পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগসহ ১৩টি সমমনা সংগঠন জঙ্গিবাদ সন্ত্রাসবাদ রুখতে শিক্ষার সর্বস্তরে ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলককরণ এবং ১৮ বছরের নীচে কোরবানি না করার সিদ্ধান্ত ও নির্দিষ্ট স্থানে কোরবানি করার নির্দেশ বাতিলসহ ৮ দফা দাবিতে গতকাল সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও মিছিলের কর্মসূচি পালন করে। মিছিলে উত্থাপিত দাবিসমূহ হচ্ছেÑ
মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দ বলেন, ১৮ বছরের নীচে কোরবানি না করার সিদ্ধান্ত এবং নির্দিষ্ট স্থানে কোরবানি/জবেহ করার নির্দেশ অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। মুসলমানদের ধর্ম পালনে প্রতিবন্ধকতা বন্ধ করা এবং কোরবানির স্থান নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে।
কারণ, গত ১০ জুন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অজুহাতে হিন্দুত্ববাদী চক্রান্তের শিকার হয়ে কোরবানির পশু জবাইয়ের জন্য ঢাকা উত্তরে ৫৬৭ ও ঢাকা দক্ষিণে ৫৮৩টি মোট ১১৫০টি স্থান নির্দিষ্ট করেছে দুই সিটি কর্পোরেশনসহ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এছাড়া রাজধানীর বাইরে সারা দেশের ১১টি সিটি করপোরেশনের মোট ৬২৩৩টি স্থান পশু কোরবানির জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
বক্তারা বলেন, প্রাপ্ত তথ্য মতে শুধু ঢাকা শহরেই প্রতি বছর ৩০ লাখ গরু কোরবানি হয়ে থাকে। সে হিসেবে দুই সিটি কর্পোরেশনের নির্দিষ্ট ১১৫০টি স্পটে কোরবানি করতে হলে একটি স্পটে ২৬৫০ জনকে কোরবানি করতে হবে, যা সম্পূর্ণ অসম্ভব ও অবাস্তব। ধারাবাহিকভাবে তিনদিন কোরবানি করলেও ২৬৫০ জন কখনো কোরবানি করতে পারবে না। একই অবস্থা হবে সারা দেশে।
বক্তারা বলেন, কোরবানির স্থান নির্দিষ্ট থাকলে লাখ লাখ কোরবানিদাতারা একই সময়ে কোরবানি তো করতে পারবেনই না বরং নির্দিষ্ট স্থানে কোরবানির জন্য দীর্ঘ সারি, যাতায়াতের সমস্যা, পরিবহন সমস্যা, গোশত বন্টন, বহনের ঝামেলা, চামড়ার নিরাপত্তা, মাস্তানদের অপতৎপরতাসহ হাজারো সমস্যার মুখোমুখি হবেন। এতে ঢাকাসহ সারা দেশের লাখ লাখ কোরবানিদাতা দুর্ভোগের কথা বিবেচনা কওে কোরবানি না করে ওয়াজিব তরক্বের গুনাহে গুনাহগার হবে।
বক্তারা আরো বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক এবার ১৮ বছরের নীচে কেউ কোরবানি বা জবেহ করতে পারবে না। এই সিদ্ধান্তও সম্পূর্ণ ইসলামবিরোধী ও মনগড়া সিদ্ধান্ত। কারণ ইসলামে এরকম কোনো সিদ্ধান্ত নেই। বরং ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী যিনি ইমামতির যোগ্য তিনি কুরবানী করারও যোগ্য। তাহলে এসব ইসলামবিরোধী নির্দেশদাতারা কি নতুন করে ইসলাম ধর্মের বাইরে স¤্রাট আকবরের দ্বীনে এলাহির মতো নতুন কোনো ধর্ম প্রবর্তন বা করতে চায়? কিন্তু এ দেশের মুসলমানরা তা কখনো মেনে নেবে না।
হিন্দুত্ববাদী চক্রান্তে পরিকল্পিতভাবে মুসলমানদেও কোরবানি নিরুৎসাহিত করতে এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও হিন্দুদের পূজা ম-প রাস্তাঘাটে যত্রতত্র করা হলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয় না। পূজা ম-প রাস্তাঘাট যত্রতত্র করা যাবে না এরূপ নির্দেশনা জারি করা হয় না বা পূজা ম-পের স্থান নির্দিষ্ট করে দেয় হয় না। এটা কি মুসলমানদের প্রতি কোরবানির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র নয়?
বক্তারা বলেন, সুতরাং কোরবানির বিরুদ্ধে হিন্দুত্ববাদী চক্রান্ত বন্ধ করে অবিলম্বে এসব উদ্ভট ও ইসলামবিরোধী মনগড়া সিদ্ধান্ত বাতিল করে সিটি কর্পোরেশনগুলোকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন এবং পর্যাপ্ত লোকবল নিয়োগ করতে হবে। পাশাপাশি কোরবানি দাতাদের সুবিধার্থে প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে কোরবানির পশুরহাটের ব্যবস্থা করতে হবে। কোরবানির পশুরহাট এবং কোরবানি নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র মেনে নেয়া হবে না।
মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দ বলেন, তরুণ প্রজন্মকে সন্ত্রাসবাদ থেকে বাঁচাতে পাঠ্যপুস্তকে ইসলামী শিক্ষা বিশেষ করে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হযরত নবী-রসূল (আঃ), হযরত উম্মুল মু’মিনীন (আঃ) সালাম, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম (রাঃ), হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম (রহঃ) উনাদের জীবনী মুবারক অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
মানববন্ধনে উত্থাপিত অন্যান্য দাবিসমূহ হচ্ছে, জঙ্গি প্রতিরোধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংস্কৃতি চর্চার নামে ইসলামের হারাম সংস্কৃতি বাতিল করে ইসলামী সংস্কৃতি চালু করতে হবে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি কমিশন আইন পাশ মানে; বাঙালিদের উদ্বাস্তু বানানো এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী উপজাতিদের স্বাধীন জুমল্যান্ড গঠন ত্বরান্বিত করার গভীর চক্রান্ত। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অবিলম্বে এই কালো আইন বাতিল করতে হবে।
শত্রু সম্পত্তি বা অর্পিত সম্পত্তি এখন রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি। ভারতে শত্রু সম্পত্তি মুসলমানদের ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে না। তাহলে বাংলাদেশ ফেরত দেয়া হবে কেন? অবিলম্বে অর্পিত সম্পত্তি আইন বাতিল করতে হবে।
কারো সাম্প্রদায়িক নির্দেশে দেবোত্তর সম্পত্তির নামে রাগীব-রাবেয়া মেডিক্যালের জায়গাসহ দেশব্যাপী মুসলমানদের সম্পত্তি হরণ চলবে না। অবিলম্বে মুসলমানদের লা-খেরাজ সম্পত্তি মুসলমানদের ফেরত দেয়ার উদ্যোগ নিতে হবে।
জঙ্গিরা জঙ্গি কার্যক্রম তথা নিরীহ মানুষ হত্যা করলে জান্নাতে যাওয়ার দাওয়াত দিচ্ছে। এদের বিপরীতে মুসলমানদের জান্নাতে যাওয়ার জন্য মন্ত্রী-এমপিদের পথ দেখাতে হবে এবং পীর ওলামা মাশায়েখ ও ইমাম খতিবদের দিয়ে এ বিষয়ে প্রচারণা চালানো জন্য পৃষ্ঠপোষকতা করতে হবে।
১৫ আগস্টকে জাতীয় শাহাদাৎ দিবস ঘোষণা করতে হবে এবং দেশের ৬৮ হাজার মসজিদে পবিত্র মীলাদ মাহফিল, দোয়া-মোনাজাত ও তবারকের ব্যবস্থা করতে হবে। জাতির জনক শহীদ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আগে ‘শহীদ’ এবং শেষে (রহ.) লাগানোর জন্য আইন প্রণয়ন করতে হবে।
ওলামা লীগের কার্যকরী সভাপতি হাফেজ মাওলানা আব্দুস সাত্তারের পরিচালনায় মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করবেন পীরজাদা পীর, বীর মুক্তিযোদ্ধা, আখতার হোসেন বুখারী (টাঙ্গাইল)। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সেক্রেটারি আলহাজ্ব কাজী মাওলানা আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী, সহ-সভাপতি আলহাজ্ব হাফেজ মোস্তফা চৌধুরী বাগেরহাটি, সাংগঠনিক সম্পাদক হাফেজ মাওলানা আব্দুল জলীল, মাওলানা মুজিবুর রহমান চিশতী, মাওলানা শোয়াইব হোসেন, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান কাজী আহমাদুর রহমান, মাওলানা বাদশা সোলায়মান, ড. সাইফুদ্দিন মিয়াজি, শেখ শওকত আলী শেখ ছিলিমপুরী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।