পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
করোনাভাইরাস মহামারীতে যখন অনেক দফতরের কাজ অনলাইনে সারা হচ্ছে, তখন অনলাইনে আয়কর বিবরণী জমা দেয়ার চালু থাকা সুযোগটি বন্ধ হয়ে গেল। গত তিন বছর অনেক করদাতা অনলাইনে তাদের আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন জমা দিলেও এবার তাদের তা সনাতন পদ্ধতিতেই জমা দিতে হবে। নভেম্বর মাস আয়কর জমা দেয়ার শেষ সময় হওয়ায় অনেকে আয়কর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অনলাইনে রিটার্ন জমার লিংকটি খোলার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছিলেন।
এ বিষয়ে এনবিআরের সদস্য হাফিজ আহমেদ মুর্শেদ বলেন, এবার আর কেউ অনলাইনে রিটার্ন জমা দিতে পারবেন না। কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভিয়েতনামের এফপিটি ইনফরমেশন সিস্টেম করপোরেশন নামের একটি সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান অনলাইনে রিটার্ন জমা দেয়ার সফটওয়্যারটি তৈরি করেছিল। কিন্তু তাদের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় অনলাইনে রিটার্ন জমার লিংকটি বন্ধ রয়েছে। তাই করদাতারা রিটার্ন দিতে পারছেন না। করদাতারা আবার কবে এই সুযোগটি পাবেন, তাও নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না এনবিআর কর্মকর্তারা।
হাফিজ আহমেদ মুর্শেদ বলেন, ইতোমধ্যে ভিয়েতনামের ওই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নতুন করে চুক্তি করার চিন্তাভাবনা চলছে। নতুন করে চুক্তি না হলে অনলাইনে রিটার্ন জমা দেয়ার সুযোগ নেই। তবে চলতি মৌসুমের বাকি দুই মাসেরও কম সময়ে (অক্টোবর ও নভেম্বর) এ লিংক আবার চালু হওয়ার সম্ভাবনা ‘খুবই কম’ বলে জানান তিনি। এবার আর কোনো করদাতা অনলাইনে রিটার্ন জমা দিতে পারবেন না।
আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী, প্রতিবছর আয়কর বিবরণী জমা দেয়ার শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর। গত কয়েক বছরে আয়কর দিতে নাগরিকদের সাড়া দেখে আয়কর বিবরণী আরও সহজ করতে কয়েক বছর আগে অনলাইনে তা নেয়া শুরু করে এনবিআর। এজন্য ৫১ কোটি টাকা খরচ করে একটি প্রকল্পও বাস্তবায়ন করা হয়। অনলাইনে রিটার্ন জমায় করদাতাদের আগ্রহ বাড়াতে এনবিআর থেকে নানা উদ্যোগও নেয়া হয়েছিল। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে প্রথমবার অনলাইনে রিটার্ন জমা দিলে ২ হাজার টাকা করছাড় প্রদানের ঘোষণা দেয়া হয়েছিল।
২০১৬ সালের নভেম্বরে অনলাইন জমা নেয়া উদ্বোধন করা হয়। এনবিআর কর্মকর্তারা জানান, ওই বছর তেমন একটা আয়কর বিবরণী অনলাইনে জমা পড়েনি। পরের তিন বছরও (২০১৭-১৮, ২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০ অর্থবছর) তেমন সাড়া দেখা যায়নি। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৫ হাজারের মতো করদাতা অনলাইনে বিবরণী জমা দিয়েছেন। সর্বশেষ ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৭ হাজার ২০৭ জন এ সুযোগ নিয়েছেন। প্রতিবছর গড়ে ২২ থেকে ২৩ লাখ করদাতা আয়কর বিবরণি জমা দেন। সে হিসাবে অনলাইনে জমা ১ শতাংশের কম। মহামারীর কারণে এবার আয়কর মেলাও করতে পারছে না এনবিআর। তারমধ্যে অনলাইনে রিটার্ন জমার সুযোগও বন্ধ হয়ে গেল। বিষয়টি নিয়ে উম্মা প্রকাশ করে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, এটাকে আমি এনবিআরের শীর্ষ কর্মকর্তাদের চরম ব্যর্থতা এবং খামখেয়ালী বলব। এটাকে মেনে নেয়া যায় না। আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে আমরা এগুচ্ছি, না পেছাচ্ছি, বুঝতে পারছি না। জনগণের টাকা খরচ হলো, কিন্তু করদাতারা সেবা পেল না। সফটওয়্যারটি যখন তৈরি করা হয়, তখন এর সঙ্গে কর কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ত করা হয়নি কেন? অনলাইনে আয়কর নেয়ায় এনবিআর কর্মকর্তাদেরই আগ্রহ কম বলে মনে করছেন আহসান মনসুর। তিনি বলেন, পরিস্থিতি এখন এমন দাঁড়িয়েছে, ভিয়েতনামের প্রতিষ্ঠানটি চলে গেলে সফটওয়্যারটি সচল রাখতে পারছে না এনবিআর। একটি ভালো উদ্যোগ ভেস্তে যেতে বসেছে। এনবিআরের একটি অটোমেশন প্রকল্পেও ফল আসেনি। এনবিআরের কর্মকর্তাদের মধ্যেই অটোমেশনে আগ্রহ কম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।