Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ধর্মের সর্বনাশটা ওরাই করছে : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ১০ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক

ইসলামের নাম নিয়ে মানুষ হত্যার মাধ্যমে জঙ্গিরা ‘শান্তির’ এই ধর্মকে মানুষের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবনে গতকাল বিকালে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে আর্থিক অনুদানের চেক গ্রহণ অনুষ্ঠানে একথা বলেন তিনি। জঙ্গিবাদ নির্মূলে সরকারের দৃঢ় অবস্থানের ঘোষণা করে শেখ হাসিনা বলেন, “এই ধর্মটার সব থেকে বেশি সর্বনাশ নিজেরাই (জঙ্গি-সন্ত্রাসীরা) করছে, এটাই হচ্ছে সব থেকে দুঃখজনক।
“শান্তির ধর্ম ইসলামের নাম নিয়ে মানুষ খুন করে ‘আমাদের ধর্মকে’ তারা হেয় করে দিচ্ছে, ছোট করে দিচ্ছে, মানুষের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করে দিচ্ছে।”
জঙ্গি-সন্ত্রাসবাদকে ‘মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ’ আখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের তা মোকাবেলার সামর্থ্য রয়েছে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। দেশে সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সমস্যা আসবে, সমাধান আমাদের করতে হবে। সমাধান করি আমরা। সমাধান আমরা করব। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, সেটাও যেমন আমরা মোকাবেলা করতে পারি, মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগও ইন-শা আল্লাহ আমরা মোকাবেলা করতে পারব।”
পহেলা জুলাই গুলশানের একটি ক্যাফেতে নজিরবিহীন জঙ্গি হামলায় ১৭ বিদেশি নাগরিক ও দুই পুলিশসহ ২২ জন নিহত হন। পরে কমান্ডোরা অভিযান চালিয়ে ছয়জনকে হত্যা করে, যাদের পাঁচজন জঙ্গি। এর এক সপ্তাহের মাথায় শোলাকিয়ায় দেশের সবচেয়ে বড় ঈদের জামায়াতের কাছে জঙ্গিরা হামলা চালিয়ে দুই পুলিশকে হত্যা করে। পরে পুলিশের গুলিতে নিহত হয় এক জঙ্গি।
এরপর দেশব্যাপী জঙ্গিবিরোধী অভিযান ও জনসচেতনামূলক কাজ শুরু হয়েছে। ঢাকার কল্যাণপুরে একটি বাড়িতে পুলিশি অভিযানে নয় জঙ্গি নিহত হয়েছে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কয়েকজন জঙ্গি ধরাও পড়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের সিদ্ধান্তই আছে যে, কোনো ধরনের জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসকে আমরা প্রশ্রয় দেব না। এ ব্যাপারে আপনাদেরও সহযোগিতা আমরা চাই। যে যেখানে আছেন, সেখানে কেউ যেন এর সাথে (জঙ্গি-সন্ত্রাস) যুক্ত হতে না পারে এ ব্যাপারে সবাইকে আরও সতর্ক হতে হবে, সজাগ হতে হবে।”
সরকার জঙ্গি-সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে মানুষের ভিতর সচেতনতা সৃষ্টি করতে পেরেছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “একেবারে গ্রাম থেকে মানুষ এখন সচেতন।”
অনুষ্ঠানে দেশের বেসরকারি ব্যাংকের মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) সদস্যভুক্ত ৩১টি ব্যাংকের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুদানের চেক তুলে দেন ব্যাংকগুলোর প্রতিনিধিরা।
এছাড়া ব্যবসায়ীদের আরও তিনটি সংগঠন এবং একাধিক ব্যবসায়ী গ্রুপের পক্ষ থেকেও অনুদানের চেক হস্তান্তর করা হয়। বিএবি’র চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের সঞ্চালনায় চেক গ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে অনুদান দেয়া ব্যবসায়ীদের ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা
“আপনারা যে সহযোগিতা দেন তা সাধারণ মানুষের কাজে লাগে। এটা মানুষের কল্যাণেই যায়।”
এসময় প্রধানমন্ত্রী বন্যা কবলিতদের জন্য সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “যখনই আমরা দেখছি বন্যা আসছে, সাথে সাথে যা যা দরকার স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে সব আমরা দিয়ে দিয়েছি। রোগের প্রাদুর্ভাব যাতে না দেখা দেয়, আগে থেকেই সে ব্যবস্থাও আমরা নিয়েছি।” দুর্গম এলাকায় ত্রাণ পৌঁছানোর ব্যবস্থাও করা আছে বলে জানান তিনি।
বিভিন্ন বেসরকারি ব্যাংকের শীর্ষ কর্তাদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, “বেসরকারি খাতকে আমরা উন্মুক্ত করে দিয়েছি। বেসরকারি খাত এত বেশি প্রাধান্য কখনও পায়নি।”
১০ টাকায় ব্যাংক হিসাব খোলার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ব্যাংক ব্যবহার করতেও মানুষকে আমরা উৎসাহিত করেছি। তার সুফলটাও আপনারা পাচ্ছেন। ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ছে।” দেশের অর্থনীতি এখন ‘অনেক গতিশীল’ বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “আমাদের দেশে সাধারণত বর্ষাকালে জিনিসের দাম বাড়ে। এবার কিন্তু জিনিসের দাম আমরা বাড়তে দেইনি। “ইনফ্ল্যাশন রেট এখন মাত্র ৫ দশমিক ৪ ভাগে নামিয়ে এনেছি। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আছে। অর্থাৎ মানুষের আর্থিক স্বচ্ছলতা আছে।” সূত্র : বিডিনিউজ



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ধর্মের সর্বনাশটা ওরাই করছে : প্রধানমন্ত্রী
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ