Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কুষ্টিয়ায় ২৬১টি চালকল কালোতালিকাভুক্ত হচ্ছে

চালের বাজারে সিন্ডিকেট

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

রাজধানী ঢাকার বাজারে চালের দাম আরও বেড়েছে। সিন্ডিকেটের কারণে কেজিতে বেড়েছে তিন থেকে পাঁচ টাকা। ফলে প্রতি বস্তায় ১৫০ থেকে ২০০ টাকা বাড়তি গুনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোথাও কোথাও সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে চালের দর ৫০ কেজির বস্তায় ৩০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। কেজিতে বেড়েছে ৬ টাকা পর্যন্ত।

এদিকে সিন্ডিকেটের কারণেই কুষ্টিয়ায় বোরো মৌসুমে সরকারের চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। খাদ্য বিভাগের সাথে চুক্তি করেও অসহযোগিতার কারণে কালোতালিকাভুক্ত হচ্ছে কুষ্টিয়ার ২৬১টি চালকল। একই চিত্র নওগাঁসহ চাল উৎপাদনকারী প্রায় সব জেলায়। খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের নিজ জেলা নওগাঁয় চালকল মালিকদের সিন্ডিকেট শক্তিশালী বলে জানা গেছে। গতকাল রাজধানীর শুক্রবার যাত্রাবাড়ী এলাকায় বাজার ঘুরে দেখা গেছে চালের দাম বাড়তি। মোহাম্মদপুর কৃষি বাজারে চালের আড়তে দেখা গেছে, এক দিনের ব্যবধানে কেজিতে ১ থেকে ২ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে চালের দাম। ব্যবসায়ীরা বলছেন, মিল মালিকরা ধানের দাম বেশি দেখিয়ে চালের দাম বাড়িয়েছেন। আবার চাহিদার চেয়েও মিল থেকে কম চাল পাওয়ার অভিযোগও করছেন তারা। ব্যবসায়ীরা সরকারকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
রাজধানীর চাল ব্যবসায়ীদের তথ্য হলো, মিনিকেট চালের দাম বাড়লে বাজারে সব ধরনের চালের দামের ওপরে প্রভাব ফেলে। মিনিকেট চালের দাম বাড়ানোর পেছনে এই চালের উদ্ভাবক কুষ্টিয়ার কিছু ব্যবসায়ী দায়ী। তারা হঠাৎ করে মিনিকেট চালের দাম বাড়িয়ে বিক্রি করায় বাজারে সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) হিসাব মতে, দেশে গত এক বছরে গরিব মানুষের মোটা চালের দাম বেড়েছে ২৭ শতাংশ। চিকন চালের দামও বেড়েছে ১৪ শতাংশ। বাজার ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে খুচরা বাজারে মিনিকেট ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা, আটাশ ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, নাজিরশাইল ৬০ থেকে ৬২ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আর পাইকারি বাজারে প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) মিনিকেট চালের দাম পড়ছে ২৭৫০ থেকে ২৮০০ টাকা, আটাশ ২৪০০ টাকা ও নাজিরশাইল ২৩০০ থেকে থেকে ৩০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ানবাজারের হাজী ইসমাইল অ্যান্ড সন্সের মালিক জসিম উদ্দিন বলেন, সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। চালের দাম বস্তায় ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেড়েছে। চাল আমদানি না করলে আর দাম কমবে না। শনির আখড়ার চাল ব্যবসায়ীরা জানান, কেজিতে সব ধরনের চালের দাম অন্তত দুই টাকা বেড়েছে। মহাখালীর বউবাজারের দোকানি শরিফ মিয়া বলেন, কেজিতে ৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে চালের দাম।
আমাদের সংবাদদাতা জানান, খাদ্য বিভাগের সাথে চুক্তি করেও কুষ্টিয়ায় বোরো মৌসুমে সরকারের চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। চালকল মালিকদের সিন্ডিকেট ইচ্ছে করেই চাল দেয়নি। এই অসহযোগিতার কারণে কালো তালিকাভুক্ত হচ্ছে জেলার ২৬১টি চালকল। জেলা খাদ্য কর্মকর্তা তাহসিনুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, যারা চুক্তি করেও চাল দেয়নি তাদের তালিকা করা হয়েছে। কি কারণে চাল দিতে পারেনি তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আইন অনুযায়ী এসব মিলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। পাশাপাশি এসব মিলের জামানত বাজেয়াপ্ত, প্রণোদনা বাতিল ও আগামী দুই মৌসুম চাল সরবরাহ থেকে চুক্তির বাইরে রাখার মতো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে যাচ্ছে খাদ্য বিভাগ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চালের বাজারে সিন্ডিকেট
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ