পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
তুহিনের ফিরে আসার প্রহর গুণছে পরিবার
শ্রীপুর (গাজীপুর) উপজেলা সংবাদদাতা : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার ও একটি বেসরকারি কোম্পানীতে কর্মরত রিদোয়ানুল ইসলাম তুহিন (২৯) প্রায় দেড় বছর ধরে পরিবারের অজান্তেই রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ রয়েছেন।
তুহিনের ফিরে আসার অপেক্ষার প্রহর গুণছে তার পরিবার। নিখোঁজ তুহিন গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার কেওয়া পশ্চিম খ- গ্রামের মৃত তৌহিদুল ইসলাম ও কুসুম কলী দম্পতির পুত্র। সে গত ৩১ জানুয়ারি ২০১৫ইং তারিখে ঢাকার কলাবাগান থেকে নিখোঁজ হয়। এ ঘটনায় তুহিনের ছোট ভাই তানিম ইসলাম বাদী হয়ে কলাবাগান থানায় ৫ ফেব্রুয়ারি’১৫ তারিখে জি.ডি নং ১৮২ দায়ের করেন। তুহিনের পরিবার ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, তুহিন ঢাকাস্থ উত্তরার রাজউক মডেল উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজে ভর্তি হয়ে কৃতিত্বের সাথে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ২০০৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স বিষয়ে ভর্তি হয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন। তুহিনের মা কুসুম কলি জানান, তার পুত্র পড়ালেখা শেষ করেই স্যামসাং সফটওয়্যার কোম্পানীতে ভাল বেতনে চাকরি নেয়। সে ঢাকার ২০/২১ কাঁঠাল বাগানের একটি বাড়িতে সহকর্মী রাকিবকে নিয়ে অপর বন্ধু রাজশাহীর সাহারা থানার ওসমান আলীর পুত্র সাঈদ জাকিসহ ৩ জন মিলে ঐ বাড়ির একটি মেসে ভাড়া থাকত। তার মা আরও জানান, চাকরি লাভের পরই রাতারাতি বদলে যায় তুহিন। তুহিনের মামা শ্রীপুরের কেওয়া গ্রামের মাহতাব উদ্দিন জানান, ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে লেখাপড়া করাকালীন সময়ে সে তবলীগ জামায়াতের সাথে সম্পৃক্ত হয় এবং চল্লিশ দিনের এক চিল্লা দিয়ে নিয়মিত নামাজ আদায়সহ ধার্মিক জীবন শুরু করে। মাঝে মাঝে তাকে তাহাজ্জুতের নামাজ পড়তে দেখতেন তার মা। তুহিনের বদলে যাওয়াটা মায়ের চোখে ধরা পড়লেও ছেলে বিপদগামী হয়ে গেছে এমনটি বুঝে উঠতে পারেননি। স্থানীয় প্রতিবেশী ফয়সাল জানান, তুহিন খুবই নম্র, ভদ্র, মেধাবী ও বিশ্বাসী ছেলে ছিল। তার দীর্ঘ সময় নিখোঁজ থাকার বিষয়ে এলাকাবাসীর মনে সন্দেহেরে সৃষ্টি হয়েছে সে জঙ্গি সংগঠনের সাথে জড়িয়ে পড়েছে। পরিবারের লোকজন জানায়, নিখোঁজ হওয়ার পূর্বে তুহিন রুমের লোকদের কাছে সে সউদী আরব যাওয়ার কথা বলে নিখোঁজ হয়। তুহিনের মা জানান, ২০১৫ সালের ৩১ জানুয়ারি রাতে তুহিন আমার সাথে সর্বশেষ ফোনে কথা বলে। এরপর থেকে সে নিখোঁজ রয়েছে। গত ১ জুলাই ঢাকার গুলশানে জঙ্গি হামলা হওয়ার পর নিখোঁজ ব্যক্তিদের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টনক নড়লে জুলাই মাসের ১৫ তারিখে তুহিনের ব্যাপারে ব্যাপক খোঁজখবর নেয়া শুরু করে কলাবাগান থানা পুলিশ। এরই ধারাবাহিকতায় তুহিনের ব্যাপারে খোঁজখবর নিতে থাকে শ্রীপুর থানা পুলিশ। স্থানীয়দের ধারণা, তুহিন কোন জঙ্গি সংগঠনের সাথে জড়িয়ে অজ্ঞাত স্থানে নিখোঁজ রয়েছে। তুহিনের মা কুসুম কলি নিখোঁজ পুত্রের শোকে ইতিমধ্যেই মুষড়ে পড়েছেন। আর্তনাদের সুরে তিনি বলেন, আমার ছেলে গত দশ বছর ধরে রাতে ফোনে কথা না বলে ঘুমাতো না। গত দেড় বছর ধরে সে আমার সাথে ফোনে কোন যোগাযোগ করে না। তুহিনের ফিরে আসার প্রহর গুণে অপেক্ষা করছেন তার মা কুসুম কলি। এ ব্যাপারে শ্রীপুর থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ফরিদ জানান, তুহিনের বিষয়ে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। তার পরিবারের ওপর সার্বক্ষণিক নজরদারী অব্যাহত আছে। শ্রীপুর মডেল থানার ওসি আসাদুজ্জামান জানান, তুহিন ঢাকাস্থ কলাবাগান থানা থেকে নিখোঁজ হলে কলাবাগান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। তার বাড়ি শ্রীপুর থানা এলাকায় হওয়ায় আমরা তার বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।