Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আবহাওয়ার খেয়ালী আচরণ বছরব্যাপী

শফিউল আলম | প্রকাশের সময় : ২৯ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

আবহাওয়া-জলবায়ুর খেয়ালী ও এলোমেলো আচরণ চলছে এই বছরব্যাপী। মধ্য-জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত কোথাও চার কোথাও পাঁচ দফায় বন্যা কবলিত হয় দেশের ৩৩টি জেলা। দেশের অভ্যন্তরে এবং উজানে হয় অতিবৃষ্টি। বৃষ্টিবাহী মৌসুমী বায়ু আসে আগেভাগে জুনের প্রথম সপ্তাহে। বিদায় নেয় অতি দেরিতে অক্টোবরের শেষে। বঙ্গোপসাগরের তাপমাত্রা বেশি থাকায় ঘন ঘন সৃষ্টি হয় লঘুচাপ-নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড়। বৃষ্টিপাতের পরিমাণও গেল অক্টোবরে (আশ্বিন-কার্তিক) সারাদেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ৪৫ শতাংশ বেশিই হয়। চলতি নভেম্বরেও বৃষ্টি ঝরেছে বেশি। বছরের গোড়া থেকেই দিন ও রাতের গড় তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ঊর্ধ্বে অবস্থান করেছে।

অগ্রহায়ণ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ পার হয়নি। অথচ উত্তর জনপদ থেকে শুরু হয়ে গেছে আগাম শীতের কাঁপন। গেল ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্ব-উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ৯.৬ ডিগ্রিতে নামলো পারদ। অন্যদিকে গতকাল সন্ধ্যা নাগাদ দক্ষিণ আন্দামান সাগর ও এর সংলগ্ন দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এটি ক্রমেই ঘনীভূত হতে পারে। এটি কেটে গেলে তাপমাত্রা আরও হ্রাস পেয়ে হিমেল বাতাসের দাপট এবং শীতের প্রকোপ বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের একটি বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও এর সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।

আজ রোববার প্রায় সারাদেশে তাপমাত্রা ২ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত হ্রাসের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। আবহাওয়া বিভাগ আরও জানায়, হিমালয় পাদদেশীয় অঞ্চল থেকে উত্তর, উত্তর-পশ্চিমের হিমেল হাওয়া ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে আসছে দেশের উত্তরাঞ্চল দিয়ে। সেই সঙ্গে অনেক জেলায় আকাশ আংশিক মেঘলা, জলীয়বাষ্পের আধিক্য এবং রাত থেকে সকাল অবধি হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা ঝরছে। এরফলে শীতের আগাম কামড় বেড়েই চলেছে।

আবহাওয়ার দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল, চলতি নভেম্বরে (কার্তিক-অগ্রহায়ণ) দিন ও রাতের তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পেতে পারে। তবে গড় তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকতে পারে। ডিসেম্বর (অগ্রহায়ণ-পৌষ) মাসের শেষের দুই সপ্তাহে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ এবং আগামী বছরের জানুয়ারিতে (পৌষ-মাঘ) মাঝারি থেকে তীব্র ধরনের শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়তে পারে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল। অথচ পূর্বাভাসের বিপরীতে এই হেমন্তে অগ্রহায়ণের প্রথম দিকেই শুরু হয়েছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। তাপমাত্রার পারদ ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সে. মধ্যে থাকলে তা মৃদু শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে গণ্য হয়। গতকাল তেঁতুলিয়ায় ৯.৬ ডিগ্রি সে. পারদ নামে। তবে এর আগের দিনেই (শুক্রবার) সেখানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৫.৭ ডিগ্রি সে.।
গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল কক্সবাজারে ৩১.৫ ডিগ্রি সে.। ঢাকার পারদ সর্বোচ্চ ২৯.৮ এবং সর্বনি¤œ ১৯.৪ ডিগ্রি সে.।

আবহাওয়ার খেয়ালী আচরণে সর্দি-কাশি, ভাইরাস জ¦র, হাঁপানি-শ্বাসকষ্ট, সাইনাসের জটিলতাসহ বিভিন্ন রোগব্যাধির প্রকোপও বেড়ে চলেছে।
আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, আকাশ আংশিক মেঘলাসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। দেশের বিভিন্ন এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।
সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা ২ থেকে ৩ ডিগ্রি সে. হ্রাস এবং দিনের তাপমাত্রা এক থেকে ২ ডিগ্রি সে. বৃদ্ধি পেতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় আবহাওয়ার উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। এরপরের ৫ দিনে আবহাওয়ায় কিছুটা পরিবর্তন আসতে পারে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আবহাওয়া

২৯ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ