Inqilab Logo

সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ মুহাররম ১৪৪৬ হিজরী

আমরা অনেকে আপোষ করে বসে আছি

আলোচনা সভায় মেজর (অব.) হাফিজ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৭ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

ভোটে নয়, রাজপথেই গণঅভ্যুত্থানে সরকারের পতন ঘটাতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, জনগণের যেহেতু ভোটের মাধ্যমে আর পরিবর্তনের সুযোগ নেই। যত দিন এই সরকার আছে ততদিন ভোট কেন্দ্রে সাধারণ নাগরিক যেতে পারবে না। সুতরাং একমাত্র উপায় গণঅভ্যুত্থান। জনগণ যদি রাস্তায় নেমে আসে। দুই লাখ লোক দুইদিন রাস্তায় থাকেন পালিয়ে যাবে তারা (আওয়ামী লীগ সরকার)। সেই সাহস সঞ্চয় করে আসুন আমরা আগামী দিনে এই সরকারকে বিতাড়িত করতে রাজপথে আবার নেমে আসি। গতকাল সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে জিয়াউর রহমান সমাজকল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে ‘ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবসের তাৎপর্য এবং গৃহবন্দি থেকে নিঃশর্ত মুক্তির করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
চলমান নির্বাচনী ব্যবস্থায় নির্বাচনে দলের অংশগ্রহণ নিয়ে প্রশ্ন তুলে হাফিজ উদ্দিন বলেন, কেনো আমরা এই ধরনের নির্বাচনে যাই? যখন নির্বাচনে যাওয়া উচিত না তখন যাই, যখন যাওয়া উচিত তখন যাই না। যে দিন সংসদে যাওয়া উচিত না সেই সংসদে গিয়ে আমরা বসে থাকি। যার জন্য আজকে বিএনপিকে চার‘শ ভোট দেয়। সিরাজগঞ্জ-১ আসনে ওদের প্রার্থী পেয়েছে এক লাখ ৮৮ হাজার ভোট আর আমাদের প্রার্থী পেয়েছে ৪‘শ ভোট। আরে বিএনপির এজেন্টই তো হাজারেরও বেশি। আমাদের কোনো এজেন্ট ভোট কেন্দ্রে যেতে পারেন না, কোনো ভোটার ভোট কেন্দ্রে যেতে পারে না এমনকি আওয়ামী লীগের সমর্থকরা ভোট কেন্দ্রে যেতে পারে না-এই হলো বাংলাদেশের গণতন্ত্র।
তিনি বলেন, যদি আমরা জিয়াউর রহমানের আদর্শের অনুসারী হয়ে থাকি তাহলে আমাদের দলেও তার প্রতিফলন থাকতে হবে। জিয়াউর রহমানের মত হতে হবে, তার মতো সাহসী হতে হবে এবং দেশের স্বার্থে কখনো কোনো ধরনের আপোষ করা যায় না। বেগম খালেদা জিয়া আপোষ করেননি। কিন্তু আমরা অনেকে আপোষ করে বসে আছি। আজকে দুঃখের বিষয় খালেদা জিয়ার মতো নেত্রী তিনি বছরের পর বছর জেলে কাটালেন আমরা কী করতে পেরেছি?
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, সবচাইতে বড় অশনিসংকেত আমি দেখতে পারছি- বিএনপি তো এখন ডাক দিলে রাস্তায় নামাতে পারে না। আমাদের এতো শক্তিশালী ছাত্রদল ছিলো তাদেরকে রাস্তায় নামাতে পারে না। কেনো তাদের নামাতে পারেনা আমি জানি না। কারণ আমি এই দলের এতো বিরাট নেতাও না। কিন্তু অন্যদিকে যে..। তোমারে বধিবে সে, গকুলে বাড়িছে সে।
তিনি বলেন, আওয়ামী জাহিলাতের অবসান হবেই। এই ধরনের একটা নষ্ট পঁচা সরকারকে বাংলাদেশের মানুষ বেশিদিন সহ্য করবেনা। কিন্তু তার পরিবর্তন কীভাবে আসবে? কারা এদেরকে সরাবে-এটাই দেখার বিষয়। আমরা যেটা দেখতে পারবো, এটা বেশি দূরে নয়।
হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, দুঃখ লাগে এই সামরিক বাহিনী আমরা সৃষ্টি করেছি। কত সম্মানের পাত্র ছিল তারা। নির্বাচনের সময়ে সেনাবাহিনী যেখানে যেতো দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যেতো। আর এখন। গত নির্বাচনের আগের রাত্রে সব ভোট দিয়ে ফেললো আর সেনা প্রধান বললেন, এতো ভালো ভোট আমি জীবনে দেখিনি।সুতরাং আমাদের যে শেষ ভরসার স্থল সেটিও চিন্তাভাবনার বিষয় তাদের অবস্থান কী? অত্যন্ত দুঃখ লাগে সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়ে যাক, এই সেনাবাহিনীর জন্য কষ্ট লাগে- আমরা এই সেনাবাহিনী সৃষ্টি করেছি একাত্তর সালে। ২৫ জন সেনা কর্মকর্তারা পাকিস্তান আর্মিতে আমরা যারা ছিলাম আমরা বিদ্রোহ করে মুক্তিবাহিনী এবং বাংলাদেশ সেনা বাহিনী গড়ে তুলেছি। গত ৫/৭ বছরে এরা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এখনো সাধারণ সৈনিকেরা ভালো আছে, জুনিয়র অফিসার-মিড লেভেল অফিসাররা ভালো আছে। শীর্ষ পর্যায় কয়েকজন নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আমরা সেনাবাহিনীকে রাজনীতি মুক্ত চাই। সেনাবাহিনী যেন বাংলাদেশের কোনো দলের সেনাবাহিনী নয়, জনগণের সেনাবাহিনী হয়-এটাই আমরা আশা করি।
মেধাবী লোক সরকারের শত্রæ মন্তব্য করে হাফিজ উদ্দিন বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে (নোবেল বিজয়ী) সারা বিশ্ব কত সম্মান করে। পৃথিবীর যেখানে যাবেন প্রেসিডেন্ট বাড়ির বাইরে এসে গাড়ির দরজা খুলে দিয়ে তাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে নিয়ে যাবেন। আমাদের দেশে তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি হয়, তাকে পালিয়ে বেড়াতে হয়, তাকে সুদখোর বলা হয়। এভাবে তো তারা দেশ থেকে মেধাবী ব্যক্তিদেরকে বিতাড়িত করে দিয়ে মূর্খের রাজত্ব তারা কায়েক করেছে, আরো করবে ভবিষ্যতে।
৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতা বিপ্লবে কর্ণেল তাহের সেনাবাহিনীকে ধ্বংস করে দেয়ার ষড়যন্ত্র করেছিলো উল্লেখ করে জিয়াউর রহমান সাহসী ভূমিকার কথা তুলে ধরেন এই সেনা কর্মকর্তা।
সংগঠনের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন খোকনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির আনম এহছানুল হক মিলন, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) আহসান হাবিব লিংকন প্রমূখ বক্তব্য রাখেন। #



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ