পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : আজ ১৫ আগস্ট। ১৯৪৬ সালের এই দিনে জন্মগ্রহণ করেন বিএনপি চেয়ারপার্সন, দেশের সাবেক প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
দেশজুড়ে বন্যা, গুম-খুন আর দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের কথা ভেবে এবার নতুন ইতিহাসের সৃষ্টি করতে যাচ্ছেন তিনি। প্রতি বছর বিএনপি নেতা-কর্মীরা দলীয় নেত্রীর জন্মদিনে কেক কেটে দেশ-বিদেশে অনুষ্ঠান পালন করে। এবার তা না করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন দলীয় প্রধান বেগম খালেদা জিয়া। তবে তারা বিভিন্ন মসজিদে দোয়া ও মন্দিরে প্রার্থনা সভা করবে বলে জানিয়েছে।
১৯৪৬ সালে জন্মগ্রহণকারী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বয়স হচ্ছে ৭০ বছর। ১৫ আগস্ট তিনি ৭১ বছরে পা দেবেন। তিন বোন দুই ভাইয়ের মধ্যে খালেদা জিয়া তৃতীয়। বাবা ইস্কান্দর মজুমদার ও মা বেগম তৈয়বা মজুমদার। সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানের সঙ্গে ১৯৬০ সালে খালেদা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। পঁচাত্তরে পট-পরিবর্তনের পর প্রথমে সামরিক আইন প্রশাসক এবং পরে প্রেসিডেন্ট হন জিয়াউর রহমান।
১৯৮১ সালে ৩০ মে প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় জিয়াউর রহমান শহীদ হলে রাজনীতিতে পা রাখেন খালেদা জিয়া। প্রথমে দলের ভাইস-চেয়ারম্যান এবং তিন বছর পর চেয়ারপার্সন নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৯০ গণতন্ত্র উদ্ধারের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য জাতি তাকে আপোষহীন নেত্রী হিসেবে খেতাব দেয়।
১৯৯১ সালে সংসদ নির্বাচনে বিএনপি বিজয়ী হলে দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হবার গৌরব অর্জন করেন। সংবিধান সংশোধনের জন্য ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন তিনি। ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট বিজয়ী হলে পুনরায় তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন খালেদা জিয়া। ২০০৮ সালে সেনাসমর্থিত সরকারের অধীনে নির্বাচনে হারের পর সংসদে বিরোধীদলীয় নেতার দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। ২০১৪ সালে ভোটবিহীন নির্বাচনে অংশ না নিয়ে খালেদা জিয়া আট বছর ধরে ক্ষমতার বাইরে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে দুই ডজন মামলাসহ পরিবারের সদস্যরা প্রবাস জীবন যাপন করছে। তার দলের সকল স্তরের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে লাখো মামলার খড়গ নেমে এসেছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার দিবসে জন্মদিন উদযাপন না করতে খালেদা জিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে আওয়ামী লীগ। দলটির নেতারা জানিয়েছে, কারো দাবি বা চাপের মুখে নয়, দেশের বৈরী পরিবেশ, প্রকৃতিক দুর্যোগসহ গুম-খুন রক্তের দাগ পেরিয়ে তিনি জন্মদিন পালন করতে চান না। অতীতের দুই দশক ১৫ আগস্টের প্রথম প্রহরে নেতা-কর্মীদের নিয়ে কেক কেটে নিজের জন্মদিন উদযাপন করে আসছেন বিএনপি নেতা-কর্মীরা। তবে এবার কর্মসূচি থাকছে না। এবার কর্মসূচী না থাকা প্রসঙ্গে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ইনকিলাবকে বলেন, উত্তরাঞ্চল-মধ্যাঞ্চলে ব্যাপক বন্যায় মানুষের দুর্দশা, সর্বত্র গুম-খুনে মানুষের লাশ, দলের নেতা-কর্মীদের ওপর নিপীড়ন নির্যাতনের সার্বিক অবস্থার কথা বিবেচনা করেই ম্যাডামের জন্মদিনে এবার আমরা কেক কাটার অনুষ্ঠান করছি না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের একটি বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি। তার লক্ষ লক্ষ নেতা-কর্মী-সমর্থক-ভক্ত রয়েছে। এটা তাদের অনুভূতির ব্যাপার। বেগম জিয়া নিজে থেকে কখনও জন্মদিন পালন করেন না।
তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এবার জন্ম দিনের চেয়ে মানুষের জন্য যে কাজ করা দরকার সেদিকেই খেয়াল দিয়েছে। তবে কাউকে খুশি করতে বা কোন চাপের মুখে এ সিদ্ধান্ত নয়।
চেয়ারপার্সনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান সাংবাদিকদের বলেন, এখন পর্যন্ত যতটুকু জানি, বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে সোমবার ১৫ আগস্ট কেক কাটার কোনো অনুষ্ঠান নেই। ম্যাডাম প্রতিদিনের মতো কালকেও কার্যালয়ে আসার কথা রয়েছে।
খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে, গুলশানের ক্যাফেতে সন্ত্রাসী হামলাসহ সারাদেশে নানা ঘটনাবলীর পরিপ্রেক্ষিতে কেক কাটার অনুষ্ঠান না করার নির্দেশ দিয়েছেন খালেদা জিয়া। দলের এই নির্দেশনা ইতিমধ্যে বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনগুলোকে মৌখিকভাবে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
২০১৫ সালের ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়া জন্মদিন পালন করেন ৭০ পাউন্ডের কেক কেটে। যুবদল, মহিলাদল ও ছাত্রদলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা এবছর কেক কাটার কোনো কর্মসূচি রাখেননি। শনিবার তারা বিভিন্ন মসজিদে দোয়া ও মন্দিরে প্রার্থনা সভা করবে বলে জানিয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।