Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

খালেদা জিয়ার সিদ্ধান্তই যথার্থ

বিএনপির নতুন কমিটি নিয়ে তর্ক-বিতর্ক

প্রকাশের সময় : ১৪ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৪৩ পিএম, ১৩ আগস্ট, ২০১৬

স্টালিন সরকার : সুনামী-সিডর-আইল্যা কোনোটিই বাদ যায়নি। ৯ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে এসব মহাদুর্যোগ। সুনামী-সিডর-আইল্যা প্রাকৃতিক সৃষ্ট দুর্যোগ হলেও দলটির নেতাকর্মীদের ওপর দিয়ে বয়ে যায় মানুষ্যসৃষ্টি দুর্যোগ। বিশেষ করে বিগত তিন বছর ‘জনগণের ভোটের অধিকার’ আদায়ের আন্দোলনের বিপরীতে আইন-শৃংখলা রক্ষার নামে যে নিপীড়ন-নির্যাতন, দমন-পীড়ন হয়েছে তা গণতান্ত্রিক দেশে কল্পনাতীত। জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় চিপ হুইপ জয়নাল আবেদীন ফারুককে যেভাবে রাজপথে পিটিয়ে রক্তাক্ত করা হয়েছে, হাইকোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে মহিলা নেত্রী পাপিয়াসহ সিনিয়র নেতাদের গ্রেফতারের পর যেভাবে চ্যাংদোলা করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সে বীভৎস দৃশ্য টিভি পর্দায় মানুষ দেখেছে।
ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন তথা ঔপনিবেশিক শাসনামল এবং পাকিস্তানের ২৩ বছরের দুঃশাসনে ‘ভোট ও ভাতের অধিকার আদায়ের’ আন্দোলনে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের এমন বিভীষিকাময় পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে ইতিহাসে সে সাক্ষ্য দেয় না। আন্দোলনরত দলের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে সারাদেশে লক্ষাধিক মামলা দায়েরের এমন নজির নেই। দলটির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে সর্বনি¤œ ১০টি থেকে ১২০টি পর্যন্ত। কেন্দ্র থেকে তৃণমূলে লাখ লাখ নেতাকর্মী মামলার আসামি। অনেক নেতাকর্মীকে সাপ্তাহের ৪ থেকে ৫ দিন আদালতের বারান্দায় ঘুরতে হয়। পরিস্থিতি এত ভয়াবহ যে তিনবারের প্রধানমন্ত্রী দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে আদালতে গিয়ে একদিনে ১০টি মামলার জামিন নিতে হয়। দলের দ্বিতীয় ব্যক্তি মহাসচিবের বিরুদ্ধেই ৮৭ মামলা; এবং ২৫টি মামলার দেয়া হয়েছে চার্জশিট। নিপীড়নের শঙ্কায় ‘বিএনপি’ নামটি উচ্চারণ করতে কর্মী-সমর্থকরা যখন ভয় পাচ্ছেন; তখন দলটির কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়। ১৯ মার্চ জাতীয় কাউন্সিলের দীর্ঘদিন পর কমিটি ঘোষণা করায় তা নিয়ে চলছে বিস্তর বিতর্ক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. নূরুল আমিন ব্যাপারীর মতে, দীর্ঘ ৯ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা কোনো রাজনৈতিক দলের কমিটি নিয়ে এমন বিতর্ক নজিরবিহীন। শুধু জনভিত্তির কারণেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপির এ অবস্থা দেখে বোঝা যায় নেতাদের মধ্যে বিভেদ থাকলেও মানুষ দলটির পেছনে একাট্টা।
মামলার ভারে ন্যুব্জ বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি নিয়ে তর্ক-বিতর্ক চলছে সর্বত্র। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে রেডিও-টিভি, পত্রপত্রিকার রিপোর্ট, প্রবন্ধ-নিবন্ধ, উপসম্পাদকীয়-সম্পাদকীয় এবং সভা-সেমিনার সবখানেই আলোচনা-সমালোচনায় বিএনপিবিএনপির কমিটি ঘোষণায় নেতাকর্মীদের পদ দেয়া ও পদ-বঞ্চিতের খবর যেন এখন সবার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কমিটিতে প্রত্যাশিত পদ না পেয়ে কিছু নেতা বিক্ষুব্ধ, কিছু নেতা-সমর্থকদের সান্ত¦না দিতে ‘নেতিবাচক’ কথাবার্তা বলেছেন তবে সাধারণ নেতাকর্মীরা দারুণ খুশি। কেন্দ্র থেকে শুরু করে জেলা-উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত। নানাভাবে তারা সে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন।
‘যার বিয়ে তার খবর নেই প্রতিবেশীর ঘুম নেই’ প্রবাদের মতো প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের নেতারা বিএনপির নতুন কমিটির যেভাবে রি-এ্যান্ট করেছেন তাতে মনে হয় বেগম খালেদা জিয়া নতুন কমিটি গঠনে যথার্থই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ অভিমত একাধিক নেতার। আগামীতে আন্দোলনের চিন্তা-ভাবনা মাথায় রেখে গঠিত এ কমিটি প্রতিপক্ষ দলের মাথাব্যথার কারণ হয়ে গেছে। অপ্রিয় হলেও সত্য যে, বিএনপির রাজনীতিতে দুই ধরনের নেতাকর্মীর উপস্থিতি বিদ্যমান। সরল ভাষায় মুদ্রার এপিঠ আর ওপিঠ। কেন্দ্র থেকে শুরু করে এক ধরনের নেতা রয়েছেন যারা শীর্ষ নেত্রী ঘোষিত কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাঠে ছিলেন। এই সংখ্যাই দলে বেশি। তারা দিনের পর দিন মাসের পর মাস রাজপথে থেকে আন্দোলন করেছেন, পুলিশি জুুলুম-নির্যাতন সহ্য করেছেন। এদের অনেকেই গ্রেফতার হয়ে কারাগারে গেছেন আবার কেউ মাসের পর মাস বছরের পর বছর গ্রেফতার এড়াতে ছিলেন ‘ফেরারি’। অনেক নেতা রয়েছেন তারা মাসের একটি রাতও বাসায় ঘুমাতে পারেননি পুলিশি গ্রেফতারের ভয়ে। শীত-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে এখানে সেখানে পালিয়ে থেকে রাত পার করেছেন। অভুক্ত দিন-রাত কাটিয়েছেন এমন নেতাকর্মীর সংখ্যাও কম নয়। আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালনের কারণে অনেকেই ব্যবসা হারিয়েছেন; অনেকেই পারিবারিক অশান্তিতে ভুগছেন; পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছেন। আবার অনেকেই সবকিছুই খুইয়েছেন। মুদ্রার অপর পিঠ হলো দল ক্ষমতায় থাকার অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছেন অনেকেই। খালেদা জিয়ার ডাকা আন্দোলনের সময় তারা নিজেকে ও অর্থ-সম্পদ রক্ষায় ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে পর্দার আড়ালে সমঝোতা করেছেন। কেউ ‘রাজনৈতিক অসুস্থ’ চিকিৎসার জন্য বিদেশ গেছেন। কেউ ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের সঙ্গে সমঝোতা করে ঘরে বসেছিলেন। এমনকি কেউ কেউ আন্দোলনের সময় ‘ক্ষমতাসীনদের’ ছায়ার তলে ছিলেন এমন খবরও মিডিয়ায় বের হয়েছে। এই সুবিধাবাদী নেতার সংখ্যা কেন্দ্রে থাকলেও তৃণমূলে খুব কম। সবকিছু বিবেচনা করে জাতীয় কাউন্সিলে কাউন্সিলররা কমিটি গঠনে দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে দায়িত্ব দেন। সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে বেগম খালেদা জিয়া কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করেন। অতঃপর শুরু হয় তোলপাড়। কমিটি ঘোষণায় বিলম্ব হওয়ায় যারা বিএনপিকে তুলোধুনো করতেন; কমিটি ঘোষণার পর তারাই কঠোর সমালোচনা করছেন। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন দলের কিছু নেতা, হিল্লি-দিল্লির তাঁবেদার বুদ্ধিজীবী, ক্ষমতার উচ্ছিষ্টভোগী শিক্ষাবিদ পেশাজীবী-সাংবাদিক এবং বিবেক বন্ধক রাখা সুশীল বিএনপির নতুন কমিটি নিয়ে এত সমালোচনা-ক্ষোভ প্রকাশ করছেন যে তারাই যেন বিএনপির সবচেয়ে শুভাকাক্সক্ষী। কোন নেতাকে কোন পদ দিলে দলের ভালো হবে বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও মির্জা ফখরুল ইসলামের চেয়ে তারাই যেন বেশি ভালো জানেন-বোঝেন। একজন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বললেন, ধান ঝাড়তে গেলে যেমন পাতানের (চিটে) সঙ্গে কিছু ধান চলে যায়; তেমনি ধানের সঙ্গেও কিছু পাতান থেকে যায়। বিএনপির কমিটির মূল্যায়নের সারমর্ম এটাই। বড় দলে হাজার হাজার যোগ্য নেতা থাকে। সব নেতাকে তাদের প্রত্যাশিত পদ দেয়া সম্ভব হয় না। বিএনপির নতুন কমিটিতে সেটাই হয়েছে। পদ না পাওয়ায় কিছু নেতা মনে কষ্ট পেয়েছেন কিন্তু তারা তেমন নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানাননি। অনেকেই মনের দুঃখে নীরব হয়ে রয়েছেন। এমনকি বিএনপির সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট সৈয়দা আশিফা আশরাফি পাপিয়া অভিযোগ করেছেন ফেসবুকে তার নামে ভুয়া একাউন্ট খুলে সহ-সম্পাদকের পদ পাওয়ায় তিনি দলের সমালোচনা করেছেন এমন বক্তব্য পেস্ট করা হয়েছে। তিনি সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছেন, বেগম জিয়া যে পদে তাকে বসিয়েছেন তিনি তাতেই খুশি। পাপিয়ার মতো হয়তো অনেক সিনিয়র নেতা কমিটি ঘোষণার পর মনোক্ষুণœœ হলেও নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেননি। অথচ মিডিয়ায় অনেক কিছুই প্রচার করা হচ্ছে। বিএনপির নতুন কমিটি নিয়ে সরকার আশীর্বাদপুষ্ট কিছু মিডিয়া নিত্যদিন এতো নেতিবাচক খবর প্রচার করছে এবং টকশোতে টকারুদের দিয়ে বলাচ্ছে যে, বিএনপি চেয়ারপার্সন যেন নেতানেত্রীদের সম্পর্কে কোনো ধারণা না রেখেই কেন্দ্রীয় কমিটির ঘোষণা দিয়েছেন। কমিটি গঠনের পর পদত্যাগ করেছেন মোসাদ্দেক আলী ফালু ও কাজী সেলিমুল হক কামাল। দলে তাদের অবদান (!) সবাই জানেন। পদত্যাগ করা শামীমুর রহমান শামীমকে কেন্দ্রীয় কমিটিরই অনেক নেতা চেনেন না। স্থায়ী কমিটিতে পদের প্রত্যাশায় ছিলেন আবদুল্লাহ আল নোমান (১/১১ সময় দুবাইয়ে ছিলেন), ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা, প্রবীণ নেতা শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, আবদুল আউয়াল মিন্টু, মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমদ (মান্নান ভূঁইয়ার সংস্কারবাদী দলের মহাসচিব)। এদের মধ্যে আবদুল্লাহ আল নোমান নিজের সমর্থকদের সান্ত¦না দিতে কথাচ্ছলে অসন্তোষ প্রকাশ করলেও কমিটির সমালোচনা করেছেন বলে শোনা যায়নি। অন্যরা এ প্রসঙ্গে কোনো প্রতিক্রিয়াই জানাননি। আর আমান উল্লাহ আমান, নাজিম উদ্দিন আলম, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, মিজানুর রহমান মিনু, নাদিম মোস্তফা, জয়নুল আবদীন ফারুক, আবদুস সালাম, ড. আসাদুজ্জামান রিপন, ডা. মাজহারুল ইসলাম, আবদুল লতিফ জনি প্রমুখরা কেউ প্রকাশ্যে নতুন কমিটির সমালোচনা করেছেন এমন শোনা যায়নি। কিন্তু কিছু মিডিয়া নিজেদের মতো করেই এদের নিয়ে নেতিবাচক খবর প্রকাশ করে দলটির অভ্যন্তরে বিরোধ এবং নেতাকর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টির চেষ্টা করছে। অনেক মিডিয়া এবং ব্যক্তি বিএনপির তীব্র সমালোচনা করে নতুন কমিটিকে পারিবারিকীকরণের অভিযোগ তুলেছেন। মানবাধিকার অপরাধে ফাঁসি হওয়া (একজন দ-িত অবস্থায় মারা গেছেন) দুই নেতার পরিবারের সদস্যদের কমিটির সদস্য করা এবং একজন দ-িত নেতাকে কমিটিতে পদ দেয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিতর্ক ছড়িয়ে দিয়েছেন। ক্ষমতাসীনদের তাঁবেদার এই মিডিয়াগুলো ক্ষমতাসীন দলের কোনো ভুল দেখতে পান না। সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক ১৩ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়ে একজন এবং সাজা ও অর্থ উভয় দ-ে দ-িতের পর অর্থদ- জমা দিয়ে দুইজন এখনো মন্ত্রিত্ব করছেন। নজিরবিহীন এ ঘটনা নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলেন না এই মিডিয়া ও বুদ্ধিজীবীরা। বিএনপির কোন নেতাকে কোন পদ দেয়া হলো কোন নেতাকে বাদ দেয়া হলো এটা নিয়েই তাদের যত মাথাব্যথা। বিএনপির কোন নেতা কোন পদের যোগ্য সেটা বেগম খালেদা জিয়ার চেয়ে বেশি কে বোঝেন? বিএনপির একাধিক নেতা জানান, আগামীতে বঞ্চিত নেতাদের অধিকাংশেরই মূল্যায়ন করা হতে পারে। নতুন কমিটি নিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কাউন্সিলে কাউন্সিলররা সর্বসম্মতিক্রমে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দলের কার্যনির্বাহী কমিটি গঠনের দায়িত্ব দিয়েছেন। সেই দায়িত্ব নিয়ে তিনি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করেছেন। দলে শত শত হাজার হাজার যোগ্য লোক আছেন, তাদের সবাইকে তো আর যুক্ত করা সম্ভব না। সবাইকে ধৈর্য তো ধরতেই হবে। শেষ কথা বলতে কিছু নেই। সব সময়ই পরিবর্তনের একটা বিষয় থাকে। স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, আমরা গঠনতন্ত্রে সংশোধনী এনেছি। এখানে হয়তো এমন অনেকে আছে যারা এক ব্যক্তি দুই পদে আছেন। এটার পুনর্বিন্যাস করা হবে। সেখানে অনেক পদ খালি হয়ে যাবে। যারা পদ-বঞ্চিত, তাদেরকেই সেখানে পদ দেয়া হবে। আবার সেখানে হয়তো বা সিনিয়রিটি জুনিয়রিটির কিছু বিন্যাসের প্রয়োজন হতে পারে। সেই বিন্যাস হবে। যারাই ছোটখাটো মনঃকষ্টে আছে সেটা আর থাকবে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দলের নতুন কমিটি ঘোষণার নেতাদের মধ্যে সৃষ্ট ক্ষোভ ও অসন্তোষের খবর মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচার হলেও সেসবে গুরুত্ব দিচ্ছেন না দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। আগামী দিনে সরকারবিরোধী আন্দোলনের কথা মাথায় রেখে কমিটির বেশকিছু পদে পুনর্মূল্যায়ন প্রয়োজন বলে অনেকে মতামত দিলেও সে ব্যাপারে তিনি আগ্রহ দেখাননি। তবে সবাই জানিয়েছেন তিনি সবকিছু চিন্তা-ভাবনা করছেন; কিছু পদও খালি আছে সেটাও জানিয়েছেন। বেগম জিয়া তিনি এগিয়ে যেতে চান আপোষহীন নেত্রীর মতোই। বিএনপির এক নেতা জানান, সময় নিয়ে দীর্ঘদিন সবার সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েই তিনি নতুন কমিটি করেছেন।
উল্লেখ্য, ১৯ মার্চ দলের ৬ষ্ঠ কাউন্সিলে দলের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে চেয়ারপার্সন নির্বাচিত করে তাকে নতুন কমিটি গঠনের একক ক্ষমতা দেন কাউন্সিলররা। এর প্রায় ৪ মাস পর গত ৬ আগস্ট দুটি পদ ফাঁকা রেখে ১৭ সদস্যের স্থায়ী কমিটি, ৭৩ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ এবং ৫০২ সদস্যের নির্বাহী কমিটি ঘোষণা করা হয়। অতঃপর ঘোষিত নতুন কমিটি নিয়ে ওঠে বিতর্কের ঝড়। দলটির মাঠ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বললে তারা জানান, নতুন কমিটি নিয়ে তর্ক-বিতর্ক ও সমালোচনায় তারা নেতিবাচক কিছু দেখছেন না। তাদের মতে দেশের ৭০ থেকে ৮০ ভাগ ভোটার যে দলকে ভোট দেয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন সে দলের কমিটি নিয়ে বিতর্ক হবেই। হাজার হাজার নেতাকর্মী জেলে। বর্তমানে হাজার হাজার নেতাকর্মী পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। সিনিয়র নেতাদের সবার বিরুদ্ধে ডজন ডজন মামলা। নিত্যদিন ডজন ডজন নেতাকে আদালতে দৌড়াতে হচ্ছে। তারপরও জাতীয় কাউন্সিল হয়েছে; নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে; এটাই কম কিসে? সাবেক এক ছাত্রনেতা বলছেন, আওয়ামী লীগ ও তাদের তাঁবেদার বুদ্ধিজীবীরা বিএনপির কমিটি নিয়ে যত বেশি বিতর্ক করবেন; বুঝতে হবে কমিটি গঠনে বেগম খালেদা জিয়ার সিদ্ধান্ত ততই বেশি যথার্থ।



 

Show all comments
  • Pabel ১৪ আগস্ট, ২০১৬, ১:৩০ এএম says : 1
    i think this is the right choice .
    Total Reply(0) Reply
  • রেজবুল হক ১৪ আগস্ট, ২০১৬, ১:৩৩ এএম says : 1
    এত বড় দল এত বড় কমিটি কিছু বিতর্ক তো থাকবেই।
    Total Reply(0) Reply
  • ISLAM ১৪ আগস্ট, ২০১৬, ৩:১১ এএম says : 0
    THE WRITER OF THIS ARTICLE SHOULD GET A ADVISORY POST OF KHALEDA ZIA.
    Total Reply(0) Reply
  • ইমরান ১৪ আগস্ট, ২০১৬, ১০:০৫ এএম says : 0
    বিপদের সময় সুবিধা ভোগকারীরা সমালোচনাই করবে, এটাই সাভাবিক।
    Total Reply(0) Reply
  • Shahidur Rahman ১৪ আগস্ট, ২০১৬, ১১:৪৯ এএম says : 0
    স্টালিন ভাই আপনি খুবই সুন্দর লিখেছেন,দেশ নেত্রী খালেদা জিয়া কে কি রকম আন্দোলন করেছে তাহা দেখে নেতাদের সেই রকম পদ দিয়েছেন,
    Total Reply(0) Reply
  • Ahmed Moha ১৪ আগস্ট, ২০১৬, ১১:৫০ এএম says : 0
    The lady Iron Lady mother of democracy since 1980
    Total Reply(0) Reply
  • Babul ১৪ আগস্ট, ২০১৬, ১১:৫১ এএম says : 0
    লিখাটা খুব ভাল লেগেছে। ধন্যবাদ ভাই স্টালিন সরকার। অনেক দিন বেঁচে থাকুন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খালেদা জিয়ার সিদ্ধান্তই যথার্থ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ