Inqilab Logo

সোমবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

ডানা মেলল পায়রা

প্রকাশের সময় : ১৪ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৪২ পিএম, ১৩ আগস্ট, ২০১৬

দেশের তৃতীয় সমুদ্রবন্দর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
বিশেষ সংবাদদাতা : ‘ডানা’ মেলল পায়রা। বাংলাদেশের তৃতীয় বাণিজ্যিক সমুদ্র বন্দর হিসেবে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করেছে পায়রা। পদ্মা সেতু নির্মাণের পর এই সমুদ্র বন্দরটি দক্ষিণ জনপদের মানুষের জন্য নব দিগন্তের উন্মোচন করলো। নতুন এ বন্দর ঘিরে অর্থনৈতিক কর্মচাঞ্চল্য গড়ে উঠবে। শুধু দক্ষিণাঞ্চল না, সমগ্র বাংলাদেশ এমনকি দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের জন্যও একটা শুভ সূচনা। গতকাল শনিবার ঢাকায় গণভবনে বসে ডিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পটুয়াখালীর পায়রা বন্দরে বাণিজ্যেক জাহাজ থেকে পণ্য খালাস কার্যক্রম উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের সময় বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, পায়রা বন্দরের নামটা আমি দিয়েছি। পায়রা নামটাও খুব সুন্দর। পায়রা শান্তির প্রতীক। বন্দরের পাশাপাশি ওই অঞ্চলে বিদ্যুৎ কেন্দ্র, নৌবাহিনীর ঘাঁটি ও সেনানিবাস স্থাপনের কথাও জানান সরকার প্রধান।
প্রধানমন্ত্রী গণভবনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আরো ৪টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে দেশের প্রথম ৮ লেন মহাসড়ক যাত্রাবাড়ী-কাঁচপুর মহাসড়ক উদ্বোধন এবং যাত্রাবাড়ী ইন্টারসেকশন থেকে (ইকুরিয়া-বাবুবাজার লিংকসহ) মাওয়া এবং পাঁচ্চর-ভাংগা মহাসড়ক উভয়দিকে ধীরগতির যানবাহনের জন্য পৃথক সার্ভিস লেনসহ ৪ লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প (পদ্মা সেতু লিংক রোড)’-এর নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রী একইসঙ্গে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড-এর আওতাধীন ছয়টি উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়ন সম্পন্নের এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর বাস্তবায়নাধীন সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন’ (কম্পিউটার এবং ভাষা শিক্ষণ ল্যাব) শীর্ষক প্রকল্পের কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মুহ্ম্মাদ শফিউল হক, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইমরান আহমেদ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্যবৃন্দ, সরকারের সামরিক ও বেসামরিক পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, কূটনৈতিক মিশনের সদস্যবৃন্দ এবং বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতগণ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে তার সরকার ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজের মাধ্যমে দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করতে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে। তিনি ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ নাগাদ উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ও স্বপ্ন বাস্তবায়নের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশকে দরিদ্রমুক্ত করবো, বাংলার দুখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাবো।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু তাঁর সারাজীবন দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাবার জন্য সংগ্রাম করেছেন। এখন তাঁর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা আমাদের দায়িত্ব। তাই তাঁর সরকার উন্নয়নমূলক কাজের মাধ্যমে দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করতে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, আমার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শোষণ-বঞ্চনা থেকে মানুষকে মুক্ত করতে এবং মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করতে আজীবন সংগ্রাম করেছেন। স্বাধীনতার পর তিনি দেশ গড়ার কাজে হাত দিয়েছিলেন। মাত্র নয় মাসের মাথায় তিনি দেশকে সংবিধান উপহার দেন।
দেশের অর্থনীতিকে মজবুত করার ব্যাপারেও উদ্যোগ নিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশের হাল ধরেছিলেন তিনি। বাংলার মানুষের ভালো চেয়েছিলেন তিনি। সেটাই আমরা এগিয়ে নিয়ে চলেছি। এজন্য যখনই কোনো ভালো কাজ করি আমি অনুভব করি, আমার বাবার আত্মা শান্তি পাবে।
পায়রা বন্দরের কার্যক্রম উদ্বোধনের সময় শেখ হাসিনা বলেন, বিভিন্ন সময় দক্ষিণাঞ্চল সফর করার সময় ওই অঞ্চলের সম্ভাবনার বিষয়টি নজরে আসার পর পায়রা বন্দর নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তিনি বলেন, পায়রা বন্দরের নামটা আমি দিয়েছি। পায়রা নামটাও খুব সুন্দর। পায়রা শান্তির প্রতীক। তিনি আরও বলেন, সেখানে জাহাজ নির্মাণ শিল্পসহ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে উঠবে। পরিকল্পনা আছে, রেল যোগাযোগও পায়রা বন্দর পর্যন্ত নিয়ে যাব। এই সমুদ্র বন্দরটি ব্যবহারে প্রতিবেশী দেশ ভারতেরও আগ্রহের কথাও জানান শেখ হাসিনা, যা থেকে বাংলাদেশও উপকৃত হবে। উত্তরে আসামের করিমগঞ্জ পর্যন্ত নৌপরিবহনের সুযোগ সৃষ্টি করা যাবে। যেটা ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে শুধু বাংলাদেশ না, আমাদের প্রতিবেশীর সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগ সৃষ্টি হবে। ভবিষ্যতে পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর হবে বলে জানান তিনি।
প্রকল্পের কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ভিডিও কনফারেন্সে গণভবনের অনুষ্ঠানে যুক্ত হন। ভিডিও কনফারেন্সে স্থানীয় নেতারা ‘অবহেলিত’ দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ঘিরে নিজেদের আশার কথা জানান। প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের সময় নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান এবং পায়রা বন্দরের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ক্যাপ্টেন মোঃ সাইদুর রহমান কলাপাড়াস্থ পায়রা বন্দরে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেজর (অব:) রফিকুল ইসলাম (অব:) বীর উত্তম, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ, সংসদ সদস্য মোঃ মাহবুবুর রহমান তালুকদার, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাহবুব আহমেদ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন, এনবিআর-এর চেয়ারম্যান মোঃ নজিবুর রহমান, পররাষ্ট্র সচিব মোঃ শহীদুল হক এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবদুল মালেকও উপস্থিত ছিলেন। পায়রা বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম চালু করাকে কেন্দ্র করে পায়রা বন্দর এলাকা ঘিরে এক বর্ণিলসাজে সাজানো হয়। বিশেষ করে কলাপাড়া, রামনাবাদসহ আশপাশ এলাকার মানুষের মধ্যে ছিল ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা। সবমিলে পায়রা বন্দর এলাকায় এখন সাজ সাজ রব।
পদ্মা সেতুর পাথর নিয়ে আসা এমভি ফরচুন বার্ড থেকে পণ্য খালাসের মধ্য দিয়ে পায়রার যাত্রা শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী এ সময় পায়রা বন্দরকে ঘিরে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে সরকারের ব্যাপক উন্নয়ন পরিকল্পনার উল্লেখ করে বলেন, ‘ফরচুন জাহাজ আমাদের জন্য ফরচুন নিয়ে এসেছে। পাথর সরবরাহকারী চীনা কোম্পানির প্রতিনিধিও পায়রা বন্দরে বসে ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে সংক্ষিপ্ত অভিব্যক্তি ব্যক্ত করেন- স্থানীয় বালিয়াতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমাযুন কবির এবং চিনের পাথর রপ্তানীকারক ফেলিক্স ভিডিও কনফারেন্সে সব প্রকল্প উদ্বোধনের পরই প্রধানমন্ত্রী স্থানীয় জনগণের সঙ্গে বিশেষ মোনাজাতে অংশগ্রহণ করেন।
জানা গেছে, শেখ হাসিনার সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যে ১০টি প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে তার একটি পায়রা ‘গভীর সমুদ্র বন্দর’, এর মধ্যে রয়েছে পদ্মা সেতুও। মহেশখালীতে আরেকটি গভীর সমুদ্র বন্দরও রয়েছে অগ্রাধিকারের তালিকায়। ২০১৩ সালের ১৮ নভেম্বর পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নে রামনাবাদ চ্যানেলের পশ্চিম তীরে ১৬ একর জমির উপর পায়রা সমুদ্র বন্দর নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এক হাজার ১২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৮ সালের মধ্যে এই সমুদ্র বন্দর নির্মাণের পুরো কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। তবে জাহাজ ভেড়ার অবকাঠামো নির্মিত হয়ে যাওয়ায় আগেই ভিড়তে শুরু করেছে জাহাজ। এ বন্দর প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে ইপিজেড, জাহাজ নির্মাণসহ নতুন নতুন শিল্প এলাকা গড়ে ওঠার সুবাদে বরিশাল, পটুয়াখালীর কলাপাড়া, বরগুনা, কুয়াকাটা, কলাপাড়া, লালুয়া, রামনাবাদসহ পায়রা বন্দর এলাকার ৫০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে এবং আর্থ সামাজিক অবস্থার অভূতপূর্ব উন্নয়ন ঘটবে।
জানা গেছে, এ বন্দরে তৈরী হচ্ছে কন্টেইনার, বাল্কহেড, সাধারণ কার্গো, এলএনজি, পেট্রোলিয়াম ও যাত্রী টার্মিনাল। সেই সাথে অর্থনৈতিক অঞ্চল, তৈরি পোশাক, ওষুধশিল্প, সিমেন্ট, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মৎস্য প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল, সার কারখানা, তৈল শোধনাগার ও জাহাজ নির্মাণশিল্পসহ আরো অনেক শিল্প-কারখানা গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
এরই মধ্যে এ বন্দরে পণ্যবাহী বিদেশী জাহাজ আসতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে চীন থেকে পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য ৫৩ হাজার মেট্রিক টন পাথর নিয়ে পায়রা বন্দর বহির্নোঙরে হিরণ পয়েন্টে চীনা জাহাজ এফভি ফরচুন বার্ড পৌঁছায় গত ১ আগস্ট। ওইদিন পরীক্ষামূলকভাবে বড় জাহাজ থেকে ছোট জাহাজে পণ্য খালাস করার কথা ছিল। কিন্তু দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে তা স্থগিত করা হয়। শুক্রবার থেকে পণ্য খালাস শুরু হয়েছে।
নৌ-মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, পায়রা সমুদ্রবন্দরের এই মেগা প্রকল্পটি স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি, দীর্ঘমেয়াদি তিন ভাগে নির্মাণ করা হচ্ছে। স্বল্পমেয়াদির শেষ পর্যায়ের কার্যক্রম দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। একই সঙ্গে মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদির কার্যক্রমও চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
ইতোমধ্যে নির্মিতব্য পায়রা সমুদ্রবন্দরে টাওয়ার, লাইট, বয়া স্থাপনসহ অন্য কার্যক্রম শেষ করা হয়েছে। এসব কাজের জন্য ইতোমধ্যে ১৬ একর জমি অধিগ্রহণ ও ভরাটের কার্যক্রমও শেষ হয়েছে। একটি জেটি নির্মাণ ও বসানো হয়েছে দুটি শক্তিশালী ক্রেন। এই জেটির সঙ্গে একটি সংযোগ সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। তবে দেশের তৃতীয় এই সমুদ্রবন্দরের কাজ পুরোপুরি প্রস্তুত করে কাযক্রম শুরু হবে ২০১৮ সালে।
পায়রা সমুদ্রবন্দর নির্মাণের জন্য মোট ছয় হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করা হবে। আর এই জমি অধিগ্রহণ করার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পায়রা বন্দরে জাহাজ নোঙর করতে মোট ১৬টি জেটি নির্মাণ করা হবে। এছাড়া বড় বড় জাহাজ বন্দরে প্রবেশ করার জন্য ড্রেজিংয়ের কার্যক্রম আগামী বছর থেকে শুরু করা হবে।
রামনাবাদ নদীবন্দরকে ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা করতে প্রায় এক হাজার মিটার নদীরক্ষা বাঁধ নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। বন্দরে নির্বিঘেœ রাতেও কর্ম সম্পাদনের জন্য ৭০টি সৌরবিদ্যুৎ স্ট্রিট লাইট স্থাপন করা হয়েছে। বসানো হয়েছে সিগন্যাল বাতি। আপাতত পণ্যবাহী জাহাজ সমুদ্রে নোঙর করবে। বন্দরে ভারী যন্ত্রপাতি পরিচালনার জন্য ক্রয় করা হয়েছে দুটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন জেনারেটর। বন্দরের নিরাপত্তার জন্য সেন্ট্রি পোস্টসহ নিরাপত্তা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া কলাপাড়ার ধানখালীতে নির্মাণ করা হচ্ছে ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র।
২০০১ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব’ :
প্রতিটি জেলা সদরে একটি করে মোট ৬৫টি ভাষা প্রশিক্ষণ ল্যাবসহ সারা দেশের দুই হাজার একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্থাপন করা হয়েছে ‘শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব’। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এসব ল্যাবের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের শোকাবহ ইতিহাস ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ সন্তান শেখ রাসেলের স্মরণে কম্পিউটার ল্যাবগুলোকে ‘শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব’ নামে নামকরণ করা হয়েছে।
উদ্বোধনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘উন্নত সমৃদ্ধ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আরও একধাপ এগিয়ে গেলো দেশ। তথ্য-প্রযুক্তি জ্ঞানের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, প্রতিযোগিতাপূর্ণ বিশ্বে আমাদের শিক্ষার্থীরা তথ্য-প্রযুক্তি জ্ঞান অর্জন করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। ডিজিটাল সেন্টারের মতো শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবগুলোও কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি আইসিটি ক্ষেত্রে দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা
জানা গেছে, শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবের মাধ্যমে প্রতিবছর ১০ লাখ শিক্ষার্থী আইসিটি শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার সুযোগ পাবে। শিক্ষার্থীদের আইসিটি ক্ষেত্রে সামর্থ্য বাড়ানো ও ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে এসব ল্যাব। প্রতিটি ল্যাব মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, সাইবার সেন্টার ও ট্রেনিং ল্যাব হিসেবে ব্যবহৃত হবে। এখানে শিক্ষার্থী ছাড়াও আগ্রহী তরুণ-তরুণীরা আইটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন। ২০ জন শিক্ষার্থী বসার মতো ল্যাব কক্ষ বরাদ্দ করা হয়েছে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।
অন্যদিকে ভাষা প্রশিক্ষণ ল্যাবগুলোতে থাকবে বিশ্বের প্রধান ৯টি ভাষা শেখার সুযোগ। এগুলো হচ্ছেÑ ইংরেজি (আমেরিকান, ব্রিটিশ ও অস্ট্রেলিয়ান), চীনা, কোরিয়ান, জাপানিজ, ফরাসি, স্প্যানিশ, জার্মান, আরবি ও রুশ। প্রতিটি ল্যাবে আইটি সরঞ্জামের মধ্যে থাকবে ১৭টি কম্পিউটার, একটি লেজার প্রিন্টার, একটি স্ক্যানার, একটি মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর (স্ক্রিনসহ), দ্রুতগতির ইন্টারনেটের জন্য থাকবে থ্রি-জি রাউটার ও প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র। ভাষা প্রশিক্ষণ ল্যাবগুলোতে বাড়তি হিসেবে থাকবে ভাষা ওপর প্রশিক্ষণ সফটওয়ার ও কনটেন্ট এবং হেড ফোন।
ডিজিটাল ল্যাবগুলো সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য প্রতিটি নির্বাচনী এলাকার সংসদ সদস্য (এমপি), জেলা প্রশাসক, উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), পৌর কাউন্সিলর, উপজেলায় নিয়োজিত আইসিটি অধিদফতরের সহকারী প্রোগ্রামার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের সমন্বয়ে গঠিত হবে শক্তিশালী উপদেষ্টা কমিটি।



 

Show all comments
  • সুলতান ১৪ আগস্ট, ২০১৬, ১:০৯ পিএম says : 0
    শুধু দক্ষিণাঞ্চল না, সমগ্র বাংলাদেশ এমনকি দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের জন্যও একটা শুভ সূচনা।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ডানা মেলল পায়রা

১৪ আগস্ট, ২০১৬
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ