Inqilab Logo

সোমবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

চট্টগ্রামে এলিভেটেড ওয়ের নির্মাণ শুরু শিগগির

প্রকাশের সময় : ২০ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

রফিকুল ইসলাম সেলিম : চট্টগ্রামে খুব শিগগির শুরু হচ্ছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ। যানজট আর জনদুর্ভোগ কমাতে তিন ধাপে বাস্তবায়ন হবে এই মেগা প্রকল্পটি। দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী মহাবন্দর নগরীর প্রধান সড়কে এই এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হলে যোগাযোগের ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। অন্যদিকে সরকার গৃহিত ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার’ অর্থনৈতিক করিডোরের মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নেও এই প্রকল্প কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
মহানগরীর লালখান বাজার থেকে বারিক বিল্ডিং হয়ে কাটগড় এবং কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু থেকে বারিক বিল্ডিং পর্যন্ত হচ্ছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। এটি নগরীর প্রধান সড়কে নির্মাণাধীন মুরাদপুর ফ্লাইওভারের সাথে যুক্ত হবে। প্রায় ১৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এই এলিভেটেড প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে বারিক বিল্ডিং থেকে কাটগড় পর্যন্ত প্রথম ধাপের নির্মাণ ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে দেড় হাজার কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-সিডিএ’র চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বলেছেন, ইতোমধ্যে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে কাজ শুরুর অনুমোদন মিলেছে। ব্যতিক্রম কিছু না হলে আগামী মাসে প্রকল্পের প্রথম ধাপের কাজ শুরু করা যাবে। প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করবে সিডিএ।
গত ৩০ জানুয়ারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্ববৃহৎ এ প্রকল্প নগরীর লালখান বাজার থেকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। তখন বলা হয়েছিল চট্টগ্রাম বন্দরের টাকায় এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। পরে ওই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে সরকার। বন্দর থেকে নয়, প্রকল্পের ব্যয় সরকার বহন করার সিদ্ধান্ত নেয়।
বন্দর সূত্র জানায়, গত ২৭ জুন প্রানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ‘মুরাদপুর, ২ নং গেইট ও জিইসি জংশনে নির্মাণাধীন উড়াল সড়ককে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত সম্প্রসারণ’ বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের এক সভা হয়। এতে বন্দরের গত পাঁচ বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব এবং আগামী ১০ বছরের সম্ভাব্য আয়-ব্যয়ের একটি ধারণা উপস্থাপন করা হয়। বন্দরের আয়-ব্যয়ের হিসাব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে বন্দর কর্তৃপক্ষের সঞ্চিত অর্থ ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত হয়।
এরমধ্যে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নকশাতেও বড় পরিবর্তন আসছে। প্রথমে এটি লালখান বাজার থেকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত করার কথা ছিল। নতুন নকশায় বিমানবন্দরের সাড়ে তিন কিলোমিটার আগেই থেমে যাবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। এর পরিবর্তে বারিক বিল্ডিং থেকে শাহ আমানত সেতু পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার অংশ যুক্ত হচ্ছে। ফলে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের দৈর্ঘ্য সাড়ে ১৯ কিলোমিটার হচ্ছে।
সিডিএ সূত্রে জানা যায়, এর মধ্যে প্রথম ধাপে নির্মিত হবে কাটগড় থেকে বারিক বিল্ডিং পর্যন্ত সাড়ে আট কিলোমিটার অংশ। এর নির্মাণ ব্যয় এক হাজার ৫১ কোটি টাকা। চার লেইন বিশিষ্ট এ সড়ক প্রশস্ত হবে ১৬ মিটার। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠানামার জন্য নয়টি স্থানে এন্ট্রি ও এক্সিট র‌্যাম্প (উঠানামার সড়ক) নির্মাণ করা হবে। সাড়ে পাঁচ মিটার প্রস্থের এ নয়টি র‌্যাম্পের মোট দৈর্ঘ্য হবে ১২ কিলোমিটার। কাটগড়, সিমেন্ট ক্রসিং, নিমতলা, কাস্টমস, সিইপিজেড, কর্ণফুলী ইপিজেড, বারিক বিল্ডিং, আগ্রাবাদ, টাইগারপাস ও লালখান বাজার মোড়ে ওঠানামার সংযোগ স্থাপন করা হবে। মুরাদপুর থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত নির্মাণাধীন মুরাদপুর ফ্লাইওভারটি (আখতারুজ্জামান চৌধুরী ফ্লাইওভার) এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে সংযুক্ত হবে।
এদিকে নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ হচ্ছে ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ মুরাদপুর ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ। প্রকল্পের পরিচালক সিডিএর প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান ইনকিলাবকে জানান আগামী বছরের জুনের মধ্যে প্রকল্পে কাজ শেষ করার জন্যে সময় নির্ধারিত থাকলেও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে অনেক আগেই কাজ শেষ হয়ে যাচ্ছে। বিগত ২০১৪ সালের ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৪৬২ কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ফ্লাইওভারটির নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। ৫.২ কিলোমিটার দীর্ঘ এই ফ্লাইওভার চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় ফ্লাইভার।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিগত ২০১০ সালের ২ জানুয়ারী নগরীর বহদ্দারহাট জংশনে একই সাথে ৫টি ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন। পরে পাঁচটি ফ্লাইওভারের বদলে বহদ্দারহাটে একটি এবং মুরাদপুর থেকে ওয়াসা হয়ে ইস্পাহানি মোড় পর্যন্ত একটি ফ্লাইওভার নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। মুরাদপুর ফ্লাইওভার প্রকল্প উদ্বোধন করতে এসে প্রধানমন্ত্রী ফ্লাইওভারটিকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত সম্প্রসারণ করার নির্দেশ দেন। তারই ধারাবাহিকতায় ফ্লাইওভারের বদলে লালখান বাজার থেকে বিমানবন্দরের অদূরে কাটগড় পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে। এটি পরে কাটগড় থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা হবে।



 

Show all comments
  • Arman Hasan Soykot ১১ জুলাই, ২০১৭, ৫:৩৪ পিএম says : 0
    যে ফ্লাইওভার বানানো হবে তার জন্য কি দেওয়ান স্কয়ার বিল্ডিংটি ভাঙ্গা হবে ?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চট্টগ্রামে এলিভেটেড ওয়ের নির্মাণ শুরু শিগগির
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ