পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গভীর নিম্নচাপের কারণে উত্তাল হয়ে উঠেছে বঙ্গোপসাগর। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সঙ্কেত দেখানো হচ্ছে। গভীর নিম্নচাপের সাথে মৌসুমী বায়ুর সক্রিয় প্রভাবে গতকাল বৃহস্পতিবার দেশজুড়ে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকে। কার্তিক মাসের প্রথম সপ্তাহ তথা হেমন্তে এসেই অকালে বর্ষাকালীন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয় বরিশাল বিভাগের খেপুপাড়ায় ২৭৯ মিলিমিটার। থেমে থেমে বর্ষণের সঙ্গে দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে অনেক জায়গায়। দেশের সমুদ্র উপক‚ল-চর-দ্বীপাঞ্চলে গুমোট আবহাওয়া বিরাজ করছে।
পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি অতি দ্রæত শক্তি সঞ্চয় ও ঘনীভ‚ত হয়ে গতকাল দুপুর নাগাদ নিম্নচাপ এবং বিকেলে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়। এর প্রভাবে বুধবার থেকেই দেশের অনেক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি বর্ষণ, কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আজ শুক্রবারও দেশের অনেক জায়গায় মাঝারি থেকে ভারী ও অতি ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।
গভীর নিম্নচাপ ও মৌসুমী বায়ুর দ্বিমুখী প্রভাবে গতকাল সারাদেশ বর্ষাকালের মতো বৃষ্টিপাতে সিক্ত হয়েছে। এ সময় ঢাকায় ২৭, চট্টগ্রামে ১০২, সিলেটে ৯৪, রংপুরে ১০, ঈশ^রদীতে ৩৬, খুলনায় ৩৬, বরিশালে ৮৪, নেত্রকোণায় ৪৭, হাতিয়ায় ১৫৭, কক্সবাজারে ১৩৫, পটুয়াখালীতে ১৯৪ মিলিমিটারসহ সর্বত্র কমবেশি বৃষ্টি ঝরেছে।
বৃষ্টিপাতের কারণে তাপমাত্রা কমে গেছে, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল দিনাজপুরে ৩৪.৪ এবং সর্বনিম্ন তেঁতুলিয়ায় ২১.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকার তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ২৭.৭ এবং সর্বনিম্ন ২৪.৯ ডিগ্রি সে.।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, দেশের বেশিরভাগ স্থানে অস্থায়ী দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণের সতর্কতা দেয়া হয়েছে। সারাদেশে তাপমাত্রা এক থেকে ৩ ডিগ্রি সে. হ্রাস পেতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের প্রবণতা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পেতে পারে।
এদিকে বৃষ্টিবাহী দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের পশ্চিমাঞ্চল থেকে বিদায় নিয়েছে। পর্যায়ক্রমে দেশের অবশিষ্ট অঞ্চল থেকেও বিদায় নেবে। বর্তমানে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে মৌসুমী বায়ু সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে। আবহাওয়া বিভাগের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে চলতি অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহে মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশ থেকে বিদায় নেয়ার আভাস ছিল। এ বছর মৌসুমী বায়ু দীর্ঘস্থায়ী সক্রিয় হয়ে জেঁকে বসে।
বন্দরে ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সঙ্কেত
আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিনে আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানান, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও এর সংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি আরও শক্তি সঞ্চয় করেছে। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর ও ঘনীভ‚ত হয়ে একই এলাকায় গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এর সর্বশেষ অবস্থান ১৯.৫ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৬.৫ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। গভীর নিম্নচাপটি গতকাল বিকেলে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৪৫ কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৭৫ কি.মি. দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫০৫ কি.মি. দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।
এটি আরও ঘনীভ‚ত হয়ে উত্তর দিকে অগ্রসর হতে পারে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কি.মি. মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘন্টায় ৫০ কি.মি., যা দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের কাছাকাছি সাগর উত্তাল রয়েছে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে। সেই সাথে ট্রলার-নৌযানসমূহকে গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।
পাউবো’র বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র’র নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভ‚ঁইয়া গভীর নিম্নচাপ পরিস্থিতি সম্পর্কে গতকাল বিশেষ বুলেটিনে জানান, গভীর নিম্নচাপের কারণে ২২ ও ২৩ অক্টোবর দেশের উপক‚লীয় অঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে এবং ২২ থেকে ২৪ অক্টোবর দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও এর সংলগ্ন ভারতের ত্রিপুরা, আসাম ও মেঘালয়ে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
এর ফলে সুরমা, কুশিয়ারা, মনু, খোয়াই, গোমতী, মুহুরীসহ উপক‚লীয় অঞ্চলের নদ-নদীসমূহের পানির সমতল দ্রæত বৃদ্ধি পেতে পারে। তাছাড়া গভীর নি¤œচাপের কারণে উপকূলীয় অঞ্চলে স্বাভাবিকের চেয়ে উঁচু মাত্রায় জোয়ার হতে পারে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।