পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কুয়েত কারাগারে বন্দি জীবন কাটাচ্ছেন লক্ষ্মীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র এমপি শহীদ ইসলাম পাপুল। অর্থ ও মানব পাচারের অভিযোগে কুয়েতে তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হচ্ছে আগামী সপ্তাহে। গত বৃহস্পতিবার কুয়েতের অপরাধ আদালতের বিচারক আবদুল্লাহ আল-ওসমান আগামী সপ্তাহে মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করার আদেশ দেন।
গতকাল শুক্রবার কুয়েতের দৈনিক আল-রাইয়ের এক খবরে এ তথ্য জানানো হয়। পত্রিকাটির খবরে বলা হয়, বৃহস্পতিবার মামলায় তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করে পরবর্তী সপ্তাহে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের দিন রাখেন বিচারক। জনশক্তি রফতানিকারক পাপুলকে গত ৬ জুন কুয়েতের মুশরিফ এলাকা থেকে গ্রেফতার করে সে দেশের পুলিশ। মানব ও অর্থপাচার এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের শোষণের অভিযোগে সেখানে তার বিচার প্রক্রিয়া চলছে। ১৭ সেপ্টেম্বর কুয়েতের অপরাধ আদালতের কাউন্সেলর আব্দুল্লাহ আল-ওসমানের আদালতে পাপুলের বিচার শুরু হয়। পত্রিকাটির খবরে বলা হয় ১৭ সেপ্টেম্বর জামিন আবেদন নাকচ করে পাপুলকে কারাগারে পাঠিয়ে ১ অক্টোবর অভিযোগ শুনানির পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করেছিল আদালত। এর মধ্যে ২৯ সেপ্টেম্বর কুয়েতের আমির শেখ সাবাহ আল-আহমেদ আল-সাবাহ মৃত্যুবরণ করলে আদালতের কার্যক্রম স্থগিত হয়।
মারাফি কুয়েতিয়া কোম্পানির অন্যতম মালিক লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শহীদ ইসলাম পাপুলের সেখানে বসবাসের অনুমতি রয়েছে। পাচারের শিকার পাঁচ বাংলাদেশির অভিযোগের ভিত্তিতে শহীদ ইসলাম পাপুলের বিরুদ্ধে মানবপাচার, অর্থপাচার ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের শোষণের অভিযোগ এনেছে কুয়েতি প্রসিকিউশন।
গ্রেফতারের পর দফায় দফায় ১৭ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কুয়েতের কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছিল এমপি পাপুলকে।
কুয়েতের পাবলিক প্রসিকিউশনের তদন্তে পাপুলসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে অর্থপাচার, মানবপাচার, ঘুষ বিনিময় ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে। পাপুলের সঙ্গে অভিযুক্ত হিসাবে রয়েছেন কুয়েতের দু’জন সংসদ সদস্য সাদুন হাম্মাদ আল-ওতাইবি ও সালাহ আবদুলরেদা খুরশিদ।
বাংলাদেশি এমপির কাছ থেকে ‘ঘুষ নিয়ে’ অবৈধ সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক অ্যাসিসট্যান্ট আন্ডার সেক্রেটারি বরখাস্ত মেজর জেনারেল মাজেন আল-জাররাহও রয়েছেন অভিযুক্তদের মধ্যে।
কুয়েতি একাধিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, অভিযুক্তদের মধ্যে আরো তিন বাংলাদেশি নাগরিকের জামিন বাতিল করে তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছিল আদালত।
আল-কাবাসের খবরে বলা হয়, পাপুলের বিষয়ে অভিযোগ তদন্তের সময় অভিযুক্ত হিসাবে ১৩ জনের নাম উঠে আসে। এর মধ্যে থেকে চারজনকে তদন্তকালে বাদ দেওয়া হয়। পাপুলের সঙ্গে অপকাÐে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠায় সেখানে বাংলাদেশের দূতাবাসে কর্মরত রাষ্ট্রদূত আবুল কালাম আজাদকে প্রত্যাহার করে আনা হয়।
সাধারণ শ্রমিক হিসাবে কুয়েত গিয়ে বিশাল সাম্রাজ্য গড়া পাপুল ২০১৮ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তার স্ত্রী সেলিনা ইসলামও সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য। বাংলাদেশেও গত ১১ নভেম্বর অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ১৪৮ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে শহীদ ইসলাম পাপুল, স্ত্রী সংরক্ষিত আসনের এমপি সেলিনা ইসলাম, শ্যালিকা জেসমিন প্রধান ও মেয়ে ওয়াফা ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিন বাদী হয়ে এই মামলা করেন। মামলায় অভিযোগে বলা হয়েছে, জেসমিন প্রধান দুই কোটি ৩১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৮ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন।
এদিকে গ্রেফতারের পর পরই পাপুলের মারাফি কুয়েতিয়া কোম্পানির অ্যাকাউন্টে পাঁচ মিলিয়ন কুয়েতি দিনার বা বাংলাদেশি টাকায় ১৩৭ কোটি ৮৮ লাখ ৮৩ টাকা জব্দ করা হয়েছে। কুয়েত আদালতে অভিযোগ প্রমাণিত হলে দেশটির আইন অনুযায়ী অর্থপাচারের জন্য ৭ বছরের সাজা হবে। সেই সাথে মানবপাচার প্রমাণিত হলে সাজা হবে ১৫ বছর। আর সেক্সুয়াল মানবপাচার প্রমাণিত হলে সাজা হবে যাবজ্জীবন কারাদÐ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।