পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কুয়েত আদালতে লক্ষ্মীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের বিচার শুরু হয়েছে। ২২ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিচার শুরু হয়। মানব পাচার ও অবৈধভাবে মুদ্রা পাচারের অভিযোগে অভিযুক্ত কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন কুয়েতের এমপি সাদাউন হামাদ। দেশটির আরবি দৈনিক আল রাই অনলাইনসহ অন্য সব ইংরেজি দৈনিকে খবরটি প্রকাশ করা হয়েছে। প্রকাশিত রিপোর্টে জানানো হয়েছে কাজী পাপুলের কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে তাকে অনৈতিকভাবে ব্যবসা পরিচালনায় মদদ দেয়ার অভিযোগ রয়েছে কুয়েতের দুই সংসদ সদস্য সাদাউন হামাদ ও সালাহ খুরশিদের বিরুদ্ধে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় সালাহ খুরশিদ গত বৃহস্পতিবার আদালতে উপস্থিত হতে পারেননি। আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন। আগামী ৫ নভেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন তাকে আদালতে হাজির করতে কুয়েত পুলিশের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। পাপুলকাÐে কুয়েতের দুই সংসদ সদস্য ছাড়াও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী আন্ডার সেক্রেটারি (বরখাস্ত) মেজর জেনারেল শেখ মাজন আল-জারাহর সম্পৃক্ততার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পেয়েছে মামলাটির তদন্তের দায়িত্বে নিয়োজিত ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট সিআইডি। গত ১৭ সেপ্টেম্বর মামলার প্রথম দিনের শুনানিতে কাজী শহিদ ইসলাম অবৈধ মুদ্রা পাচার ও ঘুষ দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন।
কুয়েতের দৈনিক পত্রিকাগুলোর খবরে বলা হয় এমপি সাদাউন হামাদ ও সালাহ খুরশিদ এবং মেজর জেনারেল শেখ মাজন আল-জারাহকে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের এমপি পাপুল চেনেন না বলেও আদালতে দাবি করেছিলেন।
লক্ষ্মীপুর-২ আসন থেকে নির্বাচিত স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য কাজি শহিদ ইসলাম কুয়েতের রেসিডেন্ট পারমিটধারী একজন ব্যবসায়ীও। তার অবৈধ ব্যবসা এবং জাল-জালিয়াতির অভিযোগ ওঠে চলতি বছরের ফেব্রæয়ারি মাসে। তখন তাকে আটকের জন্য কুয়েত সিআইডি অভিযানও চালিয়েছিল। তখন তার দুই সহযোগী গোয়েন্দা জালে আটকা পড়লে তিনি ঢাকায় পালিয়ে নিজেকে রক্ষায় সক্ষম হন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। পরবর্তীতে তিনি কুয়েত সিটিতে গেলে গত ৬ জুন সিআইডি টিম তাকে তাদের হেফাজতে নিয়ে নেয়। ১৪ জুন তাকে আদালতে উপস্থাপন করলে বিচারক তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। সেই থেকে তিনি কারাগারেই আছেন। এর মধ্যে তিনি কয়েক দফায় জামিনের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। দীর্ঘ সময় তিনি রিমান্ডে পাপুল তার সহযোগী দেশি-বিদেশি রাগব-বোয়ালদের বিষয়ে বিস্ফোরক তথ্য দিয়েছেন।
পাপুলের দেয়া তথ্যের স‚ত্র ধরে কুয়েত পুলিশ ডজনখানেক ব্যাক্তিকে গ্রেফতার করেন। কুয়েত আদালত ইতোমধ্যেই পাপুলের ব্যাংকের একাউন্ট ফ্রিজ করেছেন।
২০১৮ সালের নির্বাচনে লক্ষ্মীপুরপুর-২ আসনে পাপুল স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেও তিনি শাসকদলে এতোটাই প্রভাবশালী যে ভোটে তার প্রতিপক্ষ মহাজোট প্রার্থীকে তিনি কৌশলে নিষ্ক্রিয় করে দিয়েছিলেন। জাতীয় পার্টির সাবেক ওই এমপি মো. নোমানকে নির্বাচনের সময় ঢাকায় পালিয়ে থাকতে বাধ্য করেন। পাপুুল শুধু এলাকায় নয়, কুয়েত আওয়ামী লীগেরও প্রভাবশালী সদস্য, তার আর্থিক পৃষ্টপোষকতাই মূখ্য। এর জেরেই তিনি তার স্ত্রী সেলিনা ইসলামকে আওয়ামী লীগের মনোনীত সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন নিয়ে এমপি বানাতে সক্ষম হন।
সাধারণ শ্রমিক হিসাবে কুয়েত গিয়ে বিশাল সাম্প্রাজ্য গড়ে তোলেন। তার মালিকানাধীন মারাফি কুয়েতিয়া কোম্পানি পরিচ্ছন্নতাকর্মী নেয়ার কাজ করলেও কুয়েতে অন্যান্য ব্যবসার কাজও বাগিয়েছিলেন পাপুল। এর আগে গালফ নিউজের খবরে বলা হয়েছিল, ‘জেনারেল ট্রেডিং অ্যান্ড কনট্রাক্টিং’ নামক লাইসেন্স ছিল পাপুলের। যার মাধ্যমে শিশুদের খেলনা থেকে শুরু করে অ্যানটিক কার্পেটের ব্যবসাও তিনি করতে পারেন। পাপুল ও তার কোম্পানির ব্যাংক হিসাব ইতোমধ্যে জব্দ করেছে কুয়েত কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশেও দুর্নীতি দমন কমিশন তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। তার স্ত্রী, কন্যা, শ্যালিকার ব্যাংক হিসেব ফ্রিজ করেছে। তাদের বিদেশে যাওয়ার ওপর বিধিনিষেধ জারি করেছে।
ঢাকা ও কুয়েতের ক‚টনৈতিক স‚ত্রগুলো বলছে, দেশটির আইন অনুযায়ী কুয়েতে অর্থ ও মানবাপাচার বড় অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়। কুয়েতে অভিযোগ প্রমাণিত হলে কি সাজা হবে পাপুলের? কুয়েতের ২০১৭ সালের এক মামলার রায়ে বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়। দেশটির আইন অনুযায়ী অর্থপাচার প্রমাণিত হলে ৭ বছরের সাজা হবে পাপুলের। সেই সাথে মানবপাচার প্রমাণিত হলে সাজা হবে ১৫ বছর। আর সেক্সুয়াল মানবপাচার প্রমাণিত হলে সাজা হবে যাবজ্জীবন কারাদন্ড।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।