পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দুর্নীতির দায়ে চাকরিচ্যুত ও কারাভোগ করে বেরিয়ে এসে কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের ক্যাম্পাসে ভবন নির্মাণ করে বিভিন্ন সমিতির নামে সরকারি অফিস দখল করেছেন প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের সাবেক স্টোর কিপার আফসার আলী। অফিস খুলে একটি চক্রের যোগসাজসে তিনি অধিদফতরের নিয়োগ, বদলি ও টেন্ডারবাজিও দখলে নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। গত সপ্তাহে মন্ত্রণালয় থেকে এ চিঠি অধিদফতরে পাঠানো হয়।
কি কারণে দুর্নীতির দায়ে চাকরিচ্যুত তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী আফসার আলীর সরকারি অফিস দখল করেছে চিঠিতে তা জানতে চাওয়া হয়েছে প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের ডিজির কাছে।
প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. আবদুল জব্বার শিকদার ইনকিলাবকে বলেন, আফসার আলী দুর্নীতির দায়ে চাকরিচ্যুত ও কারাভোগ করে বেরিয়ে এসে কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে সমিতির নামে সরকারি অফিস দখল করেছে কি না এটা আমার জান নেই। তবে সে এখন ঠিকাদারী ব্যবসা করেন। মন্ত্রণালয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। সে বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।
সংস্থাটির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অভিযোগ, দুর্নীতির দায়ে চাকরিচ্যুত তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী আফসার আলীর অবৈধ শত কোটি টাকার তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের এক মামলায় তার দুই বছরের সাজা হয় ও তার প্রতিষ্ঠানের সকল স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ রাষ্ট্রের অনুক‚লে বাজেয়াপ্ত করা হয়। কিন্তু সম্প্রতি জামিনে বেরিয়ে এসেই তিনি বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। তার দাপটে অধিদফতরের কর্মকর্তারা কোনঠাসা হয়ে পড়েছেন। তার বিরুদ্ধে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খোলার সাহসও পাচ্ছেন না।
মন্ত্রণালয়ের অভিযোগে বলা হয়, আফসার নিজেকে একজন সচিবের ভগ্নিপতি পরিচয় দেন। এ ছাড়াও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ.ম. রেজাউল করিমের পিএস-এর আত্মীয় পরিচয় দিয়েও তার কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছেন। এছাড়াও এসব পরিচয় ব্যবহার করে তিনি ধর্ম মন্ত্রণালয়ের একটি চক্রের সঙ্গে হাত মিলিয়ে হজ ও ওমরাহ হজের ব্যবসার নামে স্বর্ণ প্রাচারের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন বলেও অভিযোগ আছে।
জানা গেছে, ১৯৮২ সালে প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের স্টোর কিপার পদে যোগ দিয়ে আফসার গরু-ছাগলের খাদ্য থেকে শুরু করে ভ্যাকসিন গোপনে বাইরে বিক্রিসহ নানাভাবে সংস্থাটির অর্থ আত্মসাৎ করেন বিপুল বিত্তবৈভবের মালিক হন। গুদাম খালি করে তিনি সরকারি মালপত্র বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বিক্রি করে তিনি রাতারাতি শত কোটি টাকার মালিক হন। নামে-বেনামে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলে তিনি বর্তমানে একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি ও একটি আবাসন কোম্পানীর চেয়ারম্যান। তবে এসব প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশেই তিনি তার স্ত্রী ও অন্য স্বজনদের নাম ব্যবহার করে থাকেন। সর্বসাকুল্যে ২০ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করে এই স্টোরকিপার অধিদফতরের কোটি টাকার সম্পদ বিভিন্ন কোম্পানীর কাছে গোপনে বিক্রি করে রাতারাতি হয়ে ওঠেন কোটিপতি। তার নেতৃত্ব সেখানে একটি অনিয়ম, দুর্নীতির আর সরকারি সম্পদ তছরুপের সিন্ডিকেট গড়ে তুলেন।
বর্তমানে অধিদফতরের সব ধরনের নিয়োগ, বদলি, টেন্ডারবাজি ও কেনাকাটার কর্তৃত্ব তার বাহিনীর দখলে। সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পরিচয় গোপন করে নিজেকে অধিদফতরের সিনিয়র প্রকৌশলী দাবি করে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা আফসারের বিরুদ্ধে কথা বললে কর্মকর্তাদেরও লাঞ্চিত ও বদলি হতে হয়।
কর্মরত অবস্থায় সরকারি নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করেই জয়েন্ট স্টক রেজিস্ট্রারের দফতর থেকে নিবন্ধন করে তিনি ফ্যালকন হোমস লিমিটেড এবং গ্যালাক্সী নীট অ্যান্ড ডাইং নামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেন।
নিজেকে প্রতিষ্ঠান দুইটির চেয়ারম্যান হিসেবে পরিচয় দেন। নামে বেনামে তার রয়েছে দামি গাড়ি। অধিদফতরের সকল এলডিডিপির প্রকল্পের নিয়ন্ত্রণ করেন তিনি। প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মহাখালি টিকা উৎপাদন কেন্দ্র, কেন্দ্রীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠান, জাতীয় চিড়িয়াখানা, সাভারের ডেইরি ফার্মসহ অধিদফতরের সকল ঠিকাদারি কাজ নিয়ন্ত্রণ করেন আফসার আলী।
অধিদফতরের ভ্যাকসিন প্রকল্পের ডা. এমদাদুল হক ও মহিষ প্রকল্পের ডা. রফিকুল ইসলাম স্টোরকিপার আফসার আলীর শর্ত না মানায় মতবিরোধ ছিল। এই দুইজন হঠাৎ মৃত্যুবরণ করেন। অনেকে এই মৃত্যুর জন্য আফসার আলীকে দায়ী করেন। কেনাকাটার দায়িত্ব না দেয়ায় প্রকল্প কর্মকর্তা ডা. নিতাই চন্দ্র দাসকে লাঞ্চিত করে আফসারের ক্যাডার বাহিনী। অধিদফতরের বিভিন্ন প্রকল্প কর্মকর্তা থেকে শুরু করে অফিস সহকারীদের হয়রানিও করেন এই সিন্ডিকেট সদস্যরা। তার আধিপত্য থেকে মুক্তি চেয়ে মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
স্টোরকিপার আফসার আলী ইনকিলাবকে বলেন, যেসব অভিযোগ করা হয়েছে তা মিথ্যা ও বানোয়াট। প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের কিছু শীর্ষ কর্মকর্তা টেন্ডার, কেনাকাটা, বিদেশ সফর ও বড় বড় প্রকল্প ভাগ ভাটোয়ারা করে খাচ্ছিল। দুদকের মামলায় চাকরি হারিয়ে বৈধ ব্যবসা করছি। এতে তারা নাখোশ হয়ে আমার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ দিচ্ছে বিভিন্ন মহলে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।