পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকলাব ডেস্ক : গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় দেশের দুটি গুরুত্বপূর্ণ নৌরুট শিমুলিয়া-কাওড়াকান্দি ও পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায় যাত্রী দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। নৌরুট দুটির দুই পাড়ে শত শত যানবাহন আটকে পড়েছে। রুটে লঞ্চ, ফেরিসহ সকল নৌযান বন্ধ রয়েছে।
শিমুলিয়া-কাওড়াকান্দি নৌরুটে যাত্রী ভোগান্তি
মাদারীপুর জেলা ও শিবচর উপজেলা সংবাদদাতা জানান, বৈরী আবহাওয়ায় পদ্মা নদী উত্তাল হয়ে ওঠায় বুধবার শিমুলিয়া-কাওরাকান্দি নৌরুটে ডাম্ব ফেরি, লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ ছিল। ভেঙে গেছে কাওড়াকান্দির স্পিডবোট পন্টুন। এ অংশে ২নং সর্তক সংকেত দেখানো হয়েছে। এর সাথে নাব্যতা সংকটে অচলাবস্থা প্রকট রূপ নিয়েছে। এতে যাত্রী দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। এদিকে নৌযান চলাচলে অচলাবস্থা ও পাটুরিয়া রুটের সংকটে বাড়তি চাপ হওয়ায় এ রুটের উভয় ঘাটের ৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন ছিল।
বিআইডব্লিউটিসিসহ একাধিক সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে বৈরী আবহাওয়ার কারণে এ রুটের পদ্মা নদীতে ২নং সতর্ক সংকেত দেখানো হয়। নদী উত্তাল হয়ে ওঠায় গত রাত থেকে এ রুটের ডাম্ব ফেরিগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়। মধ্যরাতে একটি রো রো ফেরি ধাক্কায় ভেঙে যায় কাওড়াকান্দির স্পিডবোট পন্টুন। বুধবার সকাল থেকে বন্ধ করে দেয়া হয় সকল লঞ্চ ও স্পিডবোট। এতে যাত্রী দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করে। এদিকে নৌযান চলাচলে অচলাবস্থা ও পাটুরিয়া রুটের সংকটে এ রুটের উভয় ঘাটে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন পড়ে। গত কয়েকদিনে পদ্মা নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে কমতে থাকায় এরুটের নৌচ্যানেলে নাব্যতা সংকট প্রকট আকার ধারন করায় সংকট আরো বেড়েছে। পদ্মায় তীব্র ¯্রােত থাকায় প্রচুর পরিমান নদী ভাঙ্গনের পলি আসায় পরিস্থিতি আরো নাজুক করে তুলেছে নৌ চ্যানেলের।
বিআইডব্লিউটিএ উপপরিচালক এসএম আসগর আলী বলেন, পদ্মা নদী খুবই অশান্ত থাকায় ২ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখানো হয়েছে। সকল লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিসি কাওরাকান্দি ঘাট ম্যানেজার আ. সালাম বলেন, নদীতে নাব্যতা সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। ধারণক্ষমতার কম যানবাহন নিয়ে ফেরিগুলো চলাচল করতে হচ্ছে। তার উপর বৈরী আবহাওয়ার কারণে মঙ্গলবার রাত থেকে ডাম্ব ফেরিগুলো চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে ঘাট এলাকায় কিছু যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে। তবে আমরা যাত্রীবাহী পরিবহন ও কাঁচামালবাহী ট্রাক অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পারাপার করছি।
পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটের ফেরি ও লঞ্চ সার্ভিস বন্ধ
আরিচা সংবাদদাতা জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়েছে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ-রুটের ফেরি ও লঞ্চ সার্ভিস। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগ ব্যাবস্থা। দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রী ও যানবাহ শ্রমিকরা। নদীতে প্রবোল ¯্রােত এবং ভাঙন ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে উক্ত নৌ-রুটে ফেরি, লঞ্চসহ সকল ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে এ পথে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সহজ যোগাযোগ ব্যাবস্থা একেবারেই ভেঙে পড়েছে। এদিকে গত মঙ্গলবার বিকেলে ঝড়ো বাতাসে উত্তাল ঢেউয়ের মধ্যে ১১ জন যাত্রী নিয়ে আরিচা থেকে কাজিরহাট যাওয়ার পথে যমুনা নদীতে একটি স্পীডবোট উল্টে যায়। তবে যাত্রীদের কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশ অভ্যান্তরিন নৌ-পরিবহন করর্পোরেশন বিআইডব্লিউটিসির সূত্রে জানা যায়, পদ্মায় প্রবোল ¯্রােত ও নদী ভাঙ্গনের কারণে গত রবিবার সকাল থেকে দৌলতদিয়ায় তিনটি ফেরিঘাট নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এতে বুধবার দুপুরে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ-রুটে খুব সীমিত আকারে ছোট ফেরি চলাচল করলেও চার দিন ধরে বন্ধ রয়েছে বড় ফেরি চলাচল। এ অবস্থায় কোচ ও বাসের যাত্রীরা ঘাটে এসে লঞ্চ যোগে নদী পারাপার হয়ে গন্তব্যে পৌঁছাত। কিন্তু দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে অবশেষে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ-পথে যাত্রীদের পারাপারের একমাত্র ভরসা ছিল লঞ্চ তাও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মেঘমালার প্রভাবে পদ্মা নদীতে উত্তাল ঢেউয়ের সৃষ্টি হয়। কর্তৃপক্ষ দুর্ঘটনা এড়াতে মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টা থেকে উক্ত নৌ-রুটে লঞ্চসহ সকল ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেন। হঠাৎ করে লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পাটুরিয়া ও দৌলতদিয়া ঘাটে শত শত যাত্রী আটকে পড়ে। নদী পারাপার হতে না পেরে অনেক যাত্রীকে ঘাটেই রাতযাপন করতে হয়। এদিকে বুধবার সাড়া দিন গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি থাকায় খোলা আকাশের নিচে বৃষ্টিতে ভিজে ঘাটে আটকে পড়া যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) মো. ফরিদুল ইসলাম জানান, ঘূর্ণিঝড় মেঘমালার প্রভাবে পদ্মা-যমুনায় ঝড়ো বাতাসে উত্তাল ঢেউয়ের সৃষ্টি হয়। এতে দুর্ঘটনা এড়াতে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া এবং আরিচা-কাজিরহাট নৌ-রুটে লঞ্চ ও স্পিডবোটসহ সকল ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে এ নৌরুটে লঞ্চ চলাচল শুরু করবে।
দক্ষিণ-পশ্চিমের সঙ্গে
রাজধানীর সড়ক যোগাযোগ বিপর্যস্ত
বিশেষ সংবাদদাতা যশোর থেকে জানান, দৌলতদিয়া ঘাটে অচলাবস্থার কারণে যশোর, ঝিনাইদহ, সাতক্ষীরা ও বেনাপোলসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সিংভাগ রুটের সঙ্গে রাজধানীর সড়ক যোগাযোগ গত দু’দিন কার্যত বন্ধ। এ অঞ্চলের সড়ক যোগাযোগের প্রধান রুট মূলত দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া। পদ্মায় পানি বৃদ্ধিতে দৌলতদিয়োর ঘাটগুলো প্রায় অচল হয়ে পড়ে গত কয়েকদিন। গত পরশু রাত থেকে একটি দিয়ে কোনরকমে ছোট বড় কিছু যানবাহন চলাচল শুরু করেছে। তবে দুরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস ও পণ্যবাহী সংখ্যা একেবারেই হাতেগোনা। কিছু যানবাহন যাচ্ছে যমুনা সেতু হয়ে। এছাড়া গতকাল দিরভর মুষলধারে বৃষ্টি হওয়ায় এ অঞ্চল থেকে রাজধানীগামী যানবাহন চলেনি বললেই চলে। এর আগের কয়েকদিনও দেওলতদিয়ায় বাস ও ট্রাক আটকে ছিল।
যশোরসহ কয়েকটি জেলার শহরের পরিবহন কাউন্টারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুরপাল্লার পরিবহন চলাচল স্বাভাবিক না হওয়ায় যাত্রী নেই বললেই চলে। অনেক পরিবহন কাউন্টার গতকাল দিনভর বন্ধ থাকতে দেখা গেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।