Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আ’লীগ জাতিকে আরো বিভক্তির জন্য কাজ করছে -মির্জা ফখরুল

প্রকাশের সময় : ১৩ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

জাতীয় ঐক্যের আহ্বান নিয়ে বিভ্রান্তির সুযোগ নেই
স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ কোনোদিনই জাতিকে রক্ষা করবার আহ্বানে সাড়া দেয়নি। জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় খালেদা জিয়া ডাকা জাতীয় ঐক্যের আহ্বানকে শুধু উপেক্ষা করেনি, আজকে জাতিকে আরো বিভক্ত করবার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। একই সঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, জঙ্গিবাদকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে সরকার দেশে দমন-পীড়ন চালাচ্ছে। গতকাল (শুক্রবার) দুপুরে এক আলোচনা সভায় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই অভিযোগ করেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া জাতীয় ঐক্যের যে আহ্বান করেছেন, সেই আহ্বানটি ছিলো সম্পূর্ণভাবে তার অন্তর থেকে আসা। জাতীয় দায়িত্ববোধ থেকে জাতীয় নেতা হিসেবে তিনি বিএনপির চেয়ারপার্সন হিসেবে এই ডাক দিয়েছেন। তিনি একবারও ভাবেননি দলীয় কোনো ব্যাপার আছে কিনা, অন্য কিছু আনেনি। আমরা মনে করি, এটি সঠিক আহ্বান। এ নিয়ে কোনো ভ্রান্তির অবকাশ নেই, কোনো বিভ্রান্তির সুযোগও নেই। আমি অনুরোধ করবো- এই বিষয়টাকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা না করে দেশনেত্রীর যে আকাক্সক্ষা, সেই আকাক্সক্ষার তরফ থেকে দেখা উচিৎ।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকারের লক্ষ্য ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য তারা যেভাবেই হোক এই জঙ্গিবাদের বিষয়টাকে আজকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে গোটা বাংলাদেশে তারা (সরকার) একটা অত্যাচারের নিষ্ঠুর নির্যাতন চালাচ্ছে।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এনডিপির উদ্যোগে এই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সাবেক তথ্যমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের মরহুম সদস্য আনোয়ার জাহিদের ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজকে দেশে যা চলছে তা একটা ভয়াবহ অশনি সংকেত বয়ে নিয়ে এসেছে। এই দেশ কি আফগানিস্তানে পরিণত হবে? আমাদের দেশ কি পাকিস্তানের মতো মুহুর্মুহু বোমার শব্দে এবং গুলিতে হাজার হাজার মানুষ নিহত হবে? অথবা সিরিয়ার মতো লক্ষ লক্ষ মানুষ উদ্বাস্তু হয়ে চলে যাবে। এই বিষয়টা অবশ্যই আমাদের গভীরভাবে ভাবা উচিৎ।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, প্রতিদিনই খবরের কাগজ পড়লে রেডিও-টিভি খুললে দেখবেন, বন্দুকযুদ্ধে নিহত হচ্ছে। একদিনও বাদ যাচ্ছে না। যাদের ধরা হচ্ছে সাসপেক্টটেড ট্যারোটিস্ট হিসেবে, তারা কেউ আদালতের মুখ দেখছে না, তারা বন্দুকযুদ্ধে নিহত হচ্ছে। এই একটা অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এখন দেশে কোনো মানুষ নিরাপদ নয়, কোনো মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নেই। দেশের মানুষ একাত্তর সালে ঐক্যবদ্ধ হয়ে যুদ্ধ করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ছিনিয়ে নিয়ে এসেছিলো, সেই বাংলাদেশের মানুষ আজকে দ্বিগভ্রান্ত হয়ে পড়েছে, সেই বাংলাদেশের মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে, সেই বাংলাদেশের মানুষ সম্পূর্ণ নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, একটা কথা আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আজকের এই যে জঙ্গিবাদ বলুন, আজকে সন্ত্রাস বলুন, সব কিছুর মূলে হচ্ছে বাংলাদেশে গণতন্ত্রের অনুপস্থিতি। গণতন্ত্র নেই বলেই আজকে এ ধরনের কার্যক্রমগুলো মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে, এ ধরনের হিংস্রতা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে, উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। সন্ত্রাস-সবচেয়ে বড় সন্ত্রাস হচ্ছে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে। রাষ্ট্রই সবচেয়ে বড় সন্ত্রাস করছে।
এখনো আমরা বলছি, আসুন, সবাই একত্রিত হয়ে আমাদের অধিকারের জন্য আন্দোলন করি। আমাদের ভোটের যে অধিকার, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরিয়ে যাওয়ার অধিকার, আমাদের নিজের ভোট আমরা নিজেরা দেবো, নিজেদের মতামত নিজেরা প্রকাশ করব, সেই অধিকারকে আমরা প্রতিষ্ঠা করবার জন্য ঐক্যবদ্ধ হই।
মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশে শুধুমাত্র একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে, নির্দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।
জাতীয়তাবাদের রাজনীতি এবং গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে খালেদা জিয়ার কোন বিকল্প নেই দাবি করে ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশনেত্রী ছাড়া বর্তমান যে সংকট, গণতন্ত্রের লড়াই-সংকট, দেশকে রক্ষার করবার সংকট, সেখানে এই মুহূর্তে আমাদের কাছে আর কোনো নেতা নেই। অতীতে তিনি প্রমাণ করেছেন, আমরা বিশ্বাস করি, আগামী দিনেও তিনি অবশ্যই সফল হবেন আপনাদের সকলের সম্মিলিত উদ্যোগের মধ্য দিয়ে।
জাতীয়তাবাদী রাজনীতি ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধের এক সময়ের বামপন্থি নেতা মরহুম আনোয়ার জাহিদের বর্ণাঢ্য জীবন ইতিহাস তুলে ধরে তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মির্জা ফখরুল।
এনডিপির সভাপতি খোন্দকার গোলাম মুর্তজার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, ন্যাপের সভাপতি জেবেল রহমান গানি, ইনকিলাবের সহযোগী সম্পাদক কলামিস্ট মোবায়দুর রহমান, ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপির সভাপতি ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আ’লীগ জাতিকে আরো বিভক্তির জন্য কাজ করছে -মির্জা ফখরুল
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ