পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আমাদের দেশের দারিদ্র, অশিক্ষা ও নারীর প্রতি অবহেলা- এই তিনটি কারণে সেরিব্রাল পালসি রোগের বিস্তৃতি বেশি বলে মনে করেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, পুষ্টিহীনতা ও বাচ্চা হওয়ার সময় পর্যাপ্ত অক্সিজেন না পাওয়া- এ দুটি সমস্যার কারণে এ রোগটি হয়ে যেতে পারে। তাই আমাদের প্রথম কাজ হবে এটি প্রতিরোধ করা। যদি রোগটি হয়ে যায় তাহলে সার্জিক্যাল অপারেশন করা। সার্জিক্যাল অপারেশন এ রোগ ভালো হয়, তবে চিকিৎসা খুবই ব্যয়বহুল। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অপারেশনে তিন থেকে চার লাখ টাকা নেয়া হয়। আমরা কিন্তু এক লাখ টাকায় এ চিকিৎসা দিচ্ছি।
গতকাল গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে সেরিব্রাল পালসির সার্জিক্যাল চিকিৎসা সংক্রান্ত সেমিনারে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী এসব কথা বলেন। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নিউরোসার্জন প্রফেসর ডা. ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী।
আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা শিশু হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক নিউরো সার্জান ও বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর মোস্তফা মাহবুব, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সের সহকারী অধ্যাপক ডাক্তার নাজমুল হক, শিশু বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. মেজবা উদ্দিন আহমেদ গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রেস উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু ও সহযোগী অধ্যাপক ডা. কণা চৌধুরী।
বক্তারা বলেন, ফেসিয়াল পালসির অর্থ হলো ফেসিয়াল নার্ভ প্যারালাইসিস (মুখ বেঁকে যায়, চোখ খোলা থাকে)। সেরিব্রাল পালসিও ওইরকম একটা রোগ। যেখানে ব্রেইনের কিছু কিছু অংশ নষ্ট হতে থাকে বা নষ্ট হয়। সোজা কথায় সেরিব্রাল পালসি মানে আমরা বলতে পারি আংশিক ব্রেইন প্যারালাইসিস।
তারা বলেন, সাধারণত জন্মের পর পর নবজাতক ভালোভাবে নিশ্বাস নিতে না পারার জন্য শরীরে অক্সিজেন স্বল্পতা দেখা দেয়। এই অক্সিজেন স্বল্পতাই সবচাইতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ব্রেইন। আমাদের দেশে ১ হাজার বাচ্চা জন্মগ্রহণ করলে তার মধ্যে ৩ দশমিক ৫ জন বাচ্চা সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত হয়। যা পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় ১ দশমিক ৫ গুণ বেশি। এই সমস্ত রোগীদের অধিকাংশ খিচুনি হয়। যখন খিচুনি হয় তখন বাচ্চা নিশ্বাস নিতে পারে না। এভাবে বারবার খিচুনি হলে ব্রেইন অক্সিজেন স্বল্পতার কারণে ব্রেইন বারবার ক্ষতি হতে পারে। এই সমস্ত বাচ্চাগুলো ‘হাবা-গোবা’ হয়, হাঁটা-চলাফেরা করতে পারে না, ঘাড় শক্ত করতে পারে না, পরিবারের সবার সাথে কমিউনিকেট করতে পারে না, মুখ দিয়ে লালা পড়ে, বাচ্চা শক্ত খাবার খেতে পারে না, রোগ যখন তীব্র হয় তখন বাচ্চা তরল খাবারও খেতে পারে না। অনেক বাচ্চা কথাও বলতে পারে না, অনেক রোগী চোখে দেখে না, অনেক রোগীর হাত-পা শক্ত হয়ে যায় এবং এরা নিজে নিজে চলাফেরা করতে পারে না। সব রোগীর ক্ষেত্রে সবগুলো লক্ষণ থাকবে তা কিন্তু নয়। এই সমস্ত বাচ্চাদের মাথার খুলি ছোট থাকে।
এই সমস্ত বাচ্চাদের মাথার খুলি ছোট হওয়ার কারণে ব্রেইনের পর্দাও ছোট থাকে। মাথার খুলি যেহেতু বাড়ে না, কারণ মাথার জোড়া গুলো এক বছরের পূর্বে সম্পূর্ণ জোড়া লেগে যায়। যার ফলে ব্রেইন পূর্ণতা লাভের জন্য ৫ বছর পর্যন্ত বাড়তে হবে, তার আর সম্ভব হয় না।
এমতাবস্থায় মাথার খুলি কেটে ব্রেইনের পর্দা কেটে প্লাস্টিক সার্জারি করে দিলে ব্রেইন বাড়ার যথেষ্ট জায়গা পায়। যার ফলে দ্রুত ব্রেইন বৃদ্ধি পেয়ে পূর্ণতা লাভ করে এবং অন্যান্য উপসর্গ লোপ পায়। সেরিব্রাল পালসির কারণ সম্পর্কে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র জানিয়েছে, জন্মকালে ব্রেইনে অক্সিজেন স্বল্পতা, ব্রেইনে সংক্রমণ, ৩ দশমিক ২৮ সপ্তাহের পূর্বে বাচ্চার জন্মগ্রহণ, জন্মের পর অল্প ওজন থাকা এবং গর্ভাঅবস্থায় ভাইরাস সংক্রমণ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।