Inqilab Logo

শুক্রবার ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

বঙ্গবাহাদুর কাদায় পড়ে গোঙ্গাচ্ছে

প্রকাশের সময় : ১৬ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

জামালপুর জেলা সংবাদদাতা : বানের পানিতে ভেসে আসা বুনোহাতি বঙ্গবাহাদুর শিকলবন্দি অবস্থায় গরমে অস্থির হয়ে কাদা মাটিতে পড়ে গোঙ্গাচ্ছে। উদ্ধারকর্মীদের শত চেষ্টাতেও দাঁড়াতে পারছে না বঙ্গবাহাদুর। কমে গেছে খাবার গ্রহণ শক্তিও। এতে যে কোন মুহূর্তে হাতিটি প্রাণ হারানোর আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বঙ্গবাহাদুরকে স্থানান্তরের জন্য গাজিপুর সাফারি পার্ক থেকে ৩টি পোষা হাতি আনার কথা থাকলেও সেখানে মিলেনি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পোষা হাতি। তবে বুনো হাতিটি উদ্ধারের জন্য চট্টগ্রামের কাপ্তাই থেকে দুইটি এবং গাজিপুর থেকে একটি পোষা হাতি ট্রাকে তুলে আজই সরিষাবাড়ীর সোনাকান্দর গ্রামে আনা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
বন্যপ্রাণি ও প্রকৃতি সংরক্ষণ শেরপুর অঞ্চলের ফরেস্টার মামুনুর রশিদ জানান, শনিবার ও রোববার সকালে দুইবার পালাবার চেষ্টা করে হাতিটি। উদ্ধারকর্মীদের প্রচেষ্টায় হাতিটি পালাতে না পেরে সোমবার সকাল ১১টার দিকে চার পা বাঁধা অবস্থায কাদামাটিতে শুয়ে পড়েছে। হাতিটি কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ায় সোমবার সকাল থেকে সেটি আর দাঁড়াতে পারছে না বলেও তিনি জানান।
ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, দেড়মাসের অধিক সময় ধরে বুনোহাতিটি দেশের ৫টি জেলার নদী-নালা খাল-বিলসহ প্রায় ১৫শ’ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। এছাড়াও ৫-৬ বার ট্যাঙ্কুলাইজার গান দিয়ে মেটাল ডার্টে অচেতন করার ওষুধ প্রয়োগ করে উদ্ধার এবং লোহার শিকল ও মোটা রশি দিয়ে বেঁধে রাখায় সে অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে। তবে হাতিটিকে কলাগাছ, কলা, আখ, গুড়, বাঁশপাতাসহ পর্যাপ্ত খাবার এবং স্যালাইন ও উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ভিটামিনসহ টানা চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে।
বন্যপ্রাণি পরিদর্শক অসিম মল্লিক জানান, বঙ্গবাহাদুরকে বশে এনে স্থানান্তর করতে তিনটি পোষাহাতি আনার কথা থাকলেও দেশের কোথাও মিলছে না উচ্চ প্রশিক্ষিত পোষা হাতি। গাজিপুর বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক থেকে একটি এবং চট্টগ্রামের কাপ্তাই থেকে ব্যক্তি মালিকানাধীন দুইটি বিশাল দেহী পোষা হাতি আজই সরিষাবাড়ীর সোনাকান্দর গ্রামে আনা হচ্ছে।
সাবেক উপ-প্রধান বন সংরক্ষক ড. তপন কুমার দে বলেন, বঙ্গবাহাদুরকে স্থানান্তর করতে পোষাহাতি যে কোন সময় এসে পৌঁছবে। তারপর পোষাহাতি ও মাহুতের সাহায্যে বুনোহাতিটিকে প্রায় এক কিলোমিটার হাটিয়ে ডাঙায় নেয়া হবে। ডাঙায় নিয়ে হাতিটিকে ট্যাঙ্কুলাইজার গান দিয়ে মেটাল ডার্ট প্রয়োগের মাধ্যমে অচেতন করে ক্রেনের সাহায্যে ট্রাকে ওঠানো হবে। এ জন্য তারাকান্দি যমুনা সার কারখানা থেকে ক্রেন ও ট্রাক ভাড়া করে রাখা হয়েছে। বঙ্গবাহাদুরকে কোথায় রাখা হবে তা বন বিভাগের উচ্চ পর্যায়ের বিশেষজ্ঞদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলেও তিনি জানান।
উল্লেখ্য, ২৮ জুন ভারতের আসাম থেকে ভারতীয় বুনোহাতিটি বাংলাদেশে আসে। দেশের ৫টি জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরে একমাস পর ২৮ জুলাই জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে আসে হাতিটি। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার কামরাবাদ ইউনিয়নের কয়ড়া গ্রামে হাতিটিকে ট্যাঙ্কুলাইজার গান দিয়ে মেটাল ডার্টে চেতনানাশক ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে উদ্ধার করা হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বঙ্গবাহাদুর কাদায় পড়ে গোঙ্গাচ্ছে
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ