পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঘটনার পর পাঁচ মাস অতিবাহিত হলেও বিচার শুরু হয়নি করোনাকালিন চাল চোরদের। তদন্তের ধীরগতি, গ্রেফতারকৃতদের একে একে জামিন লাভ এবং তদন্তের ওপর প্রভাব বিস্তার এবং তদন্ত কর্মকর্তাদের আন্তরিকতার অভাবে দাখিল হচ্ছে না তদন্ত প্রতিবেদনও। আর এ কারণেই বিলম্বিত হচ্ছে মহামারিকালে সংঘটিত চাল ও ত্রাণ চুরির বিচার। অথচ ত্রাণসামগ্রী এবং চাল চুরির ঘটনা সে সময় অত্যন্ত বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছিল সরকারকে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)সহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো অগ্রাধিকারভিত্তিতে এসব অপরাধের তদন্ত সম্পন্ন করার ঘোষণাও দিয়েছিল।
দুদক সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চলতি বছর মার্চ-এপ্রিলের দিকে যখন দেশে করোনা মহামারি আকারে আবিভর্‚ত হয় তখন সরকার সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনি কার্যক্রমের আওতায় সহায়তামূলক নানা উদ্যোগ গ্রহণ করে। মানবিক এসব উদ্যোগকে প্রবল বিতর্কের মুখে ঠেলে দেন সরকারদলীয় কিছু স্থানীয় নেতৃত্ব এবং স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধি। ঘরের ভিটা খুড়ে তখন ত্রাণের চাল উদ্ধার করা হয়। খাটের তলায় মেলে সয়াবিন তেলসহ টিসিবির পণ্য। একের পর এক ত্রাণ চুরির ঘটনা ধরা পড়ার পর সরকার এ বিষয়ে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করে।
স্থানীয় সরকারের কাছ থেকে ত্রাণ সমন্বয়ের দায়িত্ব প্রত্যাহার করে দেয়া হয় জেলা প্রশাসনকে। দুদকসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো প্রতিটি ঘটনার পরপরই মামলা করে। তদন্তও শুরু করে। তদুপরি চাল চুরির সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের ত্বরিৎ বিচার এবং শাস্তি নিয়ে সে সময় সংশয় ও উদ্বেগ প্রকাশ করেন আইনজ্ঞ এবং বিচার সংশ্লিষ্টরা। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পদ্ধতিগত তদন্ত এবং বিচারিক দীর্ঘসূত্রিতার বাস্তবতা থেকেই তারা প্রকাশ করেন এ সংশয়।
সূত্রমতে, গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগ শনাক্ত হয়। ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। গণপরিবহন বন্ধ করে দেয়া হয়। পরপরই শুরু হয় অঘোষিত ‘লকডাউন’। এর ফলে স্থবির হয়ে যায় সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকা। কর্মহীন হয়ে পড়েন দেশের কয়েক কোটি মানুষ। করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার নানা উদ্যোগ নেয়।
এর মধ্যে রয়েছে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় ন্যায্য মূল্যে টিসিবি’র নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী বিতরণ, ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে দুস্থদের মাঝে পণ্যসামগ্রী বিতরণ, ১০ টাকা কেজি দরে চাল এবং সরাসরি ত্রাণসামগ্রী বিতরণ। এসব বিতরণ প্রক্রিয়ায় সরকার নিয়োজিত ডিলার এবং জনপ্রতিনিধিদের ওপর নির্ভর করে। এর ফলে বিভিন্ন জেলায় চাল চুরির অভিযোগ ওঠে। জনপ্রতিনিধিদের ভিটা খুড়ে সরকারি চাল উদ্ধার করা হয়। ডিলারের বাসায় খাটের নিচ থেকে টিসিবির সয়াবিন তেল জব্দ করা হয়। ভিজিডি কার্ড বিতরণে ঘুষ আদায়ের অভিযোগ ওঠে। সরকারদলীয় বেশ কয়েকজনকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে শাস্তি দেয়া হয়।
চাল চুরির সঙ্গে জড়িত সরকারদলীয় ব্যক্তিদের দলীয় পদ থেকে বহিষ্কারও করা হয়। জনপ্রতিনিধি, নিযুক্ত ডিলারদের ‘প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী’ সংজ্ঞায় ফেলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। ত্রাণের চাল চুরির অভিযোগে ইউনিয়ন পরিষদের শতাধিক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়। দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ তখন বলেছিলেন, সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে কোনো প্রকার অনিয়ম-দুর্নীতি সহ্য করা হবে না। কিন্তু ওই বক্তব্যের পর পাঁচ মাস অতিবাহিত হলেও চাল চুরির দায়ে অভিযুক্তদের এখন পর্যন্ত আদালতের কাঠগড়ায় তোলা যায়নি।
তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল না হওয়াই এর প্রধান কারণ বলে জানান আইনজ্ঞ মনজিল মোরসেদ। তিনি বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল না হলে বিচার শুরু হবে কিসের ভিত্তিতে। বিচার শুরু হলেও বিচারিক দীর্ঘসূত্রিতার বাস্তবতাও রয়েছে। ফলে করোনাকালিন চাল ও ত্রাণসামগ্রী চুরির বিষয়টি যে গতিতে প্রচার পায় সেই গতিতে বিচারে উঠছে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।