Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

জামিন হয়নি দীপু চাকলাদারের

চার মামলা তদন্ত করবে দুদক হাজার কোটি টাকার শুল্ক ফাঁকি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

এবারও জামিন হয়নি হাজার কোটি টাকা শুল্ক ফাঁকির মামলার আলোচিত আসামি মিজানুর রহমান ওরফে দীপু চাকলাদারের। কেন তাকে জামিন দেয়া হবে না-এই মর্মে রুল জারি করা হলেও গতকাল বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার এবং বিচারপতি আহমেদ সোহেলের ডিভিশন বেঞ্চ রুল খারিজ করে দেন। চাকলাদারের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ। সরকারের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।

আদেশের বিষয়ে তিনি জানান, মিজানুর রহমান চাকলাদার ওরফে দীপু চাকলাদারের চার মামলায় জামিন প্রশ্নে রুল খারিজ করে দিয়েছেন। সেই সঙ্গে মামলাগুলো তদন্তের জন্য গ্রহণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন দুদককে। তদন্ত সম্পন্ন করতে হবে ৬ মাসের মধ্যে।

সরকারি এই আইন কর্মকর্তা জানান, দীপু চাকলাদারের সিএন্ডএফ এজেন্ট প্রতিষ্ঠান ২০১৭ ও ২০১৮ এই ২ বছরে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের সাবেক ২ কর্মকর্তার ইউজার আইডি ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৩ হাজার ৬৬১ বার অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে ‘লগইন’ করে অবৈধভাবে মালামাল খালাস করে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) শুল্ক গোয়েন্দা এবং সিআইডি’র তদন্তে উঠে আসে এ তথ্য। ঘটনার সঙ্গে শুল্ক গোয়েন্দার একজন প্রভাবশালী কর্মকর্তারও সম্পৃক্ততাও রয়েছে। যদিও সিআইডি’র তদন্তে তাকে আসামি করা হয়নি।

শুল্ক ফাঁকি ও চোরাকারবারে জড়িত থাকার অভিযোগে চট্টগ্রামের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট মিজানুর রহমান চাকলাদারকে (দীপু) আসামি করে গত বছর ১৬ জানুয়ারি ঢাকার রমনা থানায় একটি মামলা করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। পরে তার বিরুদ্ধে আরো বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের করা হয়। তবে কোনো মামলায়ই শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতরের সম্পৃক্ত দায়িত্বশীল ওই কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়নি। তবে এসব মামলার তদন্তে নেমে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে কন্টেইনারের পণ্য খালাস চক্রের হোতা দুই সহোদর মিজানুর রহমান দীপু চাকলাদার ও হাবিবুর রহমান অপু চাকলাদারকে শনাক্ত করে সিআইডি। গ্রেফতার করে দীপু চাকলাদার, তার সহযোগী আমদানিকারক মফিজুল ইসলাম লিটন, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের কর্মচারী সিরাজুল ইসলাম ও সোহরাব হোসেন লিপনকে। শুল্ক ফাঁকি ও চোরাকারবারে মামলায় তদন্তে আসামি করা হয় চট্টগ্রামের সিএন্ডএফ এজেন্ট ‘মুভি ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল’র সত্ত্বাধিকারী মিজানুর রহমান চাকলাদার ওরফে দীপু চাকলাদারকে।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, দুই বছরে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের সাবেক ২ কর্মকর্তার ইউজার আইডি ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৩ হাজার ৭৭৭টি চালান অবৈধভাবে খালাস করা হয়। এতে সরকার হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব তিন মাসের তদন্তে কন্টেইনার পাচার চক্রে জড়িত ৫ আমদানিকারক ৮ সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ও বিভিন্ন স্তরের অন্তত ১২ জন শুল্ক কর্মকর্তা কর্মচারীকে শনাক্ত করে সিআইডি।

গ্রেফতারকৃত ৪ জনের মধ্যে আমদানিকারক লিটন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন। চিহ্নিত সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের লাইসেন্স স্থগিত ও দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয় দুই ভাইসহ সন্দেহভাজন ১১ জনের। এ পর্যায়ে রহস্যজনকভাবে বদলি করা হয় তদন্তে নিয়োজিত সিআইডি’র অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে। গুঞ্জণ রয়েছে গ্রেফতারের কিছু দিনের মধ্যেই দীপু জামিনে বেরিয়ে মামলার তদন্ত ভিন্নখাতে নিতে প্রভাব খাটাতে থাকেন। এ কারণেই বদলি করা হয় সিআইডি’র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে। যদিও পরে দীপু চাকলাদারের জামিন বিচারিক আদালতেই বাতিল হয়ে যায়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দীপু-চাকলাদার
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ