পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট সপরিবারে হত্যার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে ধূলিস্যাৎ করে দেশকে পাকিস্তানি ভাবধারায় ফিরিয়ে নেয়ার ষড়যন্ত্র করা হয়। এই নির্মম হত্যাকা-ের ষড়যন্ত্রে পাকিস্তান রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সংযোগ থাকার বিষয়টি পরবর্তীতে বিভিন্ন প্রামাণ্য দলিল, পুস্তক-পত্রিকা, সাময়িকীতে পাওয়া গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত ‘দ্য ক্যাপিটাল এক্সপ্রেস’ পত্রিকার সম্পাদক বিখ্যাত সাংবাদিক বি জেড খসরু তার ’দ্য বাংলাদেশ মিলিটারি কোপ অ্যান্ড দি সিআইএ লিংক’ শীর্ষক বইতে বলেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে গণতান্ত্রিক সরকারকে উচ্ছেদের উৎখাতের ঘটনায় পাকিস্তানে আনন্দ-উচ্ছ্বল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বঙ্গবন্ধু সরকারকে উচ্ছেদের পরদিন পাকিস্তান সরকারই সর্বপ্রথমে খন্দকার মোস্তাকের নেতৃত্বাধীন সেনাসদস্য সমর্থিত সরকারকে স্বীকৃতি দেয়।
তিনি বলেন, ভুট্টো অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কনফারেন্সভুক্ত (ওআইসি) দেশগুলোর কাছে বাংলাদেশকে ‘দ্য ইসলামিক রিপাবলিক অব বাংলাদেশ’ আখ্যা দিয়ে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা গ্রহণকারী সরকারের পাশে এসে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান এবং বাংলাদেশকে ৫০ হাজার টন চাল এবং এক কোটি গজ কাপড় সাহায্য প্রদানের প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন।
এ বিষয়ে ‘ফ্যাক্টস অ্যান্ড ডকুমেন্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-’ বইতে লেখক অধ্যাপক আবু সাইয়িদ বলেছেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের সংবাদে সে সময়ে লন্ডনে অবস্থানকারী জামায়াতে ইসলামীর আমির গোলাম আযমও বাংলাদেশের নতুন সরকারকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য মুসলিম বিশ্বের প্রতি আবেদন জানান। পাকিস্তান মুসলিম লীগের সহ-সভাপতি এবং পরবর্তীকালে সভাপতি খাজা খায়ের উদ্দিন খন্দকার মোস্তাককে এক শুভেচ্ছা বাণী পাঠান। যার একটি লাইন ছিল ’লেট দিস বি দ্য বিগেনিং...।’
দেশের রাজনীতিবিদ এবং সুশীলসমাজের প্রতিনিধিরাও বিভিন্ন সময়ে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের ঘটনায় পাকিস্তানের সম্পৃক্ততা এবং দেশকে সাম্প্রদায়িকতার পথে পরিচালনার জন্য পরবর্তী সরকারগুলোর প্রচেষ্টার কথা বলেছেন।
প্রবীণ রাজনীতিক আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের অভিমত, একাত্তরের পরাজিত পাকিস্তান পরাজয়ের প্রতিশোধ নিয়ে বাংলাদেশকে পুনরায় পাকিস্তানি ভাবধারায় ফিরিয়ে নেয়ার জন্যই তাদের এদেশীয় দোসরদের সহযোগিতায় বঙ্গবন্ধু হত্যাকা- ঘটায়।
বঙ্গবন্ধুর ¯েœহভাজন এই রাজনীতিক বলেন, বহু দেশেই ক্যু এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে হত্যার ঘটনা ঘটলেও পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের বিয়োগান্তক অধ্যায় কেবল শাসন ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকা ব্যক্তিকে হত্যা করে শাসন ক্ষমতা দখলকেন্দ্রিক ছিল না।
৯ বছরের শিশুপুত্র রাসেল হত্যা, নিরপরাধ পরিবারের অরাজনৈতিক সদস্যসহ অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ হত্যা করে পুরো পরিবারকে নিঃশেষ করে দেয়ার নির্মম নৃশংস প্রচেষ্টাই বলে দেয় এটির সঙ্গে একাত্তরের পরাজিত শক্তির পরাজয়ের জিঘাংসা জড়িয়ে আছে।
সাংবাদিক বি জে খসরু বাংলাদেশস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস থেকে প্রাপ্ত তথ্যের বরাত দিয়ে তার ‘দ্য বাংলাদেশ মিলিটারি কোপ অ্যান্ড দি সিআইএ লিংক’ বইতে উল্লেখ করেনÑ ভুট্টো বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের পরের দিনই বিশ্বের নেতৃবৃন্দের কাছে বাংলাদেশের নতুন সরকারকে স্বীকৃতি দেয়ার আবেদনের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশকে সহায়তা প্রদানকারী ভারতকে কটাক্ষ করে বলেন, ’এই আবেদনের মধ্য দিয়ে একটি বিষয় স্পষ্ট যে, আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েই পাকিস্তানকে দ্বিখ-িত হতে হয়।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।