Inqilab Logo

শনিবার, ০১ জুন ২০২৪, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

বেশি সময় নেই সরকার নিজেরাই নিজেদের পতন ঘটাবে -ড. মোশাররফ

প্রকাশের সময় : ২১ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফরিপোর্টার : সংসদীয় কমিটির বৈঠকে সুবিদ আলী ভূঁইয়ার বক্তব্যের প্রতি ইঙ্গিত করে বিএনপি নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, এই তো শুরু। এভাবেই পড়বে। যার ভারে সরকার নিজেরাই নিজেদের পতন ঘটাবে। গতকাল শনিবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য এ মন্তব্য করেন। কারাবন্দি অধ্যাপক এমএ মান্নানের মুক্তির দাবিতে স্থানীয় পর্য়ায়ে তৃণমূল থেকে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।
সেগুন বাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ের মিলনায়তনে গাজীপুরের সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত মেয়র অধ্যাপক এমএ মান্নান মুক্তির দাবিতে ‘মেয়র এমএ মান্নান মুক্তি পরিষদের’ উদ্যোগে এই আলোচনা সভা হয়।
দাউদকান্দি নির্বাচনী এলাকার আওয়ামী লীগের এমপি সাবেক ঊধ্বর্তন সেনা কর্মকর্তা সুবিদ আলী ভুঁইয়ার প্রসঙ্গ টেনে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগের নেতা সংসদ সদস্য পার্লামেন্টারি কমিটিতে আনুষ্ঠানিক সভায় বলতে বাধ্য হয়েছেন যে, জিয়াউর রহমান দেশের প্রথম প্রেসিডেন্ট ছিলেন। অনেকে বলেন, এই এমপির হয়ত মুখ দিয়ে হঠাৎ করে বের হয়ে গেছে। নিশ্চয় তিনি বিশ্বাস করেন, মনে মনে এই কথা। সেজন্য এটা ফাঁস হয়ে হঠাৎ করে বের হয়ে গেছে। আমার বিশ্বাস যে, এটা দিয়ে শুরু হয়েছে। এভাবে পড়বে। এদের মধ্য থেকে এমন সব ঘটনাবলী ঘটবে যার ভারে এই সরকারের নিজেরাই নিজের পতন হবে।
বুধবার একটি সংসদীয় কমিটির বৈঠকে ‘জিয়াউর রহমান প্রথম প্রেসিডেন্ট ছিলেন’ একথা বলার পর তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন সুবিদ আলী ভূঁইয়া। তার আওয়ামী লীগে থাকা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয় বলে বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক সংসদ সদস্য জানিয়েছেন।
এর পরেরদিন গত বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনের মিডিয়া সেন্টারে ‘জরুরি’ এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, “আমি যদি জিয়াউর রহমানকে প্রথম রাষ্ট্রপতি বলে থাকি, তা যদি কেউ প্রমাণ করতে পারেন, আমি রাজনীতি থেকে পদত্যাগ করব, ইনশাআল্লাহ।
বর্তমান সংসদে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি সুবিদ আলী বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) ছিলেন।

চাকরি শেষে বিএনপির মনোনয়ন চেয়ে না পেয়ে ২০০১ সালে কুমিল্লার দাউদকান্দি (কুমিল্লা-১) থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন তিনি। এরপর তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে ২০০৮ সালে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হয়ে বিএনপির প্রভাবশালী নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে হারিয়ে সংসদ সদস্য হন।
সরকারের দমনপীড়নের কঠোর সমালোচনা করে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ আজ বৃহৎ কারাগার। জনগণ সেই কারাগারে বন্দি, বিরোধী কণ্ঠস্বর আজকে সেই কারাগারে বন্দি। গণতন্ত্র আজকে সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।
সারাদেশে যে অন্যায়-অবিচার চলছে, তার থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। দেশের মানুষ বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে, আমাদের দায়িত্ব জনগণকে সংগঠিত করে এই ফ্যাসিবাদী সরকারের হাত থেকে দেশ ও জনগণকে রক্ষা করা।
আন্দোলনে সফলতা না হওয়ায় প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, হতাশ হবেন না। এই ধরনের ফ্যাঁসিবাদ সরকার ক্ষমতায় থাকলে বিরোধীদলকে নির্যাতিত হতে হয়। আমি বলতে চাই, বেশি আর সময় নেই। এই কতৃত্ববাদী সরকার বেশিদিন আর টিকে থাকতে পারবে না।
দেশের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে খন্দকার মোশাররফ অভিযোগ করে বলেন, এখন দেশে অলিখিত বাকশাল চালু করা হয়েছে। বিচার বিভাগ দলীয়করণ করা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও দলীয়করণ হয়েছে। গণতন্ত্র না থাকায় জঙ্গিবাদের উত্থান হচ্ছে।
কারাবন্দি অধ্যাপক এমএ মান্নানের মুক্তির দাবিতে স্থানীয় পর্য়ায়ে তৃণমূল থেকে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।
গাজীপুর জেলা বিএনপিসাধারণ সম্পাদক আলহাজ কাজী সায়েদুল আলম বাবুলের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সদস্য মাহমুদ হাসান রাজুর পরিচালনায় আরো বক্তব্য রাখেন, সাংবাদিক নেতা এম আব্দুল্লাহ, বিএনপির সহশ্রমিক সম্পাদক হুমায়ন কবির খান, সহস্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার খন্দকার মারুফ হোসেন, ওমর ফারুক শাফিন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহধর্ম বিষয়ক সম্পাদক আরিফ হাওলাদার, ছাত্রদলের দফতর সম্পাদক আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বেশি সময় নেই সরকার নিজেরাই নিজেদের পতন ঘটাবে -ড. মোশাররফ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ