Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শিশু মিম মা-বাবার ভালোবাসাতেই খুন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

রাজধানীর কড়াইল বস্তির চাঞ্চল্যকর শিশু মিম (৪) হত্যায় জড়িত একমাত্র আসামি ও নিহতের বড় ভাই আল-আমিন সজিবকে (১৪) গ্রেফতার করা হয়েছে। গত বুধবার রাত ১০ টার দিকে কড়াইল বস্তি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। র‌্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সজিব হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেছে। সে বলছে, বাবা-মায়ের ভালোবাসায় ভাগ বসানোই ছিল তার বোন মিমের অপরাধ।

মৃত মিম আক্তার নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার রাতুলী গ্রামের লিটন মিয়ার মেয়ে। বনানী কড়াইল জামাই বাজার বস্তির হিমেলা বেগমের বস্তিতে পরিবারের সঙ্গে থাকতেন মিম। তার মা রুখসানা আক্তার বাসা বাড়িতে কাজ করে। বাবা রাস্তায় পেয়ারা বিক্রেতা। তাদের দুই সন্তানের মধ্যে বড় ছেলে সজিব এবং ছোট মেয়ে মিম।

মিমের বাবা লিটন মিয়া ঘটনার দিনের বিবরণ দিয়ে জানান, প্রতিদিনের মতো সেদিন সকালে তিনি ও তার স্ত্রী কাজের জন্য বাইরে বের হন। পরে বাসায় ফিরে মেয়েকে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন তারা। কোথাও মেয়েকে না পেয়ে স্থানীয় আল-মদিনা মসজিদের মাইকে মিমকে খুঁজে না পাওয়ার কথা ঘোষণা দেয়া হয়। সকাল ১০টার দিকে বাসা থেকে কিছুটা দূরে একটি গোসলখানায় মিমের লাশ পাওয়া যায়।

গতকাল র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল শাফী উল্লাহ বুলবুল জানান, গত বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় কড়াইল বস্তির জামাইবাজার এলাকার মো. লিটন মিয়ার (৩৯) মেয়ে মিমকে গলা টিপে হত্যা করা হয়। হত্যাকান্ডের তদন্তে নেমে র‌্যাব ১০ ঘণ্টার মধ্যেই মূল অপরাধী মিমেরই বড় ভাই সজীবকে গ্রেফতার করে। সজীব স্থানীয় আইডিয়াল স্কুলের ৫ম শ্রেণিতে পড়ে।

তিনি আরো জানান, সজীবের ভাষ্যমতে, ছোট বোন মিম জন্মের পর থেকে তার প্রতি বাবা-মায়ের ভালোবাসা কমতে থাকে। যত দিন যায় বাবা-মা তার প্রতি উদাসীন হয়ে পড়েন এবং সব ভালোবাসা মিমের দিকে চলে যায়। তার ওপর কারণে-অকারণে চলে বাবার নির্দয় প্রহার। যার দরুণ ছোট বোনের প্রতি তার ক্ষোভ জন্মাতে থাকে এবং সব কিছুর জন্য তাকে দায়ী মনে করে সজীব।

সজীবের আরো অভিযোগ, প্রতিদিন বাসায় ফিরে বাবা মিমকে কাছে ডেকে নিতো এবং আদর করতো। বাইরে থেকে কিছু আনলে তাকে খেতে দিতো। বাবা-মা দুজনই তার ছোট বোনের সব আবদার পূরণ করলেও তার বেলায় বিপরীত ঘটনা ঘটতো। তাই সে ছোট বোন মিমকে বাবা-মায়ের চোখের আড়াল করার জন্য বিভিন্ন ফন্দি আটতে থাকে যাতে করে সে আগের মতো আদর, ভালোবাসা পেতে পারে। এর জন্য সে সুযোগের অপেক্ষা করতে থাকে।

এক পর্যায়ে গত বুধবার সকালে পার্শ্ববর্তী মাদরাসা থেকে পড়া শেষে বাসায় ফেরার সময় সে তার বাবাকে ঘরের বাইরে যেতে দেখে এবং ঘরে ফিরে ছোটবোন মিমকে ঘুমন্ত অবস্থায় পায়। এই সুযোগে ছোট বোনকে গলা টিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং বিছানার নিচে লুকিয়ে ফেলে। পরে তার বাবা বাসায় ফিরে মেয়েকে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি করতে থাকে এবং বাসার বাইরে খুঁজতে যায়। এই সুযোগে সজিব মিমের লাশ পাশের গোসলখানায় রেখে আসে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শিশু-মিম
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ