Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের বিনাবেতনে অধ্যয়নের সুযোগ দাবি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০৫ এএম

আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মতিঝিল, বনশ্রী, মুগদা ৩টি ব্রাঞ্চে ২৬ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। এসব শিক্ষার্থীর মধ্যে করোনাকালে অধিকতর ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষার্থীদেরকে বিনা বেতনে পড়ার সুযোগ দিতে দাবি জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটির অভিভাবক ফোরাম। গতকাল রোববার আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ অভিভাবক ফোরামের চেয়ারম্যান ফাহিমউদ্দিন আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক মো. রোস্তম আলী স্বাক্ষরিত স্কুলের গভর্নিং বডির সভাপতি ও প্রিন্সিপালের নিকট দেয়া এক চিঠিতে এই দাবি জানানো হয়।
চিঠিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির ৩টি ব্রাঞ্চে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর ৫২ হাজার অভিভাবক-অভিভাবিকাদের পক্ষে বলা হয়, করোনা মহামরিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের নিরাপত্তায় সাড়ে ৭ মাস শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। শ্রেণিতে সামনা-সামনি পাঠদান হচ্ছে না। অনলাইন পাঠদান গ্রহণযোগ্যও হচ্ছে না। পাঠদানে কেবল ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা করোনাকালে অবরুদ্ধ রয়েছে। এছাড়া করোনাভাইরাস মহামারির কারণে স্কুলে অধ্যয়নরত ২৬ হাজার শিক্ষার্থীর ৬০ শতাংশ অভিভাবক ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৪০ শতাংশ অধিকতর ক্ষতিগ্রস্ত। এরা খারাপ অবস্থায় আছে। ক্ষতিগ্রস্ত অনেকেই বাসা ভাড়া দিতে না পেরে সন্তান ও পরিজনদের নিয়ে গ্রামে চলে গেছে। কারও ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে। কেউ চাকরি হারিয়েছে। অনেকে আর শহরে ফিরে আসবে না। কারও কারও লেখা-পড়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর টিউশন ফি আদায়ে বিভিন্নভাবে চাপ দেয়া হচ্ছে। এমনকি রাতে/ দিনে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বারে বারে ফোন করে বেতন দিতে তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। এটা অমানবিক ও দুঃখজনক।
তারা আরও বলেন, টিউশন ফি না দিলে নাম কেটে দেয়া, ওপরের শ্রেণিতে না তোলা, অনলাইনে ক্লাশ না করতে দেয়াসহ নানাবিধ ভয়-ভীতি দেখানো হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। ৩ মাসের অগ্রিম টিউশন ফি আদায় করা হচ্ছে। অথচ কোন বেসরকারি এমপিওভুক্ত স্কুলে অগ্রিম বেতন আদায় করার নিয়ম নেই। করোনাকালে বিগত ৭ মাস যাবৎ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা মানবতার জীবন যাপন করে আসছে। অথচ এ বিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থী / অভিভাবকদের কোন খোঁজ খবর নেয়নি। স্কুলটি বন্ধ থাকায় প্রতিদিনের অনেক খরচ কমেছে। এই স্কুলের ফান্ডে কোটি কোটি টাকা রয়েছে। এখানে ৮ শতাধিক শিক্ষক-কর্মচারী কর্মরত রয়েছে। প্রিন্সিপাল প্রায় আড়াই লাখ টাকা মাসিক বেতন ভাতা নিচ্ছেন। বিনা ভাড়ায় স্কুল ভবনে ফ্রি থাকছেন। শিক্ষকবৃন্দ বিভিন্ন খাত সৃষ্টি করে বিভিন্ন ভাতা নিচ্ছেন। গভর্নিং বডির সদস্যগণ ঈদ বোনাস নিচ্ছেন। এই স্কুলে শতাধিক শিক্ষক গভর্নিং বডির সহায়তায় অনলাইনে কোচিং বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। অথচ শিক্ষকগণ বিগত জুলাই মাসে ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে লিখিত অঙ্গীকার করেছেন কোচিং বাণিজ্য করবেন না।
অভিভাবকরা অভিযোগ করে বলেন, স্কুলে ৩টি ক্যাম্পাসে অনেক সেকশন অনুমোদন নেই। সরকারি নিয়ম বর্হিভুত এমপিওভুক্ত এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অতিরিক্ত প্রায় ২ শতাধিক শিক্ষক-কর্মচারি কর্মরত রয়েছে। অতিরিক্ত শিক্ষক-কর্মচারির বেতন ভাতা দিতে অভিভাবকরা বাধ্য নয়। স্কুলের আয়-ব্যয়ের হিসাব জনসম্মুখে প্রকাশ করা প্রয়োজন। টিউশন ফি সরকারি নিয়ম অনুযায়ি পুনঃনির্ধারণ করা প্রয়োজন। সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অসচ্ছল শিক্ষার্থীর জন্য ফুল ফ্রি/ হাফ ফ্রি’র ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু আইডিয়াল স্কুলে করোনাকালে এ বিষয়ে কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বরং বিভিন্ন কৌশলে টিউশন ফি দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। নেতৃদ্বয় আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে অধ্যয়নরত ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী করোনাকালে অধিকতর ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় তাদেরকে বিনা বেতনে অথবা অর্ধ বেতনে পড়ার ব্যবস্থা করার দাবি জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ক্ষতিগ্রস্ত-শিক্ষার্থী
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ