Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শনের নতুন আদেশ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মান প্রদর্শনের নতুন আদেশ জারি করেছে সরকার। গতকাল মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মান প্রদর্শন আদেশ, ২০২০’ জারি করা হয়েছে। ২০০৫ সালের এ-সংক্রান্ত আদেশটি বাতিল করা হয়েছে।

নতুন আদেশে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মান প্রদর্শনের জন্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রমাণকের যেকোনো একটিতে নাম থাকতে হবে। প্রমাণকগুলোর মধ্যে রয়েছে- মুক্তিযোদ্ধাদের ভারতীয় তালিকা, মুক্তিযোদ্ধাদের ভারতীয় তালিকা (পদ্মা), মুক্তিযোদ্ধাদের ভারতীয় তালিকা (মেঘনা), মুক্তিযোদ্ধাদের ভারতীয় তালিকা (সেক্টর) এবং মুক্তিযোদ্ধাদের ভারতীয় তালিকা (সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী)। লাল মুক্তিবার্তার মধ্যে রয়েছে- লাল মুক্তিবার্তা (চূড়ান্ত লাল বই), লাল মুক্তিবার্তা স্মরণীয় যারা বরণীয় যারা।
গেজেটের মধ্যে রয়েছে- যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা, বেসামরিক গেজেট, প্রবাসে বিশ্বজনমত গেজেট, ধারণাগত জ্যেষ্ঠতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের তালিকা, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) গেজেট, শব্দসৈনিক- স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী ও কলাকুশলীদের তালিকা, মুক্তিযোদ্ধাদের (বীরাঙ্গনা) তালিকা, স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের খেলোয়াড়দের তালিকা, ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি ছাত্র ইউনিয়ন, বিশেষ গেরিলা বাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা, বিশ্রামগঞ্জ হাসপাতালে নিয়োজিত বা দায়িত্ব পালনকারী মুক্তিযোদ্ধা গেজেট, সরকারের মুজিবনগর সরকারের প্রেসিডেন্ট ও মন্ত্রীদের তালিকা এবং মুজিবনগর কর্মচারী তালিকা এবং জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সুপারিশক্রমে মন্ত্রণালয়ের জারি করা অন্যকোন নামীয় তালিকা সংক্রান্ত গেজেট।
বাহিনী গেজেটের মধ্যে রয়েছে- যুদ্ধাহত সেনা মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকা, যুদ্ধাহত পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকা (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ), যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকা (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) গেজেট, সেনা মুক্তিযোদ্ধাদের নামীয় তালিকা, বিমান বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধা তালিকা, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা, নৌকমান্ডোদের তালিকা, বাংলাদেশ রাইফেলসের (বর্তমান বিজিবি) মুক্তিযোদ্ধাদের নামীয় তালিকা, পুলিশ বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা।
আদেশে বলা হয়েছে, কোনো বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু হলে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক বা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানাতে হবে। ঢাকায় অবস্থানরত খেতাবপ্রাপ্ত বা যুদ্ধাহত কোনো বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু হলে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক বা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করবেন। বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুর বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, আত্মীয়-স্বজন বা কোনো নাগরিক প্রশাসনকে অবহিত করতে পারবেন। এমনকি সংবাদমাধ্যম বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মৃত্যুর খবর প্রকাশিত হলেও যাচাই করে প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে।
মহানগর ও জেলা সদরে জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা পর্যায়ে হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মান প্রদর্শনের জন্য সরকারের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করবেন। রাষ্ট্রীয় বা জনগুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যস্ত থাকলে জেলা প্রশাসকের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের পক্ষে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সরকারের প্রতিনিধিত্ব করবেন।
রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মান প্রদর্শনের নিয়মের বিষয়ে আদেশে বলা হয়েছে, মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধার কফিন জাতীয় পতাকা দ্বারা আবৃত করতে হবে। তবে সৎকার বা সমাধিস্থ করার আগে জাতীয় পতাকা খুলে ফেলতে হবে। সরকারের অনুমোদিত প্রতিনিধি কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। অনুমোদিত সংখ্যক পুলিশ বাহিনীর সশস্ত্র সদস্যদের দিয়ে সশস্ত্র সালাম প্রদান করতে হবে এবং বিউগলে করুণ সুর বাজাতে হবে। সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গার্ড অব অনার পরিচালনা করবেন। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাষ্ট্রীয় বা জনগুরুত্বপূর্ণ কাজের কারণে থাকতে না পারলে থানার পরবর্তী জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করবেন। সশস্ত্রবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষেত্রে বাহিনীর নিজস্ব রীতি অনুসরণ করতে হবে।
আদেশ আরও বলা হয়েছে, বীর মুক্তিযোদ্ধার অন্তিম ইচ্ছা অনুযায়ী এবং ধর্মীয় নীতি অনুযায়ী সৎকার বা সমাধিস্থ করতে হবে। অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে অনুদান দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।



 

Show all comments
  • Shohel ৬ জানুয়ারি, ২০২১, ১:৫৬ পিএম says : 0
    মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী সাহেব ১৯ শে মার্চ-৭১ সালের জয়দেবপুর প্রতিরোধ যুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। তার এই মহান কর্মের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি স্বাধীনতা পুরস্কার প্রাপ্ত হন। ৭১ সালের আগষ্ট মাসে, তিনি ভারতের ত্রিপুরায় চালে যান এবং ত্রিপুরায় “পদ্মা ক্যাম্প” এর ডেপুটি কমান্ডরের দায়িত্বে ছিলেন বলে তিনি দাবি করেন।(সূত্র প্রথম আলো ৭ ই সেপ্টেম্বর- ২০১৯)। তিনি ৭১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ত্রিপুরার ঐ “পদ্মা” ক্যাম্পেই অবস্থান করেন। তিনি পদ্মা ক্যাম্পে অবস্থান কালে একটি বানর পোষতেন। পোষা বানর টির কারনে ঐসময় ক্যাম্প পদ্মাত তাঁর ব্যপক পরিচিতি ছিল। এখনো ঐ সময়ের কথা প্রসঙ্গে অনেকেই ঐ বানরের গল্প করেন। ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধে চুড়ান্ত বিজয়ের পর তিনি ত্রিপুরায় অবস্থানকারী অন্যান্যদের সাথে বিজয় মিছিল সহ ব্রাক্ষ্মনবাড়িয়া সীমান্ত পথে বাংলাদেশ প্রবেশ করেন এবং জয়দেবপুরের স্থানীয়দের সাথে নিজ এলাকায় ফিরে আসেন।স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও এলাকাবাসী এমনটাই দাবি করেন। কিন্তু MOLWA এর ওয়েব সাইটে সংরক্ষিত ভারতে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকা “মেঘনা” তে তাঁর নাম সংরক্ষিত আছে (যদিও মন্ত্রীর সাহেবের "পদ্মা" ক্যাম্পের দাবি করেছেন) । "মেঘনা" তালিকায় বিতর্কিত একটি দলিলও প্রমাণ হিসাবে যুক্ত করা হয়েছে। ভারতে প্রশিক্ষণের দলিল হিসাবে MOLWA এর ওয়ব সাইটে যে বিতর্কিত দলিলটি সংযোজন করা হয়েছে , তা ২০১৮ সালে জামুকা এর সচিব ও মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরের ব্যবস্থাপকের স্বাক্ষরিত রেজিষ্টার খাতার একটি পৃষ্ঠা মাত্র …?! জামুকার নিয়মে- “সমস্ত দলিলিক প্রমাণপত্রের পরেও কোন ব্যক্তিকে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে প্রমাণের জন্য তার তিন জন সহযোদ্ধাকে প্রত্যক্ষ সাক্ষ্যী হিসাবে হাজির করাতে হয়।“ কিন্তু মন্ত্রীর ঐ দলিলে স্বাক্ষরকারী ঐ দুজন তাঁর সহযোদ্ধাও নন, এমন কি তাঁরা মুক্তিযোদ্ধাও নন। এমন দুজন ব্যক্তি কেমন করে মন্ত্রীকে ভারতে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে প্রত্যয়ন করলেন ? এবং সেই প্রত্যয়নপত্র MOLWA কোন আইনে গ্রহন করলো ? এমন সদ্যপ্রাপ্ত বিতর্কিত দলিল অন্য কোন বীর মুক্তিযুদ্ধার প্রমানক হিসাবে তাঁর মন্ত্রনালয় /জামুকা গ্রহন করবে কি ?! তবে মন্ত্রীর বেলায় কোন আইনে ও কেন তা গ্রহন করা হলো? মুক্তি সংগ্রামের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযোদ্ধের অন্যতম সংগঠক বঙ্গতাজ শহীদ তাজ উদ্দিন আহমেদ , অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম, শহীদ ক্যাপ্টেন মনসুর আলী ও শহীদ কামরুজ্জামান সহ মুক্তিযুদ্ধের যারা সংগঠক ছিলেন, তাঁরা কখনো নিজেদের মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে দাবি করেছেন কি ? যাদের নেতৃত্বে আজ আমরা স্বাধীন দেশ পেয়েছি, তাঁরা যদি নিজেদের মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে দাবি করতেন বা এখন যদি মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে তাঁদের তালিকা ভুক্তির চেষ্টা করি তবে, তাঁদের অবদান বা সম্মান বৃদ্ধিতে তা কি কোন ভুমিকা রাখবে? না কি নতুন বিতর্কের সূচনা করবে মাত্র ?! স্বাধীনতা সংগ্রামে মাননীয় মন্ত্রী সাহেবের মহান অবদান এবং বর্তমান সম্মানের স্বার্থেই বিতর্কিত ঐ সদ্য আবিষ্কৃত তাঁর দলিলটির উৎস ও অন্যান্য তথ্য বিস্তারিত ভাবে মহান বিজয়ের এই মাসে জাতির নিকট প্রকাশের প্রত্যাশা করছি।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বীর মুক্তিযোদ্ধা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ