Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সেই নবজাতক সঙ্কটাপন্ন

জীবিত শিশুকে মৃত ঘোষণা সম্পূর্ণভাবে আমাদের ব্যর্থতা : ঢামেক পরিচালক

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২১ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০০ এএম

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মৃত ঘোষণার পর কবরস্থানে দাফনের সময় জীবিত হওয়া সেই নবজাতকের অবস্থা এখন আশঙ্কাজনক। নবজাতকটি পূর্ণ সময়ের অনেক আগেই জন্ম হয়। বর্তমানে সে এনআইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তবে যেকোনো সময় তার অবস্থা খারাপ হতে পারে। গতকাল চিকিৎসকরা এমন তথ্য জানিয়েছেন।

এদিকে, জীবিত এক নবজাতককে হাসপাতাল মৃত ঘোষণার ঘটনার ব্যাপারে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ নিজেদের ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়ার পর গতকাল ঢামেক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন বলেন, এ ব্যর্থতা পুরোপুরি আমাদের প্রতিষ্ঠানের। আমাদের চিকিৎসক ও নার্সদের বাচ্চাটাকে রক্ষা করা উচিত ছিল। আমরা এটা মিস করে গেছি। এ ঘটনায় ব্যর্থতার কথা স্বীকার করলেও, চিকিৎসক ও নার্সদের কর্তব্যে কোনো অবহেলা ছিল না বলে দাবি করেন তিনি।

তিনি বলেন, গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর বাচ্চা ও তার মাকে বাঁচানোর জন্য কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সরা চেষ্টা করে। পরে যা ঘটেছিল তা অনিচ্ছাকৃত। দীর্ঘক্ষণ শিশুটির বেঁচে থাকার কোনো লক্ষণই ছিল না। শিশুটির বেঁচে থাকা অস্বাভাবিক এবং বিরল ঘটনা বলে জানান তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে নাসির উদ্দিন বলেন, শিশুটি বেঁচে ছিল। সে ফিরে এসেছে আমাদের মাঝে। এখনও সে বেঁচে আছে। এখানেই ব্যর্থতা, কোনো সন্দেহ নেই। তবে, অবহেলার কারণে এটি ঘটেনি বলে তদন্ত কমিটি মনে করে। তারা শিশুটিকে ক্লিনিক্যালি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের দায়বদ্ধতা অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। তবে, এ সম্পর্কে তিনি বিস্তারিত কিছু উল্লেখ করেননি।ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসির বলেন, তদন্ত কমিটি ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়াতে কিছু সুপারিশ করেছে এবং সেসব সুপারিশ মেনে চলা হবে।

ঢামেক নিওনেটোলজি বিভাগের প্রধান ও তদন্ত কমিটির প্রধান ডা. মনীষা ব্যানার্জি জানান, শিশুর অবস্থা এখনও সংকটাপন্ন। তিনি বলেন, শিশুটি বেঁচে আছে, এটা অলৌকিক। বেঁচে গেলে, আরও অলৌকিক ব্যাপার হবে। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।

উল্লেখ্য, গত ১৩ অক্টোবর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ১১০ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি হন গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মালেঙ্গা গ্রামের সন্তান সম্ভাবনা গৃহবধূ শাহিনুর। গত শুক্রবার ভোরের দিকে স্বাভাবিকভাবে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন তিনি। গৃহবধূ শাহিনুরের স্বামীর নাম ইয়াসিন মোল্লা জানান, জন্মের পরপরই ওই নবজাতককে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। পরে ওই নবজাতককে একটি প্যাকেটে ভরে তার বাবা ইয়াসিন মোল্লার কাছে হস্তান্তর করে চিকিৎসক বলেন, নবজাতকটি মৃতই জন্ম নিয়েছে। পরে ওই প্যাকেটে থাকা নবজাতকটিকে নিয়ে ইয়াসিন আজিমপুর কবরস্থানে যান। সেখানে অর্থনৈতিক কারণে তাকে দাফন করতে না পারায় একপর্যায়ে ইয়াসিন নবজাতকটিকে নিয়ে বসিলা কবরস্থানে যান। সেখানের লোকজন তাকে দাফনের জন্য প্যাকেট খুললে নবজাতকটি নড়ে ওঠে কান্না করে। এ সময় চমকে যান ইয়াসিন। পরে তিনি দ্রæত নবজাতককে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে যান। বর্তমানে নবজাতকটি ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গতকাল এই নবজাতকের নাম রাখা হয়েছে মরিয়ম।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নবজাতক সঙ্কটাপন্ন

২১ অক্টোবর, ২০২০
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ