পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বরিশাল ব্যুরো : সেল ফোনে পরিচয়, প্রেম ও বিয়ের পর মাস না গড়াতেই স্বামী, দেবর ও দেবরের এক বন্ধুর হাতে নির্মম ভাবে খুন হয়েছে কুমিল্লার এক যুবতী।
গতকাল মঙ্গলবার মাঝ রাতে বরিশালের উদ্দেশে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা ‘এমভি পারাবত-১০’ লঞ্চের স্টাফ কেবিনে এই হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটে। হত্যার সময় নিহতের ডাক চিৎকারের শব্দে পুরো লঞ্চের যাত্রী ও স্টাফরা একত্রিত হয়েও কেবিনের একটি দরজা ভেঙ্গে বাঁচাতে পারেনি হত্যাকা-ের শিকার মিনা আক্তার (২৫) কে। মিনা কুমিল্লা’র হোমনা এলাকার মেয়ে এবং ঢাকার মোহম্মদপুরে একটি বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করত। কেবিনের দরজা বন্ধ করে নির্ভয়ে হত্যা শেষে হত্যাকারীরা বেরিয়ে এলে তাদের কেবিনে আটকে রেখে ভোরে লঞ্চ বরিশাল ঘাটে পৌঁছামাত্র পুলিশে সোপর্দ করেছে লঞ্চের স্টাফ ও যাত্রীরা।
আটককৃতরা হচ্ছে, স্বামী আনিচ পাটোয়ারী (২০), দেবর কালাম পাটোয়ারী (২২) ও তার বন্ধু তুষার (২২)। আনিচ ও কালাম সম্পর্কে চাচাতো ভাই ও উভয়ই শরিয়তপুর জেলার গোসাইঘাট-এর বাসিন্দা। অপর হত্যাকারী তুষার নওগার সাঈদ হাসানের ছেলে। আনিচ সাভারে একটি জুতার কারখানার শ্রমিক এবং কালাম ও তুষার সাভারেই একটি লন্ড্রিতে কাজ করতো। আটকের সময় তাদের কাছ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত ধারালো চাকু উদ্ধার করেছে পুলিশ।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে পারাবত-১০ লঞ্চের একাধিক কর্মচারী জানায়, সোমবার রাত সাড়ে ৮ টায় ঢাকা থেকে লঞ্চটি বরিশালের উদ্দেশে যাত্রা করে। হত্যাকারীদের সাথেই ঢাকা থেকে লঞ্চে ওঠে মিনা আক্তার। লঞ্চের তৃতীয় তলায় পেছনের ছাদের সাথে থাকা সামসু মাষ্টার ও আক্তার মাষ্টারের স্টাফ কেবিনটি ভাড়া করে তারা। রাত আড়াইটার দিকে হিজলা অতিক্রমকালে স্বামী আনিচ পাটোয়ারী হত্যার দায়িত্ব দিয়ে চাচাতো ভাই কালাম ও তার বন্ধু তুষারকে কেবিনের মধ্যে রেখে তদারকির জন্য কেবিন থেকে বের হয়ে যায়। এর সাথে সাথেই মিনার বুকফাটা আর্তনাদ ও প্রাণে বাঁচার করুণ আকুতিতে কেবিনের আশপাশের সকল যাত্রীরা ছুটে আসে। কিন্তু তখন ভিতর থেকে আটকে ধারালো চাকু দিয়ে মিনাকে হত্যায় ব্যস্ত ছিল দুই হত্যাকারী। অনেক ক্ষণের ধস্তাধস্তি চলায় ও বার বার দরজায় জোরে আঘাত করার পরেও হত্যাকারীরা কেবিনের দরজা না খোলায় ও লঞ্চে কোন আনসার সদস্য না থাকায় যাত্রীরা লঞ্চের স্টাফদের ডেকে আনে। কিন্তু তারা এসেও দরজা খুলতে ব্যর্থ হয়। আধ ঘন্টারও বেশী সময় ধরে হত্যাকা- সম্পাদনের পর খুনিরাই দরজা খুলে দেয় বলে জানায় লঞ্চের স্টাফরা। উটকো ঝামেলার আশংকায় তারা দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করেনি বলেও জানায় স্টাফরা। এসময় ওই দুই হত্যাকারী নত না হয়ে উল্টো বেশী ভিড় জমালে আরও লাশ পড়ার হুমকিও দেয় বলে জানায় প্রত্যক্ষদর্শীরা। অন্যদিকে ঘটনার হোতা স্বামী আনিচ সহযোগিদের ধরা পড়ার খবরে দোতলায় প্রথম শ্রেণীর কেবিনের চলাচলের পথে একটি তোষক মুড়ি দিয়ে শুয়ে থেকে আত্মগোপনের চেষ্টা করে। তাকে খোঁজা শুরু হলে সন্দেহজনক আচরণ লক্ষ্য করে তাকে আটক করে অন্য যাত্রী ও স্টাফরা।
ভোর পৌনে চারটার দিকে এমভি পারাবাতÑ১০ বরিশাল ঘাটে পৌঁছার সাথেই টার্মিনালে অবস্থানরত কোতয়ালী ওসি শাহ মো. আওলাদ অন্যান্য পুলিশ সদস্যদের নিয়ে হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্রসহ তিন হত্যাকারীকে আটক করে। নিহত মিনার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কোতয়ালী মডেল থানার ওসি সাংবাদিকদের জানান, কুয়াকাটা ভ্রমণে আসার নাম করে তিন যুবক হত্যার উদ্দেশ্যেই মিনাকে নিয়ে লঞ্চে উঠেছিল।
এর পর ভাই ও তার বন্ধুকে নিয়ে হত্যার পরিকল্পনা করে আনিচ পাটোয়ারী। যা তারা বাস্তবায়ন করে গতকাল রাতে। মিনার বোনদের খবর দেয়া হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। তারা পৌঁছানোর পর হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে বলে ওসি জানিয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।