Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাসাইলে ঝিনাই নদীর ব্যাপক ভাঙন হুমকির মুখে নথখোলা ব্রিজ

প্রকাশের সময় : ১৬ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বাসাইল (টাঙ্গাইল) উপজেলা সংবাদদাতা : টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ঝিনাই নদীর পানি কমে যাওয়ায় ভাঙনের ব্যাপকতা বেড়ে গেছে। এতে নথখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এলজিইডির ১২ লাখ ৮৭ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত সম্প্রসারিত ভবনের কিছু অংশও প্রায় আড়াই লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত শহীদ মিনারটি ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে টাঙ্গাইল-বাসাইল সড়কে ঝিনাই নদীর উপর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নথখোলা ব্রিজটিও। এ ব্রিজটি ধ্বসে পড়লে টাঙ্গাইলের পূর্বাঞ্চলের সাথে জেলা শহরের কয়েকটি উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।
এলাকার সর্বস্তরের মানুষ ভাঙনরোধের দাবিতে সোমবার (১৫ আগস্ট) সকালে বিশাল মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা প্রায় ১ ঘণ্টা টাঙ্গাইল-সখীপুর ভায়া বাসাইল সড়ক অবরোধ করে রাখে। এতে সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে ভোগান্তিতে পরে এ সড়কে যাতায়াতকৃত হাজারও যাত্রী। খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে এসে সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি প্রদানপূর্বক উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ সময় টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শাহ জাহান সিরাজ ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন শেষে স্কুল ও ব্রিজ রক্ষার জন্য অনতিবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।
বাসাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী শহীদুল ইসলাম, ইউএনও মিলিয়া শারমিন, এসি ল্যান্ড মোহাম্মদ নাজমুল আহসান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রাশেদা সুলতানা রুবি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সরকারিভাবে এখনও ভাঙনরোধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ইউএনও মিলিয়া শারমিন বিদ্যালয় চত্বরে স্থাপিত শহীদ মিনারটি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ায় দু’একদিনের মধ্যেই নতুন করে শহীদ মিনার প্রতিস্থাপনের প্রতিশ্রুতি দেন। পরে এলাকাবাসী সড়ক অবরোধ তুলে নেয়। প্রতিবছর বর্ষাশুরু হলেই উপজেলার অন্যতম ঐতিহ্যবাহী (নথখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়) এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি শুরু হয় ভাঙনের খেলা। আর সে সময়ই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কিছুটা টনক নড়ে । বিদ্যালয়টি স্থায়ীভাবে রক্ষার ব্যাপারে বছরের অন্য কোন সময় ব্যবস্থা গ্রহণের কোন উদ্যোগ নেয়া হয় না। বরং সারা বছর নদী ড্রেজিংয়ের নামে বিদ্যালয় ও ব্রিজের নিকটবর্তী এলাকায় প্রভাবশালী বালু খেকুরা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় এ ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
তারা জানান, সোমবার (১৫ আগস্ট) সকালে নথখোলা ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় হঠাৎ করে ঝিনাই নদীর তীব্র ভাঙন শুরু হয়। ভাঙনের ফলে নথখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের নিচের মাটি সরে গিয়ে শহীদ মিনারটি সম্পূর্ণভাবে এবং বিদ্যালয়ের কিছু অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এর পাশেই রয়েছে টাঙ্গাইল-বাসাইল সড়কের নথখোলা ব্রিজ। এই মুহূর্তে ভাঙন রোধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে বিদ্যালয়টিও দু’এক দিনের মধ্যেই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে বলে আশংকা করছেন এলাকাবাসী। এছাড়া নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে নথখোলা ব্রিজটিও। ব্রিজটি ভেঙ্গে পড়লে টাঙ্গাইলের পূর্বাঞ্চলের সাথে বাসাইল ও সখীপুর উপজেলাসহ মির্জাপুর, কালিহাতী, ঘাটাইল, ময়মনসিংহের ভালুকা, ফুলবাড়ি উপজেলার কিছু অংশের লাখ লাখ মানুষের টাঙ্গাইল জেলা সদরের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। সরেজমিন পরিদর্শনকালে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, গত শুকনো মৌসুমে নদী খননের নামে উক্ত বিদ্যালয় ও ব্রিজের অতি নিকটে ব্যাপক ড্রেজিং-এর কারণে বর্তমান পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের গরিমসি বাদ দিয়ে এই মুহূর্তে ভাঙন রোধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে বিদ্যালয় ও ব্রিজটি দু’এক দিনের মধ্যেই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশংকা করছেন এলাকাবাসী।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাসাইলে ঝিনাই নদীর ব্যাপক ভাঙন হুমকির মুখে নথখোলা ব্রিজ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ