পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গোপালগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা : টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪১তম শাহাদতবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গতকাল (সোমবার) সকাল ১০টা ১৫ মিনিটের দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী ও শোক দিবস উপলক্ষে তাঁর সমাধি সৌধের বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর তিনি কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় তিন বাহিনীর পক্ষ থেকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। বিউগলে বাজানো হয় করুণ সুর। স্বেত-শুভ্র কালো কারুকার্য শাড়ি পরিহিত প্রধানমন্ত্রীকে শোকার্ত দেখাচ্ছিল। বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধে সৃষ্টি হয় শোকাবহ পরিবেশ।
পরে প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানাকে সাথে নিয়ে ফাতেহা পাঠ ও বঙ্গবন্ধু বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবসহ ১৫ আগস্টের শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করেন।
রাষ্ট্রীয় এসব কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর বোন অশ্রুসজল হয়ে পড়েন। তাদের চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়ে শোকাশ্রু।
এরপর দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শোক দিবসের শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী ভাতৃপ্রতীম সংগঠনের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
এ সময় ৩ বাহিনীর প্রধান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, দলের সাধারন সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি, কাজী জাফর উল্যাহ, উপদেষ্টা ম-লীর সদস্য বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহম্মেদ, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খোন্দকার মোশাররফ হোসেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল, গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন, রেড ক্রিসেন্টের সাবেক চেয়ারম্যান শিক্ষানুরাগী শেখ কবির হোসেন, বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম, মহিলা ও শিশু-বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, ডাক, তার ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, যুবক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, পুলিশের আইজি শহিদুল হক, র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহম্মেদ, আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক, শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ, কামরুজ্জামান লিটন, আহম্মেদ হোসেন, শেখ হেলাল উদ্দিনসহ পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা সমাি সৌধে উপস্থিত ছিলেন।
সকাল ১১টায় সমাধি সৌধ কমপ্লেক্সে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জেলা প্রশাসন আয়োজিত মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ, পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা শরিক হন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা টুঙ্গিপাড়া বঙ্গবন্ধু ভবনে বসে মিলাদ মাহফিলে মোনাজাতে অংশ নেন।
দুপুর সাড়ে ১২টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হেলিকপ্টার যোগে ঢাকার উদ্দেশ্যে টুঙ্গিপাড়া ত্যাগ করেন।
মসজিদ মন্দিরে প্রার্থনা
বঙ্গবন্ধুর ৪১তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে গোপালগঞ্জ, টুঙ্গিপাড়া, কোটালীপাড়া, মুকসুদপুর ও কাশিয়ানী উপজেলার মসজিদে সমজিদে দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া গোপালগঞ্জ কেন্দ্রীয় সার্বজনীন কালিবাড়ি, লেকপাড় লোকনাথ মন্দিরসহ জেলার সব মন্দির ও গীর্জায় বঙ্গবন্ধুর আত্মার শান্তি কামনায় বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।
তোরণ
শোক দিবস উপলক্ষে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া পর্যন্ত ৭০ কি.মি. সড়কে কালো কাপড় দিয়ে অসংখ্য তোরণ নির্মাণ করে শোকাবহ পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে। গোপালগঞ্জ থেকে টুঙ্গিপাড়া পর্যন্ত পথে পথে কালো পতাকা টানানো হয়েছে। টুঙ্গিপাড়ার সর্বত্র কালো পতাকা উড়ছে। বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধ এলাকায় শোকের চিহ্ন কালো পতাকা টানানো হয়েছে।
টুঙ্গিপাড়ায় শোকার্ত মানুষের ঢল
প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়া ত্যাগ করার পর বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধে শোকার্ত মানুষের ঢল নামে। তারা শোকের চিহ্ন কলো ব্যাচ বুকে ধারণ করে পুষ্পস্তবক, ফুলের তোড়া ও ফুল নিয়ে সমাধি সৌধ কমপ্লেক্সে আসেন। সমাধি সৌধের বেদীতে ফুল দিয়ে তাঁর জন্য দোয়া ও মোনাজাত করেন। ৭৫-এর ১৫ আগস্টের কথা স্মরণ করে তারা বঙ্গবন্ধুর জন্য কাঁদেন। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত আওয়ামী লীগ, সহযোগী, ভাতৃপ্রতীম, শ্রমজীবী, পেশাজীবী, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী শোকার্ত পরিবেশে বঙ্গবন্ধুর প্রতি বিন¤্র শ্রদ্ধা জানান। এছাড়া বিভিন্ন বয়সের মানুষ বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে এসে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। দিনব্যাপী চলে শ্রদ্ধা নিবেদন। ফুলে ফুলে ছেয়ে যায় বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধ।
গরিবদের মধ্যে খাবার বিতরণ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪১তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে গোপালগঞ্জ জেলার ৬৮টি ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে, বিভিন্ন গ্রামে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল শেষে গরিব মানুষের মধ্যে খাবার বিতরণ করা হয়। এছাড়া গোপালগঞ্জ, মুকসুদপুর, কোটালীপাড়া পৌর এলাকায় বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, বণিক সমিতি, ব্যবসায়ী সমিতির উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুর জন্য দোয়া ও মোনাজাত শেষে খাবার বিতরণ করা হয়।
বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে প্রধানমন্ত্রী
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪১তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে গতকাল সোমবার বাদ আসর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে মহিলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এক মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অংশগ্রহণ করেন।
বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা, প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ হোসেন পুতুল এবং তাঁর স্বামী খন্দকার মাসরুর হোসেইন, শেখ রেহানার পুত্র রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি এবং তার স্ত্রী পেপি সিদ্দিক এবং ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসসহ পরিবার-পরিজন এবং আত্মীয়-স্বজন মিলাদে উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া আওয়ামী লীগ সভাপতিম-লীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পংকজ দেবনাথ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ, মহিলা আওয়ামী লীগ এবং যুব মহিলা লীগের নেতাকর্মীরা মিলাদে অংশগ্রহণ করেন।
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা শহীদ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব এবং পরিবারের সকল সদস্যের রুহের মাগফিরাত ও আত্মার শান্তি কামনা করে মিলাদের পর বিশেষ মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতে ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় নিহতদের রুহের মাগফিরাত কামনা করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।