পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গ্রেফতারকৃত মনিরুজ্জামান মনির তুরাগ নদীর তীর ঘেঁষা বাগানবাড়িতে বসেই ভূমিদখল, চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করতেন। কেউ কথা না শুনলে তাকে বাগানবাড়িতে ডেকে নিয়ে নির্যাতন চালানো হতো। দেয়া হতো মেরে বস্তায় ভরে তুরাগ নদীতে ফেলে দেয়ার হুমকি। তার বিরুদ্ধে জমি ও বাড়ি দখল, চাঁদাবাজি, ভাংচুর এবং ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগে ৭৫টি মামলা ও জিডি রয়েছে। মোহাম্মদপুরের শেখেরটেক ও বেড়িবাঁধ সংলগ্ন ঢাকা উদ্যান, চন্দ্রিমা হাউজিং, তুরাগ হাউজিং, চাঁদ উদ্যান, একতা হাউজিং, শ্যামলী হাউজিং, রাজধানী হাউজিং, নবীনগর হাউজিং, গ্রিন সিটিসহ ১০টি হাউজিং প্রতিষ্ঠানের একাধিক প্লট দখলের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। পুলিশের তিন দিনের রিমান্ডে এ সব অভিযোগের বিষয়ে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে আদাবর থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মনিরকে। প্রাথমিক জিজ্ঞাবাদে বেশ কিছু অভিযোগের সত্যতাও পেয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। পুলিশের দায়িত্বশীল সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
রিমান্ডে মনিরকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন পুলিশের এমন একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, ওই বাগানবাড়িটি ছিল মনির মিয়ার টর্চার সেল। রাতের আঁধারে লোকজনকে ঘুম থেকে ডেকে ওই টর্চার সেলে নির্যাতন করা হতো। নির্যাতনের সময় সাউন্ড বক্সে উচ্চ ভলিউমে গান বাজানো হতো। বাজনার তালে তালে চলতো নির্যাতন। নির্যাতনের শিকার ব্যক্তির আর্তনাদ বাইরের অন্যরা যেন শুনতে না পান এ জন্য এই গান বাজানো হতো। এ ছাড়া মনির মিয়া বাগানবাড়িতে বসে ইচ্ছামতো ফাঁকা গুলি ছুড়তেন। এলাকাবাসীকে ভয় দেখানোর জন্য এই ফাঁকা গুলি ছোড়া হতো। এ সব বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
ওই সূত্র আরো জানিয়েছে, ২০১৬ সালে ঢাকা উদ্যান বালুঘাটের দখল নেয়াকে কেন্দ্র করে মনিরের বাহিনী নির্যাতন চালান মেসার্স আজহার এন্টারপ্রাইজের কর্মচারি সুবল চন্দ্র দাশ, রুহুল, পাটোয়ারি খানের ওপর। এদের সবাইকে ঘুম থেকে ডেকে মধ্যরাতে নেয়া হয় বাগানবাড়িতে। সেখানে মনিরের উপস্থিতিতে তাদেরকে দফায় দফায় মারধর করা হয়। ওইদিন সেখানে উপস্থিত ছিলেন মনিরের সহযোগী হুমায়ুন, হোসেন ও শাহাবুদ্দীন। নির্যাতনের সময় ওই চারজনই অস্ত্রধারী ছিলেন।
নির্যাতনের শিকার রুহুল আমিন পুলিশের কাছে জানিয়েছেন, রাতে ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাৎ আমাদের ঘুম থেকে ডেকে তোলে মনিরের বিশাল বাহিনী। ঘুমের মানুষকে ডেকে নিয়ে বলা হয়, মনির ভাই তোদের সবাইকে ডাকছে। বাগানবাড়িতে ঢোকামাত্রই মনিরের লোকজন আমাদের ওপর হামলা শুরু করে। আমরা আজও জানতে পারিনি আমাদের অপরাধ কী ছিলো?
মনিরের সাঙ্গপাঙ্গদের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ব্যবসায়ী আব্দুল হালিমও। তিনি অভিযোগ করেন যে, ২০০৬ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত তিনি ঢাকা উদ্যান এলাকায় বালুর ব্যবসা করতেন। কিন্তু মনির বাহিনী তার কাছে চাঁদা চাওয়ায় তিনি ওই এলাকা থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছেন। মনির মিয়া কাউকে তোয়াক্কা করতেন না।
র্যাব জানায়, মনির স্থানীয় কাজী আশরাফ আল কাদের ও তার স্ত্রী ভিকারুন নিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সিনিয়র শিক্ষিকা খাদিজা আক্তার ঢাকা উদ্যানের ডি ব্লকের সাড়ে ৬ কাঠার ৫৪ নম্বর প্লটের দোতলা বাড়িটি দখল করেন। আরেক ভুক্তভোগী অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মোস্তাফা নাজিম ঢাকা উদ্যানের সি-ব্লকে ১ নম্বর সড়কের একটি প্লটে চলতি বছরে বাড়ি নির্মাণ শুরু করলে মনির তার কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। মনিরের সন্ত্রাসী বাহিনীর হামলা ও লুটপাটের শিকার হন মোহাম্মদপুরের বছিলা রোডের আজহার এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী বরকত উল্লাহ। মইন উদ্দিন ও জহির উদ্দিনের মালিকানাধীন শ্যামলী হাউজিংয়ের দ্বিতীয় প্রকল্পের এইচ ব্লকের ১ নম্বর রোডের ১৩ নম্বর বাড়িটি মনিরের ক্যাডার বাহিনী দখল করে নেয়।
মোহাম্মদপুর থানার ওসি আবদুল লতিফ জানান, মনিরকে ৩দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুরের শেখেরটেক ও বেড়িবাঁধ সংলগ্ন ঢাকা উদ্যান, চন্দ্রিমা হাউজিং, তুরাগ হাউজিং, চাঁদ উদ্যান, একতা হাউজিং, শ্যামলী হাউজিং, রাজধানী হাউজিং, নবীনগর হাউজিং, গ্রিন সিটিসহ ১০টি হাউজিং প্রতিষ্ঠানের একাধিক প্লট দখলের অভিযোগ রয়েছে। সব বিষয়ে পর্যায়ক্রমে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। গত ৫ নভেম্বর মোহাম্মদপুরের ১/২ পিসিকালচার হাউজিং সোসাইটির বাসায় অভিযান চালিয়ে একটি অবৈধ অস্ত্র ও চারশ পিস ইয়াবাসহ মনিরুজ্জামান ওরফে মনিরকে গ্রেফতার করে র্যাব-২।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।