পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এনআই অ্যাক্টে দায়েরকৃত চেক ডিজ অনার মামলায় চেকের ‘বৈধ বিনিময়’ প্রমাণে ব্যর্থ হলে আসামিকে কোনো সাজা দেয়া যাবে না। এই রায় দিয়েছেন আপিল বিভাগ। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে এ রায় প্রকাশিত হয়েছে। গতকাল সুপ্রিম কোর্ট বারের ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ মাসুদ রায় প্রকাশের বিষয়টি অবহিত করেন। তিনি জানান, চলতি বছর ১৮ ফেব্রুয়ারি প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগীয় বেঞ্চ একটি আপিল নিষ্পত্তি করে এ রায় দেন।
২০ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ের মধ্য দিয়ে একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত এলো বলে মনে করছেন আইনজ্ঞরা। কারণ, চেকের বৈধ বিনিময় প্রমাণে ব্যর্থ হলে এ সংক্রান্ত মামলায় কোনো ব্যক্তিকে সাজা দেয়া যাবে না। অর্থাৎ চেক ডিজঅনার মামলায় কনসিডারেশন বা চেক প্রাপ্তির বৈধ কারণ প্রমাণ করা বাধ্যতামূলক। ফলে যেনতেন প্রকারে চেক হস্তগত করে মামলা দায়ের এবং নিরীহ মানুষকে জেল-জরিমানা করার প্রবণতা কমে আসবে।
ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ মাসুদ আরও বলেন, আগে চেক ডিজঅনার হলেই অধিকাংশ ক্ষেত্রেই চেক দাতার সাজা হতো। চেকমূলে চেক গ্রহীতার টাকা পাওয়ার কোনো কারণ রয়েছে কি না, সেটি দেখার বাধ্যবাধকতা বা দিক নির্দেশনা ছিল না। এখন থেকে চেক গ্রহীতাকে প্রমাণ করতে হবে যে চেক দাতা ও চেক গ্রহীতার মধ্যে লেনদেন সম্পর্কিত কোনো বৈধ চুক্তি ছিল। চেক প্রাপ্তির বৈধ কোনো কারণ প্রমাণ করতে না পারলে এখন আর চেক দাতার সাজা হবে না।
আপিল বিভাগের রায়ের ফলে চেক দাতা ও গ্রহীতার মধ্যে চেকের বৈধ বিনিময় সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে প্রমাণ করতে হবে। চেকের বৈধ বিনিময় প্রমাণে ব্যর্থ হলে চেকের মামলায় কোন ব্যক্তিকে সাজা দেয়া যাবে না। এই আইনজীবীর মতে, এ আপিল বিভাগের এ রায়ের ফলে চেক দাতারা তাদের নির্দোষ প্রমাণের একটা সুযোগ পেলেন। এছাড়া এ রায়ের ফলে চেক সংক্রান্ত মামলায় বিচার প্রার্থীদের ভোগান্তি ও হয়রানি কমবে।
প্রসঙ্গত, জাতীয় সংসদের মরহুম স্পিকার হুমায়ুন রশিদ চৌধুরীর ছোট ভাই, সাবেক কূটনীতিক কায়সার রশিদ চৌধুরীর মরহুমা স্ত্রী সামছি খানমের মালিকানাধীন নর্থ গুলশানস্থ ৩০ কাঠা জমি ১৯৭৯ সালের ৫ সেপ্টেম্বর সম্পাদিত ইজারা চুক্তি মূলে আমেরিকান দূতাবাসকে ১১০ বছরের জন্য ইজারা দেয়া হয়। ওই ইজারা চুক্তিটি নিবন্ধন করা হয়নি। বিভিন্ন ঘটনা প্রবাহের পরিপ্রেক্ষিতে মরহুমা সামছি খানমের উত্তরাধিকাররা (ইমরান রশিদ চৌধুরী, পারভেজ রশিদ চৌধুরী ও জিনাত রশিদ চৌধুরী) জমিটি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন। বিষয়টি জানতে পেরে আবুল কাহের শাহীন নামে এক ব্যক্তি ইমরান রশিদ চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। জমিটির বর্তমান বাজারমূল্য তথা ১৫০ কোটি টাকায় কিনতে আগ্রহী ক্রেতা রয়েছে, তিনি এটি বিক্রি করে দিতে পারবেন। ইমরান রশিদ চৌধুরী ওই আশ্বাসের ভিত্তিতে সরল বিশ্বাসে ২০১২ সালের ১৩ মার্চ শাহীনের সঙ্গে একটি সমঝোতা চুক্তি করেন। শর্তানুযায়ী ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে বর্তমান বাজার মূল্যে জমিটি বিক্রি করে দেবেন এবং তার জন্য শাহীন মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ১৩ শতাংশ টাকা পাবেন। তখন ইমরান রশিদ চৌধুরী পোস্ট ডেইটেড ৪ কোটি ৫০ লাখ টাকার চারটি চেক আবুল কাহের শাহীনের নামে ইস্যু করেন।
কিন্তু ৯০ দিন পার হওয়ার পরও শাহীন বর্তমান বাজার মূল্যে কোনো ক্রেতা যোগাড় করতে ব্যর্থ হন। ফলে চুক্তিটি অকার্যকর হয়ে পড়ে। পরবর্তী সময়ে ২০১২ সালের ১৬ আগস্ট জমিটির ইজারা গ্রহীতা আমেরিকান দূতাবাসের সঙ্গে মালিকরা একটি বায়না চুক্তি সম্পাদন করেন। শেষ পর্যন্ত ২০১৩ সালের ৩ জুলাই বিক্রয়পূর্বক দলিল সম্পাদন করেন। এরপর শাহীনকে চেকগুলো ফেরত দিতে বলেন। এদিকে আবুল কাহের শাহীন ওই পোস্ট ডেইটেড চেক চারটি ফেরত না দিয়ে নিজে অবৈধভাবে লাভবান হওয়ার ফন্দি করতে থাকেন। একপর্যায়ে তিনি চেক চারটি নগদায়নের জন্য ব্যাংকে উপস্থাপন করেন। ইতোমধ্যে ইমরান রশিদ চৌধুরী শাহীনকে দেয়া চেকগুলো সম্পর্কে ব্যাংকে ‘স্টপ পেমেন্ট ইন্সস্ট্রাকশন’ দিয়ে রাখলে সেগুলো যথারীতি ডিজঅনার হয়। অতপর শাহীন সিলেট আদালতে চেক ডিজঅনারের মামলা করে তার পক্ষে রায় পান।
ইমরান রশিদ চৌধুরী ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট বিভাগে ফৌজদারি আপিল করেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট বিভাগ শুনানি শেষে আপিল মঞ্জুর করে ২০১৬ সালের ৩১ আগস্ট রায় দেন। রায়ে ইমরান রশিদ চৌধুরীকে মামলার অভিযোগ থেকে খালাস দেন। এতে আবুল কাহের শাহীন ওই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ১ নম্বর আদালত দীর্ঘ শুনানি শেষে চলতি বছরের ১৮ ফেব্রæয়ারি ওই আপিল খারিজ করেন। বহাল রাখেন হাইকোর্টের রায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।