাতে প্রায় ৩৫ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, মিতসুই গ্রুপের সঙ্গে প্রায় দেড় বছরের দীর্ঘ আলোচনার পর জ্বালানি বিভাগ যখন একটি সম্ভাব্য চুক্তির জন্য চ‚ড়ান্ত পর্যায় উপনীত হয়, ঠিক তখনই আশ্চর্যজনকভাবে দৃশ্যপটে উপস্থিত হয় জাপানের আরেকটি সংস্থা মারুবেণী করপোরেশন। তারা ভিটল নামে নেদারল্যান্ডস ভিত্তিক একটি কোম্পানিকে সঙ্গে নিয়ে পাল্টা একটি প্রস্তাব পেশ করে। মারুবেণী বা তার সহযোগী ভিটল আন্তর্জাতিক বাজারে এলপিজি সরবরাহ করলেও কখনও এ জাতীয় এলপিজির গভীর সমুদ্র টার্মিনাল নির্মাণ বা পরিচালনা করেনি।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের এক উর্ধতন কর্মকর্তা জানান, এখন উভয় জাপানী সংস্থা এই প্রকল্পটি পাবার জন্য এক চরম প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছে এবং এ জন্য তারা সরকারের শীর্ষ নীতিনির্ধারকদের নিজ নিজ পক্ষে টানার চেষ্টা করছে। তবে জ্বালানি খাতের বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়নে বিপিসির প্রথমে সম্ভাব্যতা যাচাই করার কাজ হাতে নেয়া উচিত এবং এর পর একটি সিলেকশন ক্রাইটেরিয়া বা উদ্যোক্তা নির্বাচন নীতিমালা তৈরি করে এলপিজি টার্মিনাল প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজে হাত দেয়া উচিত। তারা বলেন, বিশদভাবে প্রাক-সম্ভাব্যতা এবং সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করা ছাড়া এ জাতীয় বৃহত্তম প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন কোন সুবিবেচনামূলক সিদ্ধান্ত হবে না। কারণ এটি করা হলে তা বাস্তবায়নের বিভিন্ন পর্যায়ে প্রচুর ঝুঁকি ও ও চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে।
সূত্র জানায়, বিপিসি, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সঙ্গে বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে একাধিক বৈঠকের পর, মিতসুই বিপিসির কাছে ৩০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের জন্য একটি প্রস্তাব জমা দেয়, যেখানে বিপিসির জন্য ৩০ শতাংশ ইক্যুইটি দেয়ার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।
এতে আরও উল্লেখ করা হয়, ইস্ট কোস্ট গ্রুপ ভবিষ্যতে আমদানিকৃত এলপিজি কিনে নিবে এবং এলপিজি টার্মিনাল থেকে অপারেটর টার্মিনালে পণ্য পরিবহনের জন্য ছয়টি নতুন জাহাজ কিনতে অতিরিক্ত ১৫০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের গ্যারান্টি বা নিশ্চয়তা দিবে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে জাইকা এ ধরনের একটি শর্ত যুক্ত করেছে।
সূত্র জানায়, অপর জাপানী সংস্থা মারুবেণী কর্পোরেশনও অনুরূপ ৩০ শতাংশ ইক্যুইটি দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। মারুবেণী ভিটল নামক যে সংস্থাকে অংশীদার হিসেবে সঙ্গে নিয়েছে তারা দুই তিন বছর ধরে বাংলাদেশে এলপিজি সরবরাহ করে আসছে। তবে প্রকল্প বাস্তবায়ন বা এ জাতীয় গভীর সমুদ্র টার্মিনাল নির্মাণ কিংবা পরিচালনার কোন অভিজ্ঞতা তাদের নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।