পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আজ ১ ডিসেম্বর। শুরু হলো বিজয়ের মাস। ১৯৭১ সালের এই মাসে ত্রিশ লাখ শহীদ আর দু’লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে অর্জিত হয় মহান স্বাধীনতা। বিশ্বের মানচিত্রে সার্বভৌম-স্বাধীন দেশ হিসেবে স্থান করে নেয় বাংলাদেশ। পাকিস্তানকে পর্যুদস্ত করে অর্জিত এ বিজয় ছিল আনন্দ, উল্লাস ও গৌরবের। সাথে ছিল স্বজন হারানোর বেদনাও।
বাংলাদেশের সুদীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাসে শ্রেষ্ঠতম ঘটনা হলো ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ। সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামের এক ঐতিহাসিক ঘটনার মধ্য দিয়ে বাঙ্গালি জাতির কয়েক হাজার বছরের সামাজিক, রাজনৈতিক,ও অর্থনৈতিক স্বপ্ন সাধ পূরণ হয় এ মাসে। অর্জন করে নিজস্ব ভূ-খণ।ঢ। আর সবুজের বুকে লাল সূর্য খচিত নিজস্ব জাতীয় পতাকা।
১৬ ডিসেম্বর ঢাকার ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করে। যেখান থেকে ৭ মার্চ স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম,’ বলে স্বাধীনতার ডাক দেন, সেখানেই পরাজয়ের দলিলে স্বাক্ষর করেন পাকিস্তানি জেনারেল নিয়াজী। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। আর জাতি অর্জন করে হাজার বছরের স্বপ্নের স্বাধীনতা।
বঙ্গবন্ধু একাত্তরের ২৫ মার্চ রাতে পাক বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হবার আগে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন এবং তার ডাকে সাড়া দিয়ে বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধভাবে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে।’৭১ এর ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানী জল্লাদ বাহিনী নিরস্ত্র জনগণের উপর অতর্কিতে সশস্ত্র আক্রমণ চালিয়ে হাজার হাজার মানুষ হত্যা করে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর এক অসম যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়। ২৫ মার্চ রাতেই রাজারবাগ পুলিশ লাইনে সশস্র প্রতিরোধের সম্মুখীন হয় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী।
১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকেই মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা আক্রমণ আর ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত যৌথবাহিনীর জল, স্থল আর আকাশপথে সাঁড়াশি আক্রমণের মুখে বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পরাজয়ের খবর চারদিক থেকে ভেসে আসতে থাকে। এ মাসেই স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার-আলবদর আল শামসদের সহযোগিতায় দেশের মেধা, শ্রেষ্ঠ সন্তান-বুদ্ধিজীবী হত্যার নৃশংস হত্যাযজ্ঞে মেতে ওঠে। সমগ্র জাতিকে মেধাহীন করে দেয়ার এধরনের ঘৃণ্য হত্যাযজ্ঞের দ্বিতীয় কোনো নজীর বিশ্বে নেই।
মহান এ বিজয়ের মাস উদযাপনে জাতীয় কর্মসূচির পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে বিস্তারিত কর্মসূচি নিয়েছে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির উদ্যোগে এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সহায়তায় বঙ্গবন্ধুকে আরও বেশি করে জানার চর্চায় সকলকে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে ১০০-দিনের ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব অনলাইন কুইজ প্রতিযোগিতা’ আয়োজন করেছে। আজ ০১ ডিসেম্বর ২০২০ হতে ১০ মার্চ ২০২১ পর্যন্ত অনলাইনে এই কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির ওয়েবসাইট যঃঃঢ়ং://সঁলরন১০০.মড়া.নফ এবং যঃঃঢ়ং://য়ঁরু.ঢ়ৎরুড়.পড়স ব্যবহার করতে হবে। একজন প্রতিযোগী একটি আইডি দিয়ে প্রতিটি কুইজে একবার অংশগ্রহণ করতে পারবেন। প্রত্যেক প্রতিযোগীকে নাম, ঠিকানা, ছবি, ফোন নাম্বার, ইমেইল/সোশ্যাল মিডিয়া আইডি ব্যবহার করতে হবে যা বিজয়ীদের ক্ষেত্রে তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা জন্মনিবন্ধন সনদের সাথে যাচাই করা হবে। ভুল তথ্য দিয়ে অংশগ্রহণ করলে তাকে পরবর্তীতে অযোগ্য বিবেচনা করা হবে। প্রতিদিন একটি নতুন কুইজ থাকবে এবং কুইজের মেয়াদ ২৪ ঘন্টা। প্রতিদিন সঠিক উত্তরদাতাদের মধ্যে থেকে লটারির মাধ্যমে ১০০ জন বিজয়ীর সকলে পাবেন ১০০ জিবি করে মোবাইল ডাটা এবং তাদের মধ্যে প্রথম ৫ জন পাবেন স্মার্টফোন। এছাড়া পুরো প্রতিযোগিতায় গ্রান্ড প্রাইজ হিসেবে থাকবে মোট ১০০টি ল্যাপটপ। বিজয়ীদের তালিকা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির ওয়েবসাইটে এবং প্রতিযোগিতার অ্যাপে প্রকাশ করা হবে। প্রতিযোগিতার নির্ধারিত অ্যাপ অথবা ওয়েবসাইটে লগইন করে কুইজে অংশগ্রহণ করতে হবে। কোনও রকম স্ক্রিপ্ট বা অন্য কোনো পন্থা অবলম্বন করলে তাকে অযোগ্য বিবেচনা করা হবে। প্রতিযোগিতার পরিচালনা, ফলাফল ও পুরস্কার সংক্রান্ত যে কোনও বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শাজাহান খানের নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম, মুক্তিযোদ্ধা ঐক্য পরিষদ, মুক্তিযোদ্ধা ঐক্যজোট, মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদ, মুক্তিযোদ্ধা সংগ্রাম পরিষদসহ বিভিন্ন মুক্তিযোদ্ধা সংগঠন সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শিখা চিরন্তন চত্ত¡রে সমাবেশ, শ্রদ্ধা নিবেদন ও শপথ গ্রহণের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এদিনই সকাল ১০ টায় সেগুনবাগিচাস্থ স্বাধীনতা ভবনে সংগঠনের কার্যালয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করেছে।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ বরাবরের মতই আজ দেশব্যাপী মুক্তিযোদ্ধা দিবস পালন করবে। এ উপলক্ষে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটি আগামীকাল সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শিখা চিরন্তনে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে। সকাল ৮ টায় মিরপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা কবরস্থানে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন ও কবরস্থানের বাইরের চত্বরে আলোচনা সভার কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।