পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইমরান মাহমুদ : পুলে নামা মানেই সবার আগে নিজেকে আবিষ্কার করা, গলায় তুলে নেয়া গর্বের স্বর্ণপদক। কীর্তিতে আগেই নিজের নামের পাশে লিখিয়ে নিয়েছেন কিংবদন্তি খেতাব। এখন যাই করেন তাতেই হয় নতুন নতুন রেকর্ড, ইতিহাস। এবারের রিও অলিম্পিকেও যেন নিজেকে চেনাচ্ছেন নতুন করে। যেই পুলেই নামছেন, পানি নয় যেন সোনা ঝরছে তার শরীর থেকে। গতকাল সকালে আরেকটি স্বর্ণপদক পুরলেন ঝুলিতে। চারে চার হয়ে গেল তাতেই। হয়ে গেল আরেকটি ইতিহাস। এতক্ষণে নিশ্চই বুঝে গেছেন কার কথা হচ্ছে! হ্যাঁ, মাইকেল ফেল্পস। রিও ডি জেনিরোর অ্যাকুয়াটিক ফিনিশ লাইন ছুঁয়েই মাথা উঁচিয়ে স্বভাবসুলভ ভুবনভোলানো চওড়া হাসিটা যেন আরো উজ্জ্বল করল পুলের চারিধার।
২০০ মিটার ব্যক্তিগত মিডলেতে সবার আগে দেয়াল ছুঁয়ে হাতের চারটা আঙুল দেখালেন ফেল্পস। যুক্তরাষ্ট্রের এই সাঁতারু গড়লেন অবিশ্বাস্য আরেকটি রেকর্ড; টানা চার আসরে কোনো ব্যক্তিগত ইভেন্টে চ্যাম্পিয়ন হলেন তিনি। পেয়ে গেলেন অলিম্পিকের ২২তম স্বর্ণপদক! অলিম্পিক ইতিহাসে আর কোনো সাঁতারু কোনো ব্যক্তিগত ইভেন্টে টানা চারটি সোনা জিততে পারেননি। চারটি সোনা আছে আর দুজনের। দুজনই ফেল্পসের স্বদেশী। লং জাম্পে কার্ল লুইস আর ডিসকাস থ্রোতে অ্যাল অর্টার।
রিও অলিম্পিকে নিজের প্রথম সোনাটি ফেল্পস পেয়েছিলেন গেমসের দ্বিতীয় দিনে সতীর্থদের সঙ্গে ৪*১০০ মিটার ফ্রিস্টাইল রিলেতে। এতে প্রথম সাঁতারু হিসেবে অলিম্পিকের চারটি আসরে সোনা জেতা হয়ে যায় তার।
রিও গেমসের ষষ্ঠ দিনে সকালে ১ মিনিট ৫৪.৬৬ সেকেন্ডে সাঁতার শেষ করেন। শুরুর দিকে বেশ পিছিয়ে থাকা জাপানের কোসুকে হাগিনো (১ মিনিট ৫৬.৬১ সেকেন্ডে) রুপা ও চীনের ওয়াং শুন (১ মিনিট ৫৭.০৫ সেকেন্ডে) ব্রোঞ্জ জিতেছেন। ৩১ বছর বয়সী ফেলপসের রিও অলিম্পিকে দুটি ব্যক্তিগত ও দুটি দলীয় সোনা জেতা হলো। লন্ডনে গত অলিম্পিকেও চারটি সোনার পদক গলায় ঝুলিয়েছিলেন তিনি। এর আগে ২০০৪ সালে এথেন্সে ৬টি আর বেইজিংয়ে আটটি সোনা জেতেন সর্বকালের সেরা এই অলিম্পিয়ান।
অলিম্পিকের সব ক্রীড়া মিলিয়ে ব্যক্তিগত কোনো ইভেন্টে টানা চারটি সোনা আছে আর দুজনের। দুজনই ফেল্পসের স্বদেশী। লং জাম্পে কার্ল লুইস আর ডিসকাস থ্রোতে অ্যাল অর্টার।
ফেল্পসের দিনে আলো ছড়িয়েছে জার্মানিও। ষষ্ঠ দিনে রোয়িংয়ে নিষ্পত্তি হয়েছে ছয়টি স্বর্ণপদকের, যার দুটি পেয়েছে জার্মানি।
ছেলেদের টেবিল টেনিসে ব্যক্তিগত ইভেন্টে অলিম্পিক স্বর্ণপদকের সেই হাহাকার ঘুচিয়েছেন চীনের তারকা খেলোয়াড় মা লং। রিও অলিম্পিকের ষষ্ঠ দিনে স্বদেশি ঝ্যাং জাইককে ৪-০ ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়ে সোনালি আভায় নিজের ক্যারিয়ার মোড়ান লং। এই জয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ, বিশ্বকাপ ও অলিম্পিক শিরোপার গ্র্যান্ড স্ল্যাম পূর্ণ করা পঞ্চম খেলোয়াড় হয়ে গেছেন ২৭ বছর বয়সী লং।
স্বদেশী তারকা কি বো-বায়ের ছায়া থেকে বেরিয়ে এসে মেয়েদের ব্যক্তিগত আর্চারিতে সোনা জিতেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার চাং হে-জিন। রিও গেমসের ষষ্ঠ দিন চ্যাং ফাইনালে ৬-২ পয়েন্টে হারান জার্মানির লিসা উনরুহকে। এবারের আসরে চাংয়ের এটা দ্বিতীয় সোনা। আর এই নিয়ে এই ইভেন্টে গত নয় অলিম্পিকের মধ্যে আটবারই চ্যাম্পিয়ন হলো দক্ষিণ কোরিয়া।
ফিজিকে অলিম্পিক ইতিহাসের প্রথম সোনার পদক এনে দিয়েছে ছেলেদের রাগবি সেভেন দল। রিও অলিম্পিকের ষষ্ঠ দিনে ফাইনালে যুক্তরাজ্যকে ৪৩-৭ ব্যবধানে হারায় প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপ রাষ্ট্রটি। এমন কীর্তিতে দেশটিতে চলছে উৎসবের জোয়ার। সাধারণ মানুষের সেই আনন্দ আরো বহুগুণে বাড়িয়ে দিতে রাষ্ট্রীয় ছুটি ঘোষণা করেছে ফিজি সরকার!
১০০ মিটার ব্যাকস্ট্রোকের পর ২০০ মিটারেও সোনা জিতেছেন যুক্তরাষ্ট্রের রায়ান মারফি। এই ইভেন্টে সেই ১৯৯৬ সালের আটলান্টা অলিম্পিক থেকে টানা ছয়টি সোনা জিতল যুক্তরাষ্ট্রের সাঁতারুরা। এক মিনিট ৫৩.৬২ সেকেন্ড সময় নেন ২১ বছর বয়সী মারফি, যা এ বছরের মধ্যে দ্রুততম। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন মিচ ল্যার্কিন রুপা পেয়েছেন। রাশিয়ার এভজেনি রাইলভ হয়েছেন তৃতীয়।
এতকিছুর পর একটি অন্যরকম খবর দিয়ে শেষ করছি আজকের অলিম্পিক পঞ্জি। পুরস্কার মঞ্চে সোনার পদক গলায় একই সঙ্গে দাঁড়িয়ে আছেন দুজন! বাজলো দুই দেশের জাতীয় সঙ্গীতও। মনে হতেই পারে, হয়তো কোনো ভুল হয়েছে। স্বর্ণ তো একজনেরই জেতার কথা, একজনকে কি ভুল করে সোনার পদক দেওয়া হলো? কিন্তু না। মেয়েদের সাঁতারের ১০০ মিটার ফ্রিস্টাইলে সেটিই হয়েছে ৬ষ্ঠ দিন। সাঁতারের ভাষায় যেটিকে ‘ডেড ফিনিশ’ বলা হয়, সেটিই করেছেন কানাডার পেনি ওলেকসিয়াক ও যুক্তরাষ্ট্রের সিমোনে ম্যানুয়েলে। দুজনেই ৫২.৭০ সেকেন্ড সময় নিয়েছেন, সোনার পদকও পেয়েছেন দুজনেই। আগে নাম দেখে উচ্ছ্বাস করছিলেন ম্যানুয়েল। খানিকটা পরে টের পান ওলেকজিয়াক। তারপর সুইমিংপুলেই একে অপরকে জড়িয়ে ধরে আনন্দ ভাগ করেন নেন দুই সাঁতারু।
সাঁতারে অবশ্য ব্যাপারটা নতুন কিছু নয়। ২০০০ সালের সিডনি অলিম্পিকেও এ রকম একটা ঘটনা হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের গ্যারি হল জুনিয়র ও অ্যান্থনি আরভিন, দুজনেই ঠিক একই সময় নিয়ে সাঁতার শেষ করেছিলেন। সোনাও পেয়েছিলেন দুজনই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।