Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রথমদিনেই দর্শনার্থীদের ভিড়

দীর্ঘদিন পর খুলেছে চিড়িয়াখানা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘ সাড়ে সাত মাস বন্ধ থাকার পর খুলেছে জাতীয় চিড়িয়াখানা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে গতকাল সকাল থেকে দর্শনার্থীদের জন্য চিড়িয়াখানা খুলে দেয়া হয়েছে। প্রথম দিন বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে দর্শনার্থীদের জন্য প্রবেশ ছিল ফ্রি। দীর্ঘদিন পর চিড়িয়াখানা খোলায় প্রথমদিনেই দর্শনার্থীদের পদচারণায় চিড়িয়াখানা মুখরিত হয়ে উঠে।
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানায়, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত প্রতি মাসের প্রথম রোববার দর্শনার্থীদের জন্য প্রবেশ ফ্রি করে দেয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী গতকাল আগত সব দর্শনার্থী টিকেট ছাড়া প্রবেশের সুযোগ পেয়েছেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে মুখে মাস্ক পরা দর্শনার্থীদের ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়া হয়।
জাতীয় চিড়িয়াখানার কিউরেটর ড. আব্দুল লতিফ বলেন, স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের প্রবেশ করানো হয়। দর্শনার্থী প্রবেশের আগে তাদের শরীরের তাপমাত্রা মাপা হচ্ছে, কারো শরীরে তাপমাত্রা বেশি থাকলে তাকে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। এছাড়া মাস্ক ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। তিনি বলেন, গত সাড়ে সাত মাস চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থী প্রবেশ বন্ধ থাকায় বিভিন্ন প্রাণি ১১৫টি বাচ্চা জন্ম দিয়েছে। ছোট-বড় সব বয়সের মানুষ তা দেখে আনন্দ পাবে।
একজন স্কুল শিক্ষিকা তার পাঁচ বছরের শিশুকে নিয়ে চিড়িয়াখানায় বেড়াতে এসেছেন। অনেক দিন আগে থেকে আসার ইচ্ছা থাকলেও করোনাভাইরাসের কারণে আসতে পারেননি বলে জানান। তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন ধরে স্কুল বন্ধ। বাচ্চারা ঘরে বন্দি হয়ে আছে। এ অবস্থায় তাদের নিয়ে একটু ঘুরতে বের হয়েছি। চিড়িয়াখানায় এসেছি বাচ্চাকে পশুপাখির সঙ্গে পরিচয় করাতে। এখানে এসে আমার বাচ্চা খুবই খুশি। সে খুব আনন্দ উপভোগ করছে।
তার মতো আরও অনেকেই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চিড়িয়াখানায় বেড়াতে এসেছেন। দীর্ঘদিন শান্ত থাকা চিড়িয়াখানা দর্শনার্থীদের পদচারণায় আবারও মুখরিত হয়ে ওঠে। দর্শনার্থীদের প্রবেশ বন্ধ দীর্ঘদিন থাকায় মোটাতাজা হয়ে উঠেছে জাতীয় চিড়িয়াখানার প্রাণিরা। প্রতিদিন মানুষের হইচই ছাড়া নিজেদের মতো করে বেড়ে উঠেছে খাঁচায় বন্দি এসব পশুপাখি। দর্শনার্থীদের জন্য চিড়িয়াখানা উন্মুক্ত হওয়ায় সেখানে আবার জনমানুষের ভিড় সৃষ্টি হয়েছে।
গতকাল দর্শনার্থীদের প্রবেশে কোনো ফি নেয়া হয়নি। শহরের মানুষেরা ঘরবন্দি জীবন থেকে বের হয়ে বিনোদনের আশায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চিড়িয়াখানায় বেড়াতে যান। অনেক দিন চিড়িয়াখানার প্রাণিকুল দেখে শিশুরা বেশ আনন্দিত হয়। অনেক দিন পর শিশুরা আবারও প্রাণ খুলে দম ছাড়ার সুযোগ পেয়ে বেশ আনন্দ উপভোগ করেছে।
জানা গেছে, দেশের সবচেয়ে বড় ১৮৬ একর জায়গায় বিস্তৃত মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানা। ১৯৭৪ সাল থেকে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে আসেন হাজারও দর্শনার্থী। চিড়িয়াখানায় রয়েছে মাংসাশী ৮ প্রজাতির ৪৫টি প্রাণি, ২১ প্রজাতির বৃহৎপ্রাণি (তৃণভোজী) ২৭১টি, ২১ প্রজাতির ক্ষুদ্র স্তন্যপায়ী ২১২টি। এছাড়াও রয়েছে ১০ প্রজাতির সরীসৃপ ৭২টি, ৫৬ প্রজাতির ১১৬২টি পাখি, অ্যাকুরিয়ামে রক্ষিত মৎস্য প্রজাতিসমূহ ১৩৬ প্রজাতির ২৬২৭টি প্রাণি রয়েছে। সবমিলিয়ে রয়েছে ১৩৭টি পশু-পাখির খাঁচা। নতুন করে ১১৫টি বিভিন্ন ধরনের প্রাণির প্রজনন হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভেতরে প্রবেশ, মাস্ক পরা, প্রাণিদের বিরক্ত না করা, জটলা না করতে কর্মচারীরা প্রতিনিয়ত মাইকিং করে ঘোষণা দিলেও ছোট-বড় অনেকে সে নির্দেশনা মানছেন না। মাস্ক ছাড়া ভেতরে ঘোরাফেরা করেছেন অনেকেই। অনেকে খাঁচার নির্ধারিত সীমানা অতিক্রম করে প্রাণিদের কাছে গিয়ে নানাভাবে বিরক্ত করেছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খুলেছে-চিড়িয়াখানা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ