Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তিন জেলায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ তিনজনের মৃত্যু

প্রকাশের সময় : ১৩ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

শৈলকুপায় পুলিশ পরিচয়ে তুলে নেয়া জামায়াত নেতার লাশ উদ্ধার
ইনকিলাব রিপোর্ট : রাজধানীসহ দেশের তিন জেলায় আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সঙ্গে পৃথক পৃথক ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন ৩ জন। র‌্যাব ও পুলিশের দাবি নিহতরা বনদস্যু, ডাকাত ও মাদক ব্যবসায়ী।
এছাড়া গত ৪ আগস্ট শৈলকুপায় স্থানীয় বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে পুলিশ পরিচয়ে ধরে নিয়ে যাওয়া জামায়াত নেতা ইদ্রিস আলীর লাশ গতকাল ভোরে পার্শ্ববর্তী হরিণাকুন্ড উপজেলা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতা : ঝিনাইদহের শৈলকুপা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর নিখোঁজ মাদ্রাসা শিক্ষক ইদ্রিস আলী পান্নার (৫০) লাশ মিলেছে জেলার হরিণাকু-ু উপজেলার জোড়াপুকুরিয়া গ্রামে। রঘুনাথপুর গ্রামের গোলাম কওছার আলী মন্ডলের ছেলে পান্না হরিণাকুন্ডুর উপজেলার রঘুনাথপুর ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারী ছিলেন। এদিকে একই দিন হরিণাকুন্ডুর ফলসি গ্রামে শহিদুল ইসলার পচা (৪৫) নামে এক চরমপন্থি র‌্যাবের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। নিহত শহিদুল হরিণাকু-ু উপজেলার পারদখলপুর গ্রামের মরহুম তোরাপ আলীর ছেলে। শুক্রবার ভোরে এ দুই জনের লাশ উদ্ধার করে হরিণাকু-ু থানায় আনা হয়।
হরিণাকু-ু থানার ওসি মাহাতাব উদ্দীন জানান, শুক্রবার ভোরে হরিণাকু-ু পৌরসভা এলাকার জোড়া পুকুরিয়া মাঠে জামায়াত নেতা ইদ্রিস আলীর লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। নিহত ইদ্রিস আলী পান্নার বিরুদ্ধে নাশকতাসহ ৮/৯টি মামলা রয়েছে। তিনি শিক্ষকতার পাশাপাশি মুসলীম বিবাহ ও তালাক রেজিষ্ট্রার ছিলেন। এছাড়া শৈলকুপা উপজেলার মহিষাগাড়ি জামে মসজিদে ইমামতিও করতেন। গত ৪ আগস্ট থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। ওসি’র দাবী পান্না হুজুর সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। এদিকে নিখোঁজ হওয়ার পর গত ৯ আগস্ট ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন তার স্ত্রী মোছা বেগম ইদ্রিস। তিনি সাংবাদিক সম্মেলনে তার স্বামীকে পুলিশ পরিচয়ে সাদাপোশাকের লোকজন তুলে নিয়ে যাওয়ার কথা জানান। সাংবাদিক সম্মেলনে বলা হয়েছিলো, গত ৪ আগষ্ট রাত ৮টার দিকে শৈলকুপার রামচন্দ্রপুর বাজার থেকে কাপড় ইস্ত্রী করে মোটরসাইকেল যোগে বাড়ি ফিরছিলেন। ইদ্রিস আলী রামচন্দ্রপুর পুলিশ ফাঁড়ির সামনে পৌঁছালে ৩/৪ জনের সাদা পোশাকের পিস্তল ও ওয়ারলেসধারী লোক তাকে তুলে নিয়ে যায়। স্বামীকে ক্রসফায়ারে হত্যার আশংকা করেন স্ত্রী। শুক্রবার লাশ উদ্ধারের পর ঝিনাইদহ হাসপাতাল মর্গে পান্নার ছেলে ফরহাদ, ভাই আব্দুল মান্নান, ভগ্নিপতি মহিউদ্দীনসহ তার স্বজনরা অভিযোগ করেন, পুলিশ বিশেষ কায়দায় হত্যা করে এখন সড়ক দুর্ঘটনার নাটক সাজাচ্ছে। তাদের প্রশ্ন সাদা পোশাকের লোকজন তুলে নিয়ে যাওয়ার পর নিখোঁজ একজন মানুষ কিভাবে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান? ইদ্রিস আলীর লাশের পাশে পড়ে ছিল তার ব্যবহৃত মটরসাইকেল ও ইস্ত্রী করা কাপড়ের ব্যাগ।
এদিকে র‌্যাবের ঝিনাইদহ কোম্পানি কমান্ডার মেজর মনির আহমেদ জানান, শুক্রবার ভোরে দিকে হরিণাকু-ু উপজেলার ফলসি এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন একদল ডাকাত। এ সময় র‌্যাবের টহল গাড়ি সেখানে পৌঁছালে ডাকাতরা গুলি ছোড়ে। আত্মরক্ষার্থে র‌্যাব সদস্যরাও পাল্টা গুলি চালায়। পাল্টাপাল্টি গুলিতে শহিদুল ইসলাম পচা নিহত হন। অন্য ডাকাতেরা পালিয়ে যান। শহিদুল ইসলাম পচার নামে হরিণাকু-ু ও ঝিনাইদহ থানায় হত্যা, অপহরণ, বোমাবাজি ও চাঁদাবাজির কয়েকটি মামলা রয়েছে বলেও তিনি জানান। এ সময় র‌্যাবের দুই সদস্য এএসআই খায়রুল হোসেন ও এপিসি মিজানুর রহমান আহত হন। ঘটনাস্থল থেকে র‌্যাব অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করে। রাতেই তার লাশ থেকে উদ্ধার করে হরিণাকু-ু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। এদিকে পরিবারের ভাষ্য শহিদুল দীর্ঘ দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন।
সুন্দরবনে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ বনদস্যু নিহত
কয়রা (খুলনা) উপজেলা সংবাদদাতা : সুন্দরবনে পুলিশের সাথে ‘বন্দুক যুদ্ধে’ বনদস্যু জোনাব বাহিনীর সদস্য আনারুল সানা (৪৫) নিহত হয়েছে। সে উপজেলার মহারাজপুর গ্রামের জিয়াদ আলী সানার পুত্র।
পুলিশ জানায়, গত বৃহস্পতিবার বেলা ২টার দিকে কয়রা বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে তাকে কয়রা থানায় নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার ও সহযোগীদের সম্পর্কে বিশেষ তথ্য পায় পুলিশ। শুক্রবার ভোর রাত ৪টা ৩৫ মিনিটে কয়রা থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ শমসের আলীর নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল সুন্দরবনের খড়খুড়িয়া নদীর নাপিতখালী খাল এলাকায় অস্ত্র উদ্ধার ও সহযোগীদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আনারুলের সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি বর্ষণ করতে থাকে। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি করলে সহযোগীদের ছোড়াগুলিতে সে নিহত হয়। এ সময় কয়রা থানার তিন পুলিশ কনস্টেবল আমিনুর, জাহিদুল ও শাহ আলম আহত হয়। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ১টি দেশী তৈরী বন্দুক, ৫ রাউন্ড বন্দুকের গুলি, ২টি ধারালো দা উদ্ধার করে।
এ ব্যাপারে কয়রা থানায় ২টি মামলা হয়েছে। কয়রা থানা অফিসার ইনচার্জ শেখ শমসের আলী জানান, নিহত আনারুলের বিরুদ্ধে কয়রাসহ বিভিন্ন থানায় ১টি হত্যা, ২টি অস্ত্র, ৬টি ডাকাতি ও ১টি ডাকাতির প্রস্তুতি মামলাসহ মোট ১০টি মামলা রয়েছে। তার মৃত্যুর খবর শুনে জেলে বাওয়ালীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসলেও আতংকে রয়েছে তার সহযোগীরা। নিহত আনারুল বিগত দিনে নিজ নামে বাহিনী তৈরী করে সুন্দরবনে সন্ত্রাসী কর্মকা- চালিয়ে আসছিলো। পরবর্তীতে আনারুল বাহিনী বিলুপ্ত করে কুখ্যাত বনদস্যু জোনাব বাহিনীর সাথে যোগ দেয়।
রাজধানীতে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ১
স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর কদমতলী থানা এলাকায় র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে দেলোয়ার হোসেন লিটন ওরফে কুত্তা লিটন নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশী পিস্তল, এক রাউন্ড গুলি, ৫১০টি ইয়াবা ও ২৪ শিশি প্যাথেডিন উদ্ধার করা হয়েছে।
র‌্যাব জানায়, কদমতলীর ওয়াসা পানির টাংকির সামনের খোলা জায়গা মাদক কেনাবেচার জন্য ব্যবহার করে মাদক কারবারিরা। কিছুদিন আগেও সেখান থেকে পুলিশ অস্ত্রসহ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছিল। গতকাল (শুক্রবার) ভোরে র‌্যাবের একটি টহল দল ওই স্থানে গেলে সেখানে অবস্থানরত ৬/৭ জন মাদক বিক্রেতা র‌্যাবকে লক্ষ করে গুলি ছুড়তে শুরু করে। র‌্যাবও পাল্টা গুলি করে। এতে লিটন গুলিবিদ্ধ হয়। তার সহযোগীরা পালিয়ে যায়। পরে লিটনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। নিহত লিটনের বিরুদ্ধে ১টি অস্ত্র ও ৯টি মাদক মামলা রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: তিন জেলায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ তিনজনের মৃত্যু
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ