পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মতবিনিময় সভায় চেয়ারম্যান এম খালেদ ইকবাল
চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম খালেদ ইকবাল বলেছেন, অনিয়ম, দুর্নীতি নির্মূল করে সক্ষমতা বাড়ানোর সাথে সাথে সরকারের গৃহীত ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার’ অর্থনৈতিক করিডোর বাস্তবায়নে সার্বিকভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে অনিয়ম-দুর্নীতি নেই এটা বলা যাবে না, তবে মনিটরিং চলছে, দুর্নীতির কোনো প্রমাণ পাওয়া গেলে তা কঠোরভাবে নির্মূল করা হবে। কাউকে ছাড় দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। বন্দরের সার্বিক কর্মকা-ে সততা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, যন্ত্রপাতি ক্রয়, উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নসহ যে কোনো কাজে দেশ ও বন্দরের স্বার্থকেই অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। নানা কারণে বন্দরে জট সৃষ্টি হয়েছে স্বীকার করে জাহাজজট কমিয়ে বন্দরকে আরও বেশি গতিশীল করতে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলেও জানান বন্দর চেয়ারম্যান। চট্টগ্রাম বন্দরের সার্বিক কার্যক্রম এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পা বিষয়ে গতকাল (বুধবার) শহীদ মো: ফজলুর রহমান মুন্সি অডিটোরিয়ামে সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় বন্দর চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন। আমদানি-রফতানি বাড়ার সাথে সাথে বন্দরের সক্ষমতা বাড়ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নতুন ইয়ার্ড নির্মাণ করা হচ্ছে, পুরনো ইয়ার্ডে ধারণক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে। নতুন নতুন যন্ত্রপাতি সংযোজিত হচ্ছে, প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি করে বন্দরের গতিশীলতা বাড়ানো হচ্ছে।
ফলশ্রুতিতে আগের অর্থ বছরে যেখানে ৬ কোটি ১৭ লাখ ২৫ হাজার ৮৬৫ মেট্রিক টন এবং ১৮ লাখ ৬৭ হাজার ৬২ টিইইউস কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করা হয়েছে সেখানে গেল অর্থ-বছরে (২০১৫-১৬) ৭ কোটি ১১ লাখ ৫৬ হাজার ৩৮৭ মেট্রিক টন এবং ২১ লাখ ৮৯ হাজার ৪৩৯ টিইইউস কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু, ঈদের ছুটিসহ বিভিন্ন কারণে বন্দরে কিছুটা জটের সৃষ্টি হয়েছিল স্বীকার করে বন্দর চেয়ারম্যান এম খালেদ ইকবাল বলেন, সময়োচিত পদক্ষেপ এবং কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণের ফলে জট এখন সহনীয় পর্যায়ে চলে এসেছে। এই সমস্যা সমাধানে ড্রাইডক জেটিতে জরুরি ভিত্তিতে জাহাজ বার্থিং দেয়া, নাইট নেভিগেশনের জন্য পারমিজিবল লেন্থ ১৬৫ মিটার থেকে ১৭০ মিটারে উন্নীত করায় ত্রিশটির বেশি জাহাজ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তিনি বলেন, ১৫০০ খালি কন্টেইনার ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন ওভারফ্লো ইয়ার্ড নির্মাণ করা হয়েছে। টার্ন এরাউন্ড টাইম নিয়ন্ত্রণে রাখা হচ্ছে এবং নিয়মিত খালি কন্টেইনার জাহাজের মাধ্যমে সিঙ্গাপুরে শিপমেন্ট করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতিতে চট্টগ্রাম বন্দরের অপরিসীম গুরুত্ব বিবেচনা করে বর্তমান সরকারের দিক-নির্দেশনায় বন্দরের কার্যক্রমকে আরও সম্প্রসারণ ও গতিশীল করতে ইতোমধ্যে স্ট্র্যাটেজিক মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন করা হয়েছে। ফেনী ও মিরসরাইয়ে অর্থনৈতিক জোনকে সহযোগিতা দিতে ওই এলাকায় একটি মধ্যম আকারের বন্দর বা টার্মিনাল নির্মাণের প্রাক সম্ভ্যাবতা সম্পন্ন করা হয়েছে।
১২৯ বছরের পুরনো চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতির প্রাণশক্তি উল্লেখ করে এম খালেদ ইকবাল বলেন, স্ট্র্যাটেজিক মাস্টার প্ল্যান এবং ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে বন্দরের জেটি ও ইয়ার্ড সম্প্রসারণ, ইক্যুপমেন্ট ক্রয় প্রক্রিয়াসহ সার্বিক সক্ষমতা বৃদ্ধির পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সক্ষমতা বাড়াতে পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণ, ৭নং খালের পাশে ১০ একর জমিতে কন্টেইনার ইয়ার্ড নির্মাণ, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) ভিত্তিতে লালদিয়ার চরে টার্মিনাল নির্মাণ করা হচ্ছে।
বে-টার্মিনাল নির্মাণের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনার লক্ষ্যে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আগামী ২০২১ সালের মধ্যে এর প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হবে। সার্ভিস জেটি ও লাইটারেজ জেটি তৈরি করা হবে এবং কর্ণফুলী নদীর নাব্যতা ক্যাপিটেল ড্রেজিং ও সংরক্ষণ ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে বজায় রাখা হবে। মতবিনিময় সভায় বন্দরের সার্বিক কার্যক্রম ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে একটি তথ্যচিত্র উপস্থাপন করেন বন্দরের সদস্য (যুগ্মসচিব) পরিকল্পনা ও প্রশাসন জাফর আলম। এসময় বন্দরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।