পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আফজাল বারী : জোবাইদা রহমানকে নিয়ে মুখরোচক শিরোনাম হচ্ছে দেশীয় কিছু মিডিয়ায়। ওই সকল মিডিয়ায় তাকে ডাক্তার থেকে রাজনীতিক বানানোর চেষ্টা করছে। জোবাইদা রহমান বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও দলটির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বড় পুত্রবধূ। তাকে দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে (!) বসানো হতে পারে বলে খবর প্রকাশ করছে মিডিয়া। গত শনিবার দলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার পর এ আলোচনার ডালপালা ছড়াতে থাকে। মিডিয়ার পাতা থেকে এ খবর গড়িয়েছে মন্ত্রিসভায়। তাতে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনাও বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করেছেন। রাজনীতিতে আগমনের খবরে ভূয়সী প্রশংসা করেছেন তিনি।
এদিকে পুত্রবধূ জোবাইদা রহমান রাজনীতিতে আসবেন এমন কোনো ইঙ্গিত দেননি বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। স্বামী তারেক রহমান কিংবা জোবাইদা রহমান নিজেও এমন কোনো শব্দও উচ্চারণ করেননি। দলীয় মুখপাত্রও এ বিষয়ে কিছু জানায়নি। তারপরও খবরের বিরতি নেই।
জোবাইদা রহমান আদৌ কী রাজপথে পা রাখছেন বা আনা হচ্ছে? এমন প্রশ্নের উত্তর জানতে জিয়া পরিবারের সদস্য ও বিএনপির একাধিক সিনিয়র নেতার সাথে যোগাযোগ করা হয়। জানা যায়, কিছু মিডিয়া এবং শাসক দলের মধ্যে আলোচনা থাকলেও বিষয়টি নিয়ে পুরোটাই অন্ধকারে বিএনপির নীতি-নির্ধারক ও জিয়া পরিবার। বিস্ময় প্রকাশ করেছেন জোবাইদা রহমান নিজেও।
এ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ ইনকিলাবকে বলেন, যারা জিয়া পরিবারের ভালো চায় না এবং বিএনপির প্রতিপক্ষ তারাই ডাক্তার জোবাইদাকে রাজনীতিবিদ হিসেবে জাহির করতে চায়। শুধু জোবাইদা রহমানই নয় মরহুম আরাফাত রহমান কোকো’র স্ত্রীকেও রাজনীতিতে দেখতে চায়।
সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, বিএনপিতে স্বামীর অবর্তমানে স্ত্রী বা পুত্র শূন্যস্থান পূরণ করার নজির আছে। কিন্তু বিএনপিতে এমন কি পরিস্থিতির সৃষ্টি হলো যে চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া এবং সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান তারেক রহমান জীবিত থাকা অবস্থায় তারেক-পতœী জোবাইদাকে বিএনপির হাল ধরতে হবে? প্রশ্ন রেখে হান্নান শাহ বলেন, এ খবর কি মিন (বুঝায়) করে? তার মতে, খালেদা জিয়া, তারেক রহমানকে অকার্যকর বুঝাতে এবং দলের মধ্যে মতবিরোধ সৃষ্টি করতেই রাজনৈতিক অঙ্গনে এই বায়বীয় খবর ছড়ানো হচ্ছে।
জিয়া পরিবারের আইনজীবী লন্ডনের তারেক রহমানের পরিবারের সাথে যোগাযোগ রাখেন, দলের মহাসচিব পর্যায়ের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইনকিলাবকে জানান, কিছু কিছু পত্রিকায় এ ধরনের খবর প্রকাশের পর রীতিমতো বিস্ময় প্রকাশ করেছেন ডা. জোবাইদা রহমান। দলের সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান তারেক রহমানও ওইসব খবর প্রকাশকারী মিডিয়াকে ক্ষমতাসীনদের ‘তল্পিবাহক’ মিডিয়া বলে আখ্যা দিয়েছেন। প্রকাশিত খবরের নেপথ্যে অসৎ উদ্দেশ্য রয়েছে বলেও আলাপকালে ওই আইনজীবীর কাছে মন্তব্য করেছেন তারেক রহমান। এদিকে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াও গতকাল এ ধরনের খবরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
সূত্র মতে, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর কারামুক্তির পর চিকিৎসার জন্য লন্ডন যান। স্বামীর সাথে সেখানে অবস্থান করছেন জোবাইদা রহমান। কন্যা জায়মা রহমানকে লেখাপড়া করাচ্ছেন সেখানেই। নিজেও চিকিৎসার উপর উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করছেন।
দলীয় সূত্রের খবর, ডা. জোবাইদা রহমান ইমপেরিয়াল কলেজ অব লন্ডন থেকে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে মাস্টার্স অব কার্ডিওলজি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। চার বছরের মাস্টার্স অব কার্ডিওলজিতে (এমএসসি ইন কার্ডিওলজি) ডিস্টিংশনসহ শতকরা ৮৩ ভাগ নম্বর পেয়ে প্রথম হয়েছেন ডা. জোবায়দা। যেখানে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইউই), কমনওয়েলথভুক্ত দেশ, নাইজেরিয়া, চীনসহ মোট ৫৫টি দেশের ছাত্র-ছাত্রীরা এই কোর্সে অংশ নিয়েছিলেন।
দেশে থাকাকালে ১৯৯৫ সালে বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারে উন্নীত হয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সামান্য চাকরিই বেছে নেন তিনি। সর্বশেষ টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর স্বাস্থ্য উপকেন্দ্রে চিকিৎসাসেবা দেন। এরপর থেকেই বিদেশে। ইতোমধ্যে তাকে চাকরিচ্যুত করে তা জাতীয় সংসদে ঘোষণা দিয়েছেন তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
একই সূত্র জানায়, জিয়া পরিবারের সদস্য হওয়ার আগে থেকেই জোবাইদা রহমান রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য। জোবাইদার পিতা মাহবুব আলী খান ছিলেন বাংলাদেশের নৌবাহিনীর প্রধান। দাদা আহমেদ আলী খান ছিলেন প্রথম মুসলিম ব্যারিস্টার (১৯০১ সাল)। তিনি নিখিল ভারত আইন পরিষদের সদস্য (এম এল এ) ও আসাম কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। মরহুম মাহবুব আলী খানের মাতার নামও ছিল জুবাইদা খাতুন। পিতা-শ্বশুর দুই কুলে রাজনৈতিক পরিবার। তারপরও রাজনীতিকে পেশা হিসেবে কখনই বেছে নিতে চাননি জোবাইদা। নিয়েছেন চিকিৎসাকে। একই মনোভাব রয়েছে এখনো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।