পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার
রাজধানীর উত্তরায় একটি বহুতল ভবনের ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে ১০৬ ভরি স্বর্ণালংকার, ২০ লাখ টাকা ও ১০ লাখ বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার করেছে বিমানবন্দর থানা পুলিশ। তবে এ সময় পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি। একটি সংঘবদ্ধ প্রতারকচক্র বিভিন্ন বাসা-বাড়ির ধনী পরিবারের সদস্যদের সাথে প্রতারণার মাধ্যমে এসব অর্থ ও স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নিয়ে ছিল বলে পুলিশ জানায়।
গতকাল বুধবার বিকেলে বিমানবন্দর জোনের সহকারী কমিশনার আব্দুল্লাহহিল কাফী জানান, এর আগে, এই প্রতারক চক্রের সাদিয়া ওরফে তানিয়া নামে এক মেয়েকে আটক করে বিমানবন্দর থানা-পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে চক্রের তথ্য পাওয়া যায়।
উত্তরার ১২ নম্বও সেক্টরের ১১ নম্বর রোডের ১৮ নম্বর বাসায় গত মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) রাতভর অভিযান চালিয়ে টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করে পুলিশ। প্রতারক চক্রের সদস্যরা প্রবাসে থাকে এমন ছাত্র-ছাত্রীর পরিবারকে টার্গেট করে। চক্রের সদস্যরা ওই পরিবারের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে। পরে ওই বাসায় গিয়ে ছেলে কিংবা মেয়ের বান্ধবী পরিচয় দিয়ে বাবা-মার সঙ্গে প্রতারণা করে।
তিনি আরও বলেন, প্রতারক চক্রের মেয়ে সদস্যরা ওই পরিবারে গিয়ে বলেনÑ লন্ডনে থাকা আপনার মেয়ে আমার বান্ধবী। সেখানে আমরা এক সঙ্গেই ছিলাম। গত মাসে বিয়ের জন্য দেশে এসেছি। কেনাকাটা করবো আমার কাছে ডলার আছে। আপনি ডলারগুলো নিয়ে কিছু টাকা দিলে আমি কিছু কেনাকাটা করতাম। এভাবেই যখন ডলার দিয়ে টাকা দেন, তখন প্রতারক চক্রের মেয়েরা অনুরোধ করেন হবু স্বামীর সঙ্গে পরিচিত হতে। পরে তারা বিভিন্ন কায়দায় অর্থ-কড়ি হাতিয়ে পালান।
পুলিশ জানায়, ওই বাসা থেকে ১০৬ ভরি স্বর্ণ (সোনার অলংকার), নগদ ২০ লাখ ৫২ হাজার ৯৯০ টাকা, ২৫টি মোবাইল ফোন সেট, পাকিস্তানি মুদ্রায় পাঁচ হাজার পাঁচ রুপি, ৪ হাজার ৫১০ মার্কিন ডলারসহ কয়েকটি দেশের বৈদেশিক মুদ্রা পাওয়া যায়। ওই ফ্ল্যাট থেকে প্রচুর মানিব্যাগ, পার্স, সিম ও মেমোরি কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ আরও জানায়, চক্রটি মিরপুর, বনানী, গুলশান ও উত্তরা এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছে। বাসায় একলা থাকা বয়স্ক মানুষ এদের শিকার। ১০ থেকে ১২ জনের এ চক্রের অন্য সদস্যদেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
বিমানবন্দর জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) আবদুল্লাহ হিল কাফী বলেন, গত কয়েক মাস ধরে উত্তরার বিভিন্ন বাসায় প্রবেশ করে স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি করে নেয়ার অভিযোগে এক তরুণীর বিরুদ্ধে উত্তরার বিভিন্ন থানায় অভিযোগ পড়ে। এরপর পুলিশ তাকে খুঁজতে থাকে। ৯ আগস্ট সাদিয়া ওরফে তানিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মঙ্গলবার রাত ৯টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত উত্তরার ১২ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর সড়কের ১৮ নম্বর বাসার দোতালার একটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে ১০৬ ভরি সোনার অলংকার, ২০ লাখের বেশি টাকাসহ আরও বেশকিছু বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার করেছে পুলিশ। বাংলাদেশী টাকায় এসব মুদ্রার বিনিময় মূল্য ৭/৮ লাখ টাকা হতে পারে। ওই ফ্ল্যাট থেকে পুরুষের মানিব্যাগ, নারীদের পার্স, সিম ও মেমোরি কার্ডও উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, যেসব বয়স্ক বাবা-মায়ের ছেলে বা মেয়ে প্রবাসে থাকে সেইসব পরিবারে এই তরুণী কৌশলে প্রবেশ করে। তাদের বাসায় গাড়ি ও নগদ ডলার নিয়ে প্রবেশ করে। এরপর তানিয়া নিজেকে ওইসব প্রবাসী ছেলে-মেয়েদের বাবা-মায়ের কাছে নিজেকে তাদের বান্ধবী পরিচয় দিয়ে থাকেন। বয়স্ক বাবা-মাকে বলে, আমিতো আপনাদেও ছেলেমেয়েদের সঙ্গে লন্ডনে থাকি। আজকে আমার একটা বিয়ের দাওয়াত আছে শপিং করতে যাব, আমার কাছে কিছু ডলার আছে কিন্তু নগদ টাকা নেই। এই ডলারগুলো রেখে আমাকে নগদ কিছু টাকা দিন। এরপর যখন তারা আলমিরা খুলে টাকা আনতে যায় তখন সে সবকিছু খেয়াল করে। কয়েকদিন পর একটি শাড়ি নিয়ে আবার ওই বাসায় গিয়ে বলে, আন্টি আপনার জন্য একটা শাড়ি নিয়ে এসেছি। চলেন আমার স্বামী আপনাকে দেখতে চেয়েছে, চলুন। এরপর তাদের শাড়ি পরতে পাঠিয়ে বাসার আলমিরা থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার চুরি করে পালিয়ে যায়। ইংরেজি ও বাংলায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে কথা বলতে পারা ওই নারীর অভিনব প্রতারণার সঙ্গে একটি চক্র জড়িত বলে ধারণা করছে পুলিশ। তাদের খোঁজে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।